রবিবার, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নবীনগরে নাছিমা নামে এক মহিলার উপর অতর্কিত হামলা 

মমিনুল হক রুবেল, নবীনগর প্রতিনিধি : ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে নাছিমা নামে এক মহিলাকে অতর্কিত হামলা করে অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা। ৩১ আগস্ট সন্ধায় শিবপুর ইউনিয়ন উচ্চ বিদ্যালয়ের উত্তর পাশে এই ঘটনাটি ঘটে। মুমূর্ষ অবস্থায় নাছিমা কে স্থানীয়রা উদ্ধার করে  ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে ঢাকা মেডিকেল হাসপাতালে রেফার করেন। নাছিমা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এখন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে।

মোছাঃ নাছিমা আক্তার শিবপুর কলেজ পাড়ার মলাই মিয়ার মেয়ে।

এ ঘটনায় শিবপুর গ্রামের হাজ্বী মোছা মিয়াকে প্রধান আসামী করে ১৬ জন সহ আরো অজ্ঞাত কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। আহতের পরিবার থানায় অভিযোগ দায়ের করলেও পুলিশ কোন কার্যকর ব্যবস্থা নিচ্ছে না বলে অভিযোগ করেন তারা। 

এর আগে নাছিমার বোন কলেজ পড়ুয়া ছাত্রী চয়েনিকা আক্তার কে বাড়ির সামনে থেকে মাইক্রো গাড়ী যুগে তুলে নিয়ে নৃশংস নির্যাতন চালানো হয়। তার আত্মচিৎকারে আশেপাশের লোকজন ছুটে উদ্ধার করে প্রথমে নবীনগর সদর হাসপাতালে ভর্তি করালে কর্তব্যরত চিকিৎসক উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে কুমিল্লা রেফার করেন। ওই ঘটনায় একাধিকবার থানায় মামলার জন্য গেলেও কোন প্রতিকার পাননি ভুক্তভোগীরা। 

৬ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেলে উপজেলা নির্বাহী অফিসার একটি অনুষ্ঠানে শিবপুর গেলে সেখানে নাছিমার মা হোছনেআরা বেগম নির্বাহী কর্মকর্তার  কাছে এ অভিযোগ করে ন্যায় বিচারের দাবী জানান। নির্বাহী অফিসার তানভীর ফরহাদ শামিম তাদেরকে অবশ্যই আইনী প্রক্রিয়ায় ন্যায়বিচার পাবেন বলে আশ্বস্থ করেন।

অভিযোগ ও স্থানীয় সুত্রে জানা যায়,মলাই মিয়া তার স্ত্রী ও ৬ মেয়ে নিয়ে শিবপুর কলেজ পাড়ায় নীজ বসতবাড়িতে বসবাস করে আসছে। তিনি ও তার স্ত্রী বর্তমানে অসুস্থ অবস্থায় বিছানায় শয্যাশায়।একটি জমি ক্রয়/বিক্রয় নিয়ে এই পরিবারের সাথে মোছা মিয়ার সামাজিক বিরোধ চলে আসছে। শিবপুর কলেজ পাড়ায় নাছিমাদের মূল্যবান ১১ শতক একটি জায়গা রয়েছে। ওই জায়গা বিক্রী করার জন্য মোছা নাছিমাকে প্রস্তাব দেয়। ওই প্রস্তাবে সম্মত্তি না দেওয়ায় তার  উপর সশস্ত্র দলবল নিয়ে এ হামলা চালানো হয়।

আহত নাছিমা  জানায়,মোছা এলাকায় অসহায় এতিমদের জমি জবরদখল, সন্ত্রাসবাদ ও নানাহ অপকর্মের সাথে জড়িত এ গুলোর প্রতিবাদ করায় তার সাথে আমার সামাজিক বিরোধ। তার কাছে জমি বিক্রীর প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সে প্রকাশ্যে ঘোষনা দেয় যে কোন মূল্যে আমার এই সম্পত্তি সে দখল করবে। সেই পূর্ব পরিকল্পনায় আমাকে হত্যার উদ্দেশ্যে এ হামলা করা হয়। নাছিমা বলেন,আমাকে মারার ঘটনাস্থল থেকে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধারের সময় পড়ে থাকা আমার মোবাইল ফোনটি শিবপুর ফাঁড়ি পুলিশ নিয়ে যায়। সেই মোবাইলে মোছার সকল অপকর্মের ভিডিও অডিও রেকর্ড ও গুরুত্বপূর্ন তথ্য রয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে থানায় অভিযোগ দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত অভিযোগ এফআইআর হয়নি আসামীদের ধরার কোন ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। 

এদিকে মামলার প্রধান আসামী হাজ্বী মোছা মিয়া তার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে দাবি করেন এবং এই মামলার সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত চান তিনি।

এ ব্যাপারে শীবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম আর মুজিব বলেন, এ ঘটনায় যাতে কোন নিরপরাধ ব্যক্তি যেন সাজা না পায় ,সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় আনা হউক।   

এ ব্যাপারে থানার অফিসার ইনচার্জ মাহবুব আলম বলেন, অভিযোগ যাথারীতি এফআইআর করা হয়েছে,আইনী প্রক্রিয়ায় যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহন হবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ