
সাইফুল ইসলাম রুদ্র, নরসিংদী: নরসিংদীর শালিধায় নিখোঁজের দুইদিন পর একটি ডোবা থেকে এক টেক্সটাইল শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। প্রতিবাদে হোসেন আলী নামের এক ব্যবসায়ীর বাড়ি ও ফ্যাক্টরিতে অগ্নিসংযোগ করেছে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা।
শুক্রবার দুপুরে নরসিংদী পৌর শহরের শালিধা এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।
নিহত ওই শ্রমিকের নাম মো. রবেল (১৮)। তিনি নরসিংদীর মনোহরদীর কৃষ্ণপুর এলাকার আকাশ মিয়ার ছেলে। তিনি নরসিংদী শহরের চৌয়ালা এলাকার ইয়ামিন টেক্সটাইলে শ্রমিকের কাজ করতেন। তিনি গত বুধবার থেকে নিখোঁজ ছিলেন।
নিহতের পরিবার ও শ্রমিকরা জানান, গত মঙ্গলবার বিকেলে চৌয়ালায় ইয়ামিনের একটি টেক্সটাইলে বিদ্যুতস্পৃষ্ঠ হয়ে একজন শ্রমিক মারা যায়। এর পরদিন বুধবার বিকেলে টেক্সটাইলগুলো বন্ধ রাখার জন্য বিভিন্ন টেক্সটাইলে যায় শ্রমিকরা। শালিধা এলাকার হোসেন আলীর ফ্যাক্টরি বন্ধ করতে গেলে ওই ফ্যাক্টরির শ্রমিকদের সাথে হাতাহাতির এক পর্যায়ে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরবর্তিতে বৃহস্পতিবার উভয় পক্ষের উপস্থিতিতে বিষয়টি সমাধান করে দেন সেনাবাহিনীর সদস্যরা।
আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে শালিধায় অবস্থিত হোসেন আলীর ফ্যাক্টরি থেকে বেশ কিছু দূরের একটি ডোবা থেকে রবেল নামের এক শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এরপর থেকে দুপুর ১২টার দিকে বিক্ষুব্ধ শ্রমিকরা হোসেন আলীর ২টি টেক্সটাইল, ২টি গোডাউন ও ৫তলা একটি বাড়িতে অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে সেনা বাহিনীর সদস্যরা। এসময় উত্তেজিত শ্রমিকদের সাথে কথা বলে পরিস্থিতি শান্ত করে সেনাবাহিনী। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে।
কয়েকজন শ্রমিক জানায়, গত বুধবার হোসেন আলীর কারখানার শ্রমিকদের সাথে মারামারির পর থেকে রবেল নিখোঁজ ছিল। ধারণা করা হচ্ছে তার কারখানার শ্রমিকরা তাকে মেরে ডোবায় ফেলে রেখেছে। তাই বিক্ষুব্ধ শ্রমিক হোসেন আলীর বাড়ি ও কারাখানায় আগুন লাগিয়ে দেয়।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে টেক্সটাইল ব্যবসায়ী হোসেন আলী জানান, ওই শ্রমিকের হত্যাকান্ডের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। তাকে কে বা কারা মেরেছে তা আমার জানা নাই। আজকে আমার দুইটি ফ্যাক্টরি, দুইটি গোডাউন ও ৫তলা বাড়িতে আগুন দিয়েছে শ্রমিকরা। এতে আমার প্রায় ৫০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
নরসিংদী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তানভীর আহমেদ জানান, শালিধা হেলিপ্যাডের পাশে একটি ডোবা থেকে একজন শ্রমিকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য নরসিংদী সদর হাসপাতাল মর্গে রাখা হয়েছে। পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ পেলে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে।












