রবিবার, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

নলছিটির দপদপিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস ‘দুর্নীতির রাজ্য’

মশিউর রহমান রাসেল, ঝালকাঠি: চরম অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং ঘুষের আখড়ায় পরিণত হয়েছে ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার দপদপিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিস। আর এ অনিয়ম ঘুষ বাণিজ্য দুর্নীতির মুল হোতা দপদপিয়া ইউনিয়নের ভূমি অফিসের উপসহকারী তহশিলদার মুসা আহমেদ।

মুসার খপ্পরে পড়ে সেবা নিতে আসা জনসাধারণের ভোগান্তি এখন চরমে। দপদপিয়া ইউনিয়ন ভূমি অফিসে প্রায় দুই বছর দশ মাস ধরে তহশিলদার মুসা আহমেদ বিভিন্ন অনিয়ম করেও বহাল তবিয়তে রয়েছেন।

ইউনিয়ন ভূমি অফিসে বিগত আওয়ামী লীগের সরকারের দপদপিয়া চিহ্নিত ভূমিদস্যু ও সন্ত্রাসীদের সাথে নিয়ে গড়ে তুলেছে অনিয়মের ‘রামরাজত্ব’। যার ফলে হয়রানির স্বীকার হয়ে মুখ খুলতে পারতো না ভুক্তভোগী সাধারন জনগণ। নতুন অর্ন্তবর্তীকালীন সরকার আসার পর ভুক্তভোগীরা মুখ খুলতে শুরু করেছেন তহশিলদার মুসার বিরুদ্ধে।

এখন ভুক্তভোগী জন সাধারণের প্রশ্ন তহশিলদার মুসার হাত থেকে হয়রানির শেষ কোথায়? মুসা ভূমি অফিসের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষকে বিভিন্নভাবে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

অভিযোগ রয়েছে, অনলাইনে দাখিলা দিতে গেলে বিভিন্নভাবে অজুহাত দেখিয়ে এক থেকে দুই হাজার টাকা নেয় উপ-সহকারী তহশিলদার মুসা। আর মুসার সবচেয়ে বড় দুর্নীতির জায়গা হলো জমির মিউটেশন করা। জমি ক্রয় করার পরে প্রত্যেক জমির মালিককেই বাধ্যতামূলক জমির রেকর্ড (মিউটিশন) করতে হয়। সরকারি ধার্য অনুযায়ী মিউটিশন ফি ১১৭৫ টাকা। কিন্তু উপ-সহকারী তহশিলদার মুসা জমির মালিকদের বিভিন্নভাবে এটা ওটা বুঝিয়ে হয়রানি করে ঊর্ধ্বতন
কর্তৃপক্ষকে দিতে হবে বলে দশ হাজার থেকে লাখ টাকা চুক্তি করেন জমির মিউটিশনের জন্যে। তখন জমির মালিকগণ নিরুপায় হয়ে মুসার ফাঁদে পা দিয়ে হাজার বা লাখ টাকা গচ্চা দেয় । আবার অনেক জমির মিউটিশনের জন্যে সঠিক কাগজ পত্র না থাকায় ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বাদ দিয়ে দিলে মুসা জমির মালিক পক্ষ থেকে মিউটিশন করিয়ে দিবে বলে যে টাকা নেয় তা আর ফেরত না দিয়ে বিভিন্নভাবে ঘুরাতে থাকে । যদি কোন জমির পার্টি একটু প্রভাবশালী হয় তাদের চুক্তির টাকা থেকে অর্ধেক টাকা ফিরিয়ে দেয়ার অভিযোগ রয়েছে। সঠিক কাগজপত্র ও ঘুষের চুক্তির টাকা দেয়ার পরও দুই থেকে ছয় মাসও ঘুরায় জমির মালিকদেরকে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ভূমি মালিকরা জানান, মুসার এমন কর্মকাণ্ড দিনে দিনে বেড়েই চলছে। আর এখন যদি দুর্নীতিবাজ তহশিলদার মুসার কর্মকাণ্ডের সঠিকভাবে তদন্ত করে শাস্তির আওতায় না আনা যায় তাহলে সাধারণ ভূমি মালিকদের ভোগান্তি ও হয়রানি চরম আকারে ধারণ করবে তাই অতি শিগগির আইনের আওতায় এনে শাস্তি ও বদলির দাবি জানিয়েছেন। এছাড়াও দুদকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগী জমির মালিকরা।

এ ব্যাপারে উপ-সহকারী তশিলদার মুসা আহমেদের কাছে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সামনাসামনি কথা বলেবে জানান।

এ ব্যাপারে নলছিটি উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সমাপ্তি রায়ের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তিনি কিছুই জানেন না। তবে অভিযোগ পেলে অবশ্যই উপ-সহকারী তহশিলদারের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

এছাড়াও বলেন, যদি কোনো নলছিটি ভূমি অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারী দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকে তার কোনো জায়গা হবে না নলছিটি উপজেলা ভূমি অফিসে।

উপজেলার ভূমি মালিকদের উদ্দেশ্য বলেন, কোনো রকম হয়রানির স্বীকার হলে সরাসরি তাকে জানতে ও তার অফিসের দরজা সবার জন্য উন্মুক্ত আছে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

, , বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ