কুড়িগ্রাম উত্তর প্রতিনিধি : মানসিক ভারসাম্যহীন ব্যক্তিকে বেধরকভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত এক মাস আগে কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার চন্ডিপুর বাজারে এ ঘটনা ঘটে বলে জানা যায় ।
গুরুতর আহত মানসিক প্রতিবন্ধী ব্যক্তির নাম জাহেদুল ইসলাম (৩৫)। তিনি নাগেশ্বরী উপজেলার ভিতরবন্দ কোচপাড়া গ্রামের মৃত বয়েজ উদ্দিনের ছেলে।
মানসিক প্রতিবন্ধীর বড়ভাই এমদাদুল হক ও গোলাম মওলাসহ তার স্বজনরা জানান, জাহেদুল ২৫ বছর আগে থেকেই মানসিক প্রতিবন্ধী ।
তারা আরো জানান, গত এক মাস আগে জাহেদুল বাড়ি থেকে হারিয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুজির পরে তাকে না পেয়ে হামার কুড়িগ্রাম নামক ফেসবুক পেইজে হারানোর বিজ্ঞাপন দেই। তার পরে জানতে পারি সে রংপুর মেডিক্যালে আছে। পরে আমরা গিয়ে দেখি অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে আছে। তার পায়ের প্রতিটি আঙ্গুলে সুঁই ঢুকানোর চিহ্ন এবং সারা শরীরে মারধরের দাগ। সেখানে উন্নত চিকিৎসা না পেয়ে আমরা তাকে গত ১২ সেপ্টেম্বর কুড়িগ্রাম ক্লিনিকের ড: আসিফ ইকবাল (আরিফ) এর নিকট চিকিৎসা নেই। এবং পরিবারের পরামর্শে জাহেদুলকে বাড়িতে নিয়ে আসি।
জাহেদুল এর ভাই এমদাদুল হক জানান, চন্ডিপুর বাজারের পানাতি হবিবর রহমানের পুত্র নজরুলের স্ত্রী রাস্তার পাশে দিঘীতে গোসল করতে দেখে মানসিক প্রতিবন্ধী জাহেদুল ইসলাম হেসেছে এবং হাতদিয়ে ইশারা করেছে। বিষয়টি স্বামী নজরুলকে জানান তার স্ত্রী। নজরুল জাহিদুলকে বেধড়ক মারধর করে। তার সাথে রফিকুল ইসলাম মাস্টার ও হাবিবুর রহমানসহ মারপিট করেছে বলে শুনেছি।
তিনি আরও জানান, জাহেদুলকে মারধর করার বিষয়টি চন্ডিপুর বাজারে পরিচিত (নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক) কয়েকজন ঘটনার সত্যতা জানিয়েছেন। সেই সাথে লিটন প্রফেসর (ভিতরবন্দ ডিগ্রি কলেজ) জানিয়েছেন মানসিক প্রতিবন্ধী জাহিদুলকে মেরেছে বলে বিবাদীরা তার কাছে স্বীকার করেছে। তিনি বিষয়টি মীমাংসা করে দেওয়ার আশ্বাসও দিয়েছিলেন বলে জানায়।
অভিযোগে উল্লেখিত সাক্ষী অটোচালক জাহিদুল ইসলাম ও হিরা মিয়া মেইন রাস্তায় অটোযোগে যাওয়ার পথে আমরা অভিযুক্ত বিবাদীরা পাগলকে মারপিট করতে দেখেছি বলে উল্লেখ করেছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে নজরুল, হাবিবুর, রফিকুলের মুঠোফোন নম্বরে যোগাযোগ করলে হাবিবুর সঙ্গে কথা হয় এবং বিষয়টি অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, এটা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।
বিবাদী নজরুল ও রফিকুলের কাছে মানসিক প্রতিবন্ধী জাহেদুলকে বেধরক মারপিটের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান, আমরা আজ প্রথম শুনলাম। তাকে কখনো দেখিনি আমরা। পাগলকে কেনই বা মারপিট করবো। আমাদের নামে এরকম মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়েরের সুবিচার চাই। একজন প্রতিবন্ধীকে মারধরের অভিযোগে অভিযুক্ত করার জন্য সঠিক তদন্ত অনুযায়ী বিচার চাই।
এ বিষয়ে নাগেশ্বরী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) রুপ কুমার সরকার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। কারা মরাপিট করেছে তা তদন্ত করে ব্যবস্থা নিব।