
যায়যায়কাল প্রতিবেদক: দেশের ভেতরে বা বাইরে যেখানেই রাজনৈতিক সহিংসতা এবং ভীতি প্রদর্শনের ঘটনা হোক না কেন তা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না বলে জানিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ ধরনের ঘটনায় যথাযথ আইনি ও কূটনৈতিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
নিউইয়র্কে বিমানবন্দরে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সদস্যসচিব আখতার হোসেনসহ রাজনৈতিক নেতাদের ওপর হামলার পর মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে সরকার এই কথা জানায়।
হামলার ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছে অন্তর্বর্তী সরকার।
হামলাকে উদ্দেশ্যমূলক উল্লেখ করে বিবৃতিতে বলা হয়, ক্ষমতাচ্যুত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনার সহযোগী এবং সমর্থকরা এই হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
বিবৃতিতে জানানো হয়, ঘটনার পরপরই নিউইয়র্কে বাংলাদেশ মিশনের মাধ্যমে দ্রুত এবং আইনানুগ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নিউইয়র্ক পুলিশ ডিপার্টমেন্টের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। ইতোমধ্যেই একজনকে গ্রেপ্তার এবং বর্তমানে ঘটনাটির আনুষ্ঠানিক তদন্ত চলছে বলে জানানো হয়েছে।
এছাড়াও এই ঘটনার পর প্রধান উপদেষ্টা এবং প্রতিনিধিদলের সব সদস্যের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে জোরদার করা হয়েছে বলে জানানো হয় বিবৃতিতে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার বিদেশে তার প্রতিনিধিদের নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত করার জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এবং স্থানীয় আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাথে সার্বক্ষণিক সমন্বয় রেখে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয়।
বিবৃতিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা এবং তার সঙ্গে থাকা রাজনৈতিক নেতাদের সফরের সময় সম্ভাব্য নিরাপত্তা ঝুঁকির আশঙ্কায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বিভিন্ন পর্যায়ে একাধিক সতর্কতামূলক নিরাপত্তা ব্যবস্থা সমন্বয় করেছিল। জন এফ. কেনেডি বিমানবন্দরে পৌঁছানোর পর প্রতিনিধিদলটিকে প্রথমে একটি নির্দিষ্ট ভিভিআইপি গেট দিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল এবং একটি বিশেষভাবে সুরক্ষিত পরিবহন ইউনিটে ওঠানো হয়েছিল। তবে, অপ্রত্যাশিত এবং শেষ মুহূর্তের ভিসা-সম্পর্কিত জটিলতার কারণে প্রতিনিধিদলটিকে পথ পরিবর্তন করে বিকল্প পথে অগ্রসর হতে হয়।
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়, বিমানবন্দরে রাজনৈতিক নেতাদের জন্য ভিভিআইপি প্রবেশাধিকার এবং নিরাপত্তা সুবিধা দেওয়ার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকে আনুষ্ঠানিক অনুরোধ করা সত্ত্বেও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ দুঃখজনকভাবে সেই অনুরোধ রাখেনি। এর ফলে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ঝুঁকির মুখে পড়েন।
সরকার জানায়, এই নিন্দনীয় ঘটনার মধ্য দিয়ে শেখ হাসিনার শাসনামলে গড়ে ওঠা বিধ্বংসী ও সহিংস রাজনৈতিক সংস্কৃতির এক স্পষ্ট ও মর্মান্তিক চিত্র প্রকাশ পেয়েছে। এই বিধ্বংসী রাজনৈতিক সংস্কৃতির অবসান ঘটিয়ে একটি শান্তিপূর্ণ, গণতান্ত্রিক এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার দৃঢ় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।