রাজশাহী প্রতিনিধি: রাজশাহীতে নিজের বাবার মাথা ফাটানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে সাব্বির হোসেন নামে ছাত্রলীগের এক কর্মীর বিরুদ্ধে। সম্প্রতি জেলার পবা উপজেলার খোলাবোনা এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। তবে বিষয়টি প্রতিপক্ষের ওপর চাপিয়ে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ এখনো কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।
অভিযুক্ত সাব্বির হোসেন খোলাবোনা এলাকার কাইমুদ্দিনের ছেলে। তিনি রাজশাহী কলেজের শিক্ষার্থী। রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রাসিক দত্তের অনুসারী।
শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন, সাব্বির ছাত্রলীগ সভাপতি রাসিক দত্তের কাছে ফেনসিডিল, মদ ও ইয়াবাসহ বিভিন্ন মাদক সরবরাহ করতেন। ছাত্রলীগের বিভিন্ন কর্মসূচিতে সাধারণ ছাত্রদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জোরপূর্বক নিয়ে যেতেন। কেউ যেতে না চাইলে টর্চার সেলে নিয়ে অমানবিক নির্যাতনও চালাতেন।
স্থানীয়রা জানান, সাব্বির ও তার ভাই আতিক চাঁদাবাজি ও জমি দখলসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য খায়রুজ্জামান লিটনের মেয়ে আনিকা ফারিহা জামান অর্ণার বডিগার্ড হিসেবে কাজ করতেন। সেই প্রভাবে সাব্বির ও আতিক এসব অপরাধ করতেন।
খোলাবোনার কয়েকজন বাসিন্দা জানিয়েছেন, সর্বশেষ ২১ জানুয়ারি এলাকায় গাছ থেকে বরই নামানো নিয়ে প্রতিবেশীদের সঙ্গে বিবাদে জড়ান সাব্বির ও আতিক। এ সময় অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করেন তারা। একপর্যায়ে প্রতিবেশীদের মারতে উদ্যত হন। সাব্বির রড ও বাঁশ দিয়ে আঘাত করতে যান। এ সময় তাদের পিতা কাইমুদ্দিনের মাথায় আঘাত লাগে। এতে কাইমুদ্দিন আহত হন। পরে বিষয়টি প্রতিপক্ষের ওপর চাপিয়ে ছিনতাইয়ের অভিযোগ তুলছেন তারা।
অভিযোগ উঠেছে, গত বছরের ৫ আগস্ট রাজশাহীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলার সঙ্গে সাব্বির জড়িত ছিলেন। ওইদিন আলী রায়হান ও সাকিব আনজুম শহীদ হন। এসব হত্যার সঙ্গে রাজশাহী কলেজ শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি রাসিক দত্তের সাথে তিনি ছিলেন। তবে এলাকায় অবস্থান করছেন। তার বাবা পূর্বে আওয়ামী লীগ করতেন। ৫ আগস্ট হাসিনার পতনের পর স্থানীয় বিএনপি নেতাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তুলেছেন তার বাবা কাইমুদ্দিন। বর্তমানে নিজের এলাকায় বুক ফুলিয়ে ঘুরছেন সাব্বির ও আতিক।
এসব ব্যাপারে অভিযুক্ত সাব্বির হোসেন বলেন, আমি বাঁচার জন্য ছাত্রলীগের সঙ্গে ছিলাম। তবে কোনো চাঁদাাবাজি বা সন্ত্রাসী কাজ করিনি। আমার বাবার মাথাও আমি ফাটাইনি।
এ বিষয়ে আরএমপির দামকুড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রবিউল ইসলাম বলেন, সে ছাত্রলীগ করে কি না আমার জানা নেই। কাগজপত্র দেখতে হবে। তবে এলাকায় তাদের জমি নিয়ে একটা ঝামেলার কথা শুনেছি। বিষয়টি সমাধান করা যায় কি না, তদন্ত করে দেখবো।