ম.ব.হোসাইন নাঈম, নোয়াখালী জেলা প্রতিনিধি: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারী সদস্যকে গ্রেফতার ও বিচারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেন ভূক্তভোগি পরিবারদ্বয়।
সোমবার (৫ডিসেম্বর) উপজেলার আলাইয়ারপুর ইউনিয়নের ২ নং ওয়ার্ডস্থ ধীতপুর কাজী বাড়িতে প্রবাসী মহিন উদ্দিনের স্ত্রী আয়েশা আক্তার ও উম্মে হাফসা জনির পক্ষে তার ভাসুর নূর মোহাম্মদ যৌথভাবে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
ভুক্তভোগী আয়েশা আক্তার বলেন, আমার স্বামী মহিন উদ্দিন বাহরাইন প্রবাসী এবং আমি বীর মুক্তিযোদ্ধার সন্তান। গত ২৮ নভেম্বর ও ১ ডিসেম্বর তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আমাদের বাড়ির আলাউদ্দিন (৫০), ইউনিয়ন (সংরক্ষিত) নারী সদস্য শিল্পী আক্তার (৪০), আলা উদ্দিনের স্ত্রী শিল্পী আক্তার (৩৫), আলাউদ্দিনের মেয়ে লামিয়া আক্তার (১৮), বেল্লাল হোসেন (৫৫), বেল্লালের দুই ছেলে দেলোয়ার হোসেন সবুজ (৩০) ও আনোয়ার হোসেন মনু (২৫) সহ অজ্ঞতনামা ৫/৬ জন একত্রিত হয়ে সন্ত্রাসী জোর জুলুমবাজ পরধনলোভী ও উশৃঙ্খল প্রকৃতির লোক ইউপি সদস্য শিল্পী আক্তার সহ অন্যান্য আসামীগণ দেশীয় দা ছেনী লোহার রড ও লাঠি সোটা নিয়ে আমার বসত ঘরে ঢুকে আমাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা করে।
হামলায় আহত হয়েছে বক্তব্য প্রদানকারী আয়েশা আক্তার, চাঁদ বানু, নূরুল আমিন ও তার গর্ভবতী স্ত্রী রোকছানা, নাজমা বেগম, সুমন, আব্দুল্লাহ, আব্দুর রহমান, রাবেয়া এবং শিশু পুত্র আতিক।
আয়েশা বলেন, আমার ভাসুর নুরুল আমিনের হাত পায়ে আঘাত করছে, তিনি এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন, তার গর্ভবতী স্ত্রী রোকছানার উপরও হামলা করা হয়েছে। আমিসহ অন্যান্য সকলে বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়ে বর্তমানে বাড়ীতে আছি। বাড়ীতে আসার পর থেকে শিল্পী মেম্বার সহ অন্যান্য আসামিগণ আমাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আসছে। শিল্পী মেম্বার জনপ্রতিনিধি হয়ে মানুষের উপর সন্ত্রাসী হামলা চালায়। তার কাছে জনগণের জানমালের কোন নিরাপত্তা নেই।
তিনি আরো বলেন, আমি আপনাদের মাধ্যমে এ নারী সন্ত্রাসী সহ অন্যান্য আসামিদের গ্রেফতারের দাবি করছি, এবং শিল্পী মেম্বারকে সংরক্ষিত নারী সদস্য পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করার জোর দাবি করছি।
আরেক ভুক্তভোগী উম্মে হাফসা জনির পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তার ভাই নূর মোহাম্মদ। তিনি বলেন আমার বোন জনির স্বামী চট্রগ্রামে ব্যবসা করেন। গত ৩০ নভেম্বর সকালে নিজ বাড়ির অত্র ইউনিয়ন পরিষদের সংরক্ষিত নারীর সদস্য (মেম্বার) শিল্পী আক্তার ও তার ভাই বেলাল কাজী, বেল্লালের ছেলে দেলোয়ার হোসেন সবুজ ও আনোয়ার হোসেন মনু সহ অজ্ঞাতনামা ৫/৬ জন লোহার রড, দা, টেঁটা ও লাঠিসোটা হাতে নিয়ে গালমন্দ করতে করতে আমার বোনের নির্মাণাধীন ঘরের সামনে এসে আমার বোনের নির্মাণাধীন ঘরের চলমান কাজে বাধা দেয়। এক পর্যায়ে আমার বোনের নির্মাণাধীন ঘরে দেওয়াল ভাঙচুর করে এবং আমার বোন ও বোনের স্বামীকে হত্যার হুমকি দেয়। এই ঘটনায় বেগমগঞ্জ থানায় অভিযোগ দাখিল করেছি।
থানায় অভিযোগ ও বাড়িতে সংবাদ সম্মেলন করেছি শুনে আসামিরা গভীর রাতে ১০/১৫ জন সন্ত্রাসী দিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা চালায়। পরোক্ষনে রাত প্রায় দেড়টার দিকে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।
আয়েশা আক্তার বলেন, আমরা মরে গিয়ে কি প্রমাণ করতে হবে আমরা আহত? আপনাদের মাধ্যমে অভিযুক্ত আসামিদেরকে গ্রেফতারের জোর দাবী জানাচ্ছি।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন উম্মে হাফসা জনি, রাবেয়া বেগম, চাঁদ বানু, আব্দুর রহমান, আব্দুল্লাহ, সাইফুল ইসলাম প্রমুখ।
শিল্পী আক্তারের ভাই সাইফুল ইসলাম বলেন, আসামি শিল্পী মেম্বার সবার উপর জুলুম অত্যাচার করে আসছে। সে কথায় কথায় আমাদেরকে পুলিশ ও সন্ত্রাসীদের দিয়ে বিভিন্ন রকম হয়রানি করার ভয় ভীতি প্রদর্শন করে। আমি এই আসামিদের গ্রেফতার করার দাবি জানাচ্ছি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সুদৃষ্টি কামনা করছি।