বৃহস্পতিবার, ২০শে অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,৫ই ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

পলাশবাড়ীতে আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরির অভিযোগ

নুরুল ইসলাম, গাইবান্ধা: গাইবান্ধা জেলার পলাশবাড়ী উপজেলার ১ নং কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের দিঘলকান্দী গ্রামের আব্দুল মান্নানের বিরুদ্ধে গাছের গুঁড়ি ও কাঠ পুড়িয়ে অবৈধভাবে কয়লা তৈরি করার অভিযোগ করেছে গ্রামবাসী ।

পলাশবাড়ী উপজেলা ঢাকা-রংপুর জাতীয় মহাসড়ক থেকে গ্রামটির দূরত্ব প্রায় আড়াই কিলোমিটার ও উপজেলা শহর হতে প্রায় ৩ কিলোমিটার দূরে কিশোরগাড়ী ইউনিয়নের দিঘলকান্দী গ্রামটি অবস্থিত।

এ গ্রামটিতে সরেজমিনে দেখা গেছে, প্রায় ২২ শতক জায়গাজুড়ে কয়লা তৈরির কারখানা। চারদিকে উঠতি আমন ফসলের মাঠ ও বসতবাড়ি। ৫ নং ওয়ার্ডের দিঘলকান্দী গ্রামের মতিনের বাড়ির পাশে কাঠ পুড়িয়ে কয়লা তৈরি হচ্ছে। অথচ এ কারখানার পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেই। চুল্লি থেকে নির্গত ধোঁয়ায় পরিবেশ দূষিত হচ্ছে, ফসল নষ্ট হচ্ছে। এ ছাড়া আশপাশের এলাকার মানুষ সর্দি, কাশিসহ নানা সমস্যায় ভুগছেন। প্রতিটি চুল্লিতে প্রতি দফায় ২০০ থেকে ৩০০ মণ কাঠ পোড়ানো হয়। ৮ থেকে ১০ দিন পোড়ানোর পর কয়লা তৈরি হয়।

স্থানীয় গ্রামবাসী বলেন, দিঘলকান্দী গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল মান্নান ও ভায়রাভাইসহ মেয়ে জামাইকে নিয়ে যৌথভাবে কয়লা তৈরির কারখানা গড়ে তুলেছেন। ৩ মাস ধরে এখানে গাছের গুঁড়ি দিয়ে কয়লা তৈরি হচ্ছে। কারখানায় রয়েছে আটটি চুল্লি। সাঘাটা থেকে শ্রমিক নিয়ে এসে কাজ করা হচ্ছে। তিন ফসলি জমিতে এ কারখানা গড়ে তোলা হয়েছে। গাছ কাটা ও তা জ্বালানি হিসেবে পোড়ানো সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। উপরন্তু, কালো ধোঁয়ায় পরিবেশ ও ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। এ গ্রামটিতে ইট দিয়ে চুল্লি বানিয়ে মাটির প্রলেপ দেওয়া হয়েছে। চুল্লিতে গাছের গুঁড়ি পুড়িয়ে কয়লা তৈরি করা হচ্ছে কয়লা। চুল্লির চারদিকে রাখা গাছের গুঁড়ি ও শুকনা কাঠ-লাকড়ি। মোট আটটি চুল্লির মধ্যে দুটি চুল্লিতে আগুন জ্বলছে। কালো ধোঁয়ায় চারদিক ছেয়ে গেছে। চারপাশে বিভিন্ন আকারের গাছের গুঁড়ি রাখা হয়েছে। প্রতিটি চুল্লিতে ১৫০ মণ কাঠ ফেলে আগুন দেওয়া হচ্ছে। এক পাশে চুল্লির মুখ খোলা। সেদিক দিয়ে গাছের গুঁড়ি, লাকড়ি দেওয়া হয়। খোলা মুখে আগুন দিয়ে সেটিও বন্ধ করে দেওয়া হয়।

কারখানার কর্মচারীরা বলেন, কারখানায় পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র ও স্থানীয় প্রশাসনের অনুমতি নেই। তাঁরা ৩ মাস আগে কাজ শুরু করেছেন। পরিবেশের ছাড়পত্র ও প্রশাসনের অনুমতির জন্য আবেদন করবেন।

গ্রামবাসী দাবি করেন, চারপাশে বাড়িঘর আর ফসলি জমি। এর মধ্যে কীভাবে এ রকম একটা কারখানা হয়? প্রশাসন এগুলো দেখভাল করছে না। সারাক্ষণ কালো ধোঁয়া বের হচ্ছে। ধোঁয়ার কারণে বয়স্ক আর শিশুরা সব সময় কাশছে। তরুণ-যুবকদেরও একই অবস্থা। এভাবে মানুষ থাকে কীভাবে? ধানগাছ যখন বড় হচ্ছছিল। এর মধ্যে কয়লা তৈরির কারখানার কালো ধোঁয়ায় গাছ চিটচিটে হয়ে গেছে। গাছের পাতা হাত দিয়ে ঘষা দিলে হাত কালো হয়ে যায়। এ অবস্থায় ফলন ঠিকমতো পাবেন কি না, তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন।

পলাশবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হাসান বলেন, কাঠ দিয়ে কয়লা তৈরির বিষয়টি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি । পরিবেশ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় কারখানা ও এর মালিকের বিরুদ্ধে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ