নুরুল ইসলাম, গাইবান্ধা: গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলাধীন পাঁচপীরের দরগাহ দাখিল মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী আব্দুল মজিদ কর্তৃক বয়সের তথ্য গোপন করে চাকরির অভিযোগ সংক্রান্ত একটি সংবাদ গত ২৬ মার্চ একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায় প্রকাশের পর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গত ২২ অক্টোবর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়ে।
যার দায়িত্বে রয়েছেন গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন অফিসার মো. আব্দুল মোত্তালিব। তদন্ত করে সুস্পষ্ট প্রতিবেদন দাখিলের জন্য তাকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।
জানা গেছে, উক্ত মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী মো. আব্দুল মজিদ মিয়ার জন্ম তারিখ গড়মিলের কারণে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটি গত ২০১৭ সালের ১৬ নভেম্বর অনুষ্ঠিত সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক একই বছরে ২১ নভেম্বর থেকে সরকারি বেতন/ভাতা স্থগিত রেখে বয়স সংশোধনসহ কারন দর্শানো নোটিশ প্রদান করেন। উক্ত নোটিশের জবাব প্রদান না করায় আবারও গত ২০১৮ সালের ১৭ মে বেসরকারি চাকরি আচরণবিধি লংঘনের দায়ে কেন তাকে চাকরি থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে না মর্মে কারণ দর্শানো হয়।
পরবর্তীতে উক্ত মাদ্রাসার সুপার মো. আফছার আলী তার অধীনস্থ নৈশপ্রহরী আব্দুল মজিদের সাথে যোগসাজশ করে স্থগিতকৃত বেতন/ভাতা ছাড়করণ করলে অদ্যবধি চাকরি করে আসছেন।
তথ্যানুসন্ধানে জানা গেছে, অভিযুক্ত আব্দুল মজিদের জাতীয় পরিচয়পত্র নং-২৩১৬৭৪৭২৬৬৩৬২, জন্ম তারিখ ২১/১১/১৯৫৭ ইং। সে মোতাবেক তার ১ম কন্যা মোছা. শেফালী বেগমের ভোটার আইডি কার্ডে জন্ম তারিখ ১৫/১০/১৯৮০ ইং, ২য় কন্যা শিমুলী আকতারের জন্ম তারিখ ১৫/১০/১৯৯০ ইং, ৩য় কন্যা খাতিজা খাতুনের জন্ম তারিখ ২/১১/১৯৯৭ ইং ও ৫ম সন্তান আয়শা আকতারের জন্ম তারিখ ২৫/১/২০০৮ ইং সঠিক আছে বলে জানা যায়।
অথচ অভিযুক্ত সুচতুর নৈশপ্রহরী আব্দুল মজিদ তার ৮ম শ্রেণি পাশের সনদে বয়স দেখিয়েছেন ৯/২/১৯৮০ ইং। বলাবাহল্য যে, তিনি কত বছরে চাকরিতে ঢুকলেন। তিনি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ৮ম শ্রেণি পাশ করেছেন সে প্রতিষ্ঠানের ৬ষ্ঠ থেকে ৮ম শ্রেণি পর্যন্ত ভর্তি বই, হাজিরা খাতা ও ফলাফল বই যাচাই করলেই বয়সের তথ্য-উপাত্ত গোপনের বিষয়টি ধরা পড়বে।
বিজ্ঞ মহলের প্রশ্ন, যদি পিতা আব্দুল মজিদের জন্ম তারিখ ১৯৮০ ইং সাল হয়, তাহলে তার ৫ সন্তানের বয়স কার কত? আর প্রতিটি সন্তানের জাতীয় পরিচয়পত্র বা জন্ম নিবন্ধনেও কি ভুল হয়েছে। নৈশপ্রহরী আব্দুল মজিদের চাকরির বয়সসীমা অতিক্রমের পরও কেন তাকে বেতন বা ভাতা দেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে সুপার মো. আফছার আলী ও বর্তমান সভাপতি আতোয়ার রহমান জবাব না দিয়ে এড়িয়ে যান।
এ সংক্রান্ত একটি খবর সাপ্তাহিক জয়ভিশন পত্রিকা ও দৈনিক যায়যায়কাল পত্রিকায় প্রকাশিত হলে গাইবান্ধা জেলা প্রশাসক চৌধুরী মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসেনের দৃষ্টিগোচর হয়। তিনি গত ২২/১০/২০২৪ ইং তারিখে গাইবান্ধা জেলা নির্বাচন অফিসারকে তদন্ত করে অভিযুক্ত ব্যক্তি উক্ত মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী মো. আ. মজিদ ও তার স্ত্রী, ৪ কন্যা এবং পুত্রের ভোটার আইডি কার্ড, জন্ম নিবন্ধন ও S.S.C/HSC/JSC পরীক্ষার এডমিট কার্ডের মূল কপি দেখে সুস্পষ্ট মতামত দিতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।