
মো. সাইফুল ইসলাম, নীলফামারী: দুই বছর ধরে বুড়িতিস্তা জলাশয় খননে অবৈধ দখলদারের বাধা আর বিভিন্ন সময়ে পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মানববন্ধন করেছে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড ডিপ্লোমা প্রকৌশল সমিতি।
সোমবার দুপুরে নীলফামারী জেলা প্রশাসকের কার্যালয় চত্বরে ঘণ্টাব্যাপী এ মানববন্ধন করেন বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উত্তরাঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মাহবুবর রহমানসহ সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এসময় হামলাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের দাবি জানান কর্মকর্তারা।
পাউবো সুত্রে জানা যায়, তিস্তা সেচ প্রকল্পের কমান্ড এলাকার পুনর্বাসন ও সম্প্রসারণ প্রকল্পের আওতায় বুড়িতিস্তা নদীর ডিমলা ও জলঢাকা এলাকার ১২১৭ একর আয়তনের জলাধারের মধ্যে ১ম ধাপে ৬৬৭ একর জলাধার পুনঃখনন করা হবে। লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী কাজ হলে জলাধারের পানি ব্যবহার করে ৫ হাজার ৫শ একর জমিতে আমন ও বোরো মৌসুমে কৃষককে সেচের পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। যার ফলে প্রতি বছর প্রায় ২৬ হাজার টন ফসল উৎপাদন সম্ভব যার বাজার মূল্য প্রায় ৭২ কোটি টাকা। এছাড়াও ভূপরিস্থ উর্বর পানি গ্রাভিটি ইরিগেশন পদ্ধতিতে ব্যবহার হলে প্রতিবছর অতিরিক্ত ফসল উৎপাদন বাবদ ১২ কোটি টাকা, জ্বালানি বাবদ ২ কোটি ২০ লাখ টাকা এবং সার বাবদ প্রায় ১ কোটি ৩০ লাখ সাশ্রয় হবে। রিজার্ভারের শুকনো জায়গায় অবৈধ অনুপ্রবেশ ও দখলদার মুক্ত হলে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান বলেন, প্রকল্পের সার্ভে ও খননের আগে তিন দফায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, গণমাধ্যমকর্মী ও দখলদারদের সাথে আলোচনার পরে খনন কাজের উদ্বোধন করা হয়। কিন্তু অবৈধদখলদাররা বাঁধাগ্রস্ত করে উন্নয়নমূলক প্রকল্পটি।
তিনি আরও বলেন, গত ৮ অক্টোবর ডিমলার কেয়ার বাজারে বুড়িতিস্তার পুনঃখনন কাজের বিষয়ে স্থানীয়দের সাথে আলোচনার সময় হত্যার উদ্দেশ্যে অতর্কিত হামলা চালায় ঠিকাদারসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ওপর। পুড়িয়ে দেয়া হয় ঠিকাদা প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন সেড ও যন্ত্রাংশ। অবৈধ দখলদারদের বিরুদ্ধে ১০টি মামলা দায়ের করলেও কোনো প্রতিকার পায়নি পানি উন্নয়ন বোর্ড।
পরে উন্নয়নমূলক প্রকল্পটি বাস্তবায়ন আর হামলাকারীদের বিচারের দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর একটি স্মারকলিপি প্রদান করা হয়।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের বিভাগীয় প্রধান প্রকৌশলী মাহবুবর রহমান, তত্ত্বাবধায়ক রংপুর সার্কেল-১ আহসান হাবীব, রংপুর সর্কেল-২ মিজানুর রহমান, ঠাকুরগাঁও সার্কেলের প্রকৌশলী কৃষ্ণকমল চন্দ্র সরকার, নীলফামারীর নির্বাহী প্রকৌশলী আতিকুর রহমানসহ পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।