
মো. রবিউল ইসলাম, বিশেষ প্রতিনিধি : পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন ও আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতিসহ ৭ দফা দাবিতে বান্দরবানে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে পাহাড়ি শিক্ষার্থীরা।
বুধবার বিকালে শহরের পুরাতন রাজবাড়ি মাঠ থেকে বৈষম্যবিরোধী আদিবাসী ছাত্র সমাজের ব্যানারে বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। এতে কয়েকটি উপজেলা থেকে আসা শিক্ষার্থীরাও বিক্ষোভ মিছিলে যোগ দেন।
শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন দাবি সম্বলিত প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন নিয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রেসক্লাব চত্ত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন।
সমাবেশে বক্তব্য দেন শিক্ষার্থী পুপুসিং মারমা, ত্রিপুরা স্টুডেন্ট ফোরামের সাবেক কেন্ত্রীয় সভাপতি জন ত্রিপুরা, বম স্টুডেন্টস অ্যাসেসিয়েশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি জেমস লালথারঙাক, মংচশৈ মারমা, আদিবাসী ছাত্র সংগঠনের সমন্বয়ক অং মারমা ও পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীন ভয়েসের সাচিংনু মারমা।
সমাবেশে বক্তারা অভিযোগ করে বলেন, গণঅভ্যুত্থানের পর সারাদেশে শিক্ষার্থীরা শহীদদের স্মরণে বিভিন্ন দেয়ালে চিত্র অঙ্কন শুরু করে। পাহাড়েও ছাত্র আন্দোলনে শহীদদের স্মরণের পাশাপাশি নিখোঁজ হওয়া কল্পনা চাকমাকে স্মরণ করে আদিবাসীদের বিভিন্ন দাবি নিয়ে গ্রাফিতি আঁকা হয়।
কিন্তু বান্দরবানের বিভিন্ন উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা গ্রাফিতিগুলো মুছে দিয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। কোথাও কোথাও গ্রাফিতি আঁকায় বাধা প্রদান করারও অভিযোগ পাওয়া যায়।
আদিবাসীদের সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি জানিয়ে বক্তারা আরও বলেন, পার্বত্য চুক্তির ২৭ বছরও চুক্তির পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন করা হয়নি। যার কারণে দিন দিন ভূমি দখল বাড়ছে। পাহাড়ে অস্থিরতা বাড়ছে। পার্বত্য শাসনবিধি ১৯০০ সাল আইনকে বাতিল করার ষড়যন্ত্র করে পাহাড়িদের আরও কোণঠাসা করার চেষ্টা করা হচ্ছ। বিভিন্ন কৌশলে পাহাড়িদের নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ করার পাঁয়তারা করা হচ্ছে।
এছাড়া কেএনএফের ব্যাংক ডাকাতির ঘটনায় গ্রেপ্তারকৃত নিরীহ বম নারী-শিশুদের মুক্তির দাবিও জানান বক্তারা।
সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী আদিবাসী ছাত্র সমাজ এর পক্ষ থেকে ৭ দফা দাবি তুলে ধরা হয়। দাবিগুলোর মধ্যে ছিল- পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন, আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতি, গ্রাফিতি আঁকার স্বাধীনতা থাকা, গ্রেফতারকৃত নিরীহ বম নারী-শিশু ও পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজবন্দিদের অবিলম্বে মুক্তি দেওয়া, প্রথাগত আইনে আদিবাসীদের ভূমি অধিকার নিশ্চিত করা, পার্বত্য চট্টগ্রাম রেগুলেশন ১৯০০ সাল আইন বাতিলের ষড়যন্ত্র বন্ধ করা এবং পর্যটনের নামে ভূমি দখল বন্ধ করা।
পরে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ শেষ করে রাজার মাঠে আয়োজন করা হয় প্রতিবাদী গানের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। সেখানে বিভিন্ন জাতিসত্তার ভাষায় জাগরণের গান পরিবেশন করা হয়।