
খাঁন মোঃ আঃ মজিদ, দিনাজপুর: ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার ৫ নম্বর ইউনিয়নের ইন্তাজ খার ডাঙ্গী , নতুন বাজার ও চরচাদপুর মৌজায় পৈতৃক সম্পত্তি দখলের অভিযোগ উঠেছে।
মৃত মহিউদ্দিন খাঁর ওয়ারিশগণ তাদের আইনসিদ্ধ জমির অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন বলে জানা গেছে।
দীর্ঘদিন ধরে একই এলাকার কিছু ব্যক্তি তাদের জমি দখল করে রেখেছেন, যা পরিবারটিকে চরম দুর্দশায় ফেলেছে।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, নিম্নলিখিত ব্যক্তিরা মৃত মহিউদ্দিন খাঁর পৈতৃক সম্পত্তি জোরপূর্বক দখল করে রেখেছেন: ১. মোঃ ওয়াজেদ খাঁ (৪৫) ২. মোঃ ছেলিম খাঁ (পিতা মৃত ইরফান খাঁ) ৩. মোঃ ইব্রাহীম খাঁ (৫২) ৪. মোঃ ইলিয়াস খাঁ (৪৮) ৫. মোঃ ইকবাল খাঁ (৪৫) ৬. মোঃ ইদ্রিস খাঁ (৪০) ৭. মোঃ সেলিম (৩২) (পিতা মৃত মান্নান খাঁ) ৮. মোঃ রুস্তম খাঁ (৭০) (পিতা মৃত শিরাউদ্দিন খাঁ) ৯. মোঃ শাখাওয়াত খাঁ (৪০) (পিতা হাসেম খাঁ)।
অভিযোগ অনুযায়ী, এই ব্যক্তিরা মৃত মহিউদ্দিন খাঁর ৯৬ শতক জমি দখল করে রেখেছেন, যা তার ওয়ারিশদের প্রাপ্য।এ জমি সংক্রান্ত বিরোধের সূত্রপাত বহু পুরনো। মৃত আলেপ খাঁর এক পুত্র ছিলেন মৃত মহিউদ্দিন খাঁ এবং এক কন্যা মৃত মাজু খাতুন। এই দুই ভাই-বোন অংশীদার হিসেবে জমির মালিক ছিলেন। কিন্তু বছরের পর বছর তাদের জমি বিভিন্ন ব্যক্তি আত্মসাৎ করে রেখেছে। মহিউদ্দিন খাঁর নামে ৮৬০, ৯৪০, ৮৭৮, ১০৬৬, ১০৬৯, ১০৭২, ৯৬৪, ১০৪০, ৯৬৩, ৯৪০, ১৭৫৩, ৮৮০, ৮৬১, ৮৬২, ৮৭৯ ও ৮৮১— এই দাগগুলোতে মোট ৯৬ শতক জমি রয়েছে। এর মধ্যে দাগ নং ৮৬২, ৮৬০, ৮৭৯, ৮৮০, ৮৮১ ও ৮৭৮ এ মোট ৮৯ শতক জমি মতিউর রহমান, সালাউদ্দিন, কাজী সালিমা খাতুন প্রমুখ ব্যক্তিরা নামজারি করে দখল করে রেখেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। এছাড়া দাগ নং ১০৪০–এর ৭ শতক জমি বর্তমানে আব্দুল ওয়াজেদ খাঁ ও সেলিম খাঁর দখলে রয়েছে।
ওয়ারিশ সূত্রে মৃত মহিউদ্দিন খাঁর পরিবারে রয়েছেন— স্ত্রী: মৃত ফুলজান খাতুন। পুত্র: মৃত মোকসেদ আলী খাঁ, মৃত ইরফান খাঁ, মোঃ আঃ মজিদ খাঁ। কন্যা: মৃত মোছাঃ ফাতেমা বেগম ওই ৯৬ শতক জমির মধ্যে ফুলজান খাতুনের প্রাপ্য ১২ শতক এবং মোঃ আঃ মজিদ খাঁর অংশ ২৪ শতক। কিন্তু বর্তমানে মজিদ খাঁর ভাই-বোনের ছেলে-মেয়েরা ও স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি এই জমি ভোগদখল করে আসছে।
জানা যায়, মৃত মহিউদ্দিন খাঁ ও মৃত তিজার উদ্দিন খাঁর মধ্যে জমি সংক্রান্ত বিরোধ ছিল। এ নিয়ে ১৯৬২ সালে মামলা (মামলা নং ৮৩/১৯৬২) হয়, যার নিষ্পত্তি হয় ১৯৬৯ সালের ৩০ আগস্ট। মামলার পর মহিউদ্দিন খাঁ দেশত্যাগ করে দিনাজপুরের বোচাগঞ্জে বসবাস শুরু করেন।
ভুক্তভোগী মোঃ আঃ মজিদ খাঁ বলেন, “জমির দলিল না থাকায় আজ আমি বিপদগ্রস্ত কিন্তু কাগজপত্র অনুযায়ী আমাদের অধিকার থাকা সত্ত্বেও দখলদাররা জোরপূর্বক জমি ভোগ করছে। আমরা প্রশাসনের কাছে ন্যায়বিচার চাই।”
তিনি ভূমি মন্ত্রণালয় ঢাকা , ফরিদপুর জেলা প্রশাসন, সদরপুর উপজেলা প্রশাসন, ও জেলা পুলিশ সুপারের কাছে দ্রুত তদন্ত ও আইনি পদক্ষেপের অনুরোধ জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের সদস্যরাও সুষ্ঠু তদন্ত ও ন্যায্য বিচার পাওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এখন দেখার বিষয়, প্রশাসন এই ভূমি দখলের ঘটনায় কী পদক্ষেপ নেয়। ভুক্তভোগী পরিবার তাদের পৈতৃক সম্পত্তি ফিরে পাবে কি না, সেটিই এখন বড় প্রশ্ন।