মঙ্গলবার, ১৭ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১লা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

ফরিদপুরে রাত নামলেই শুরু বালু লুটের উৎসব

মো. মাহফুজুর রহমান বিপ্লব, ফরিদপুর: দিনের আলোতে আনাগোনা না থাকলেও রাত নামলেই শুরু হয় পদ্মা নদীর বুক থেকে বালু লুটের উৎসব। পদ্মানদী ফরিদপুর সদর উপজেলার ডিক্রিরচর ও নর্থচ্যানেল ইউনিয়নের বিভিন্ন পয়েন্টে ড্রেজার বসিয়ে বালু তোলেন প্রভাবশালী কয়েক ব্যাক্তি।

অপিরকল্পতভাবে বালু তোলার কারণে এলাকা জুড়ে সৃষ্টি হওয়া নদী ভাঙ্গনে সহায় সম্পদ হারাচ্ছেন এলাকাবাসী। ক্ষতিগ্রস্তরা অবিলম্বে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলা বন্ধের দাবি জানিয়েছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ফরিদপুর নদী বন্দরের কয়েকশ মিটারের মধ্যেই তোলা হচ্ছে বালু। এতে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে বন্দরটিও। আর অপর প্রান্তের আইজদ্দিন মাতুব্বরের ডাঙ্গী ও নাজির বিশ্বাসের ডঙ্গী গ্রামসহ অন্তত চার-পাঁচটি গ্রামের ফসলী জমি ভেঙ্গে যাচ্ছে।

এলাকাবাসী জানান, বছরের পর বছর ধরে অপরিকল্পিতভাবে বালু তোলার কারণে নদী ভেঙে কয়েক কিলোমিটার অভ্যন্তরে চলে এসেছে। তারা দাবি করেন, নদী ভাঙণে এরই মধ্যে অন্তত তিনটি গ্রান চলে গেছে নদীর মধ্যে। আরো অন্তত ১০টি গ্রামের অনেকটাই ভেঙে গেছে।

স্থানীয়দের দাবি, সম্প্রতিকালে জেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কার্যক্রম কিছুটা শিথিল থাকার সুযোগে মরিয়া হয়ে উঠছেন বালু ব্যবসায়ীরা। এই সুযোগকে কাজে লাগাতে তারা বিভিন্ন জেলা থেকে ড্রেজার ভাড়া এনে বালু তুলছেন।


স্থানীয়দের দাবি, মো. আলম শেখ নামের বালু ব্যবসায়ী নর্থ চ্যানেল ইউনিয়নের গোলডাঙ্গীেেত নির্মিত সেতু সংলগ্ন এলাকায় বালু খালাস করায় সেতুটিও ঝুকিতে পড়বে।

নদীপাড়ের বাসিন্দা নাজির বিশ্বসের ডাঙ্গীর আব্দুর রব ও মো. রনিসহ কয়েকজন জানান, মো. মজিবর শেখ, মো আলম শেখ, মো. মোফাজ্জেল হোসেন ও মো. আনোয়ার হোসেন আবু ফকির, মো. শাওন শেখ ও রাজা ফকিরের নেতৃত্বে কয়েকটি ড্রেজার নদী বুকে বিভিন্ন জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করে আসছেন দীর্ঘ দিন ধরে। ওই এলাকার মানুষেরা জানান, বালু উত্তোলনকারীরা প্রভাবশালী হওয়ায়, কেউ বালু তোলার বিষয়ে কথা বলতে গেলেও হেনস্তার শিকার হতে হয়। ফলে ক্ষতির শিকার হয়েও ভয়ে কেউই মুখ খুলতে চান না।

যদিও এসব অভিযোগ অস্বিকার করেছেন অভিযুক্তরা। তারা দাবি করেন, রাজনৈতিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এমন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে।


এ প্রসঙ্গে ফরিদপুরের পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতিম সাহা জানান, জেলা প্রশাসনের সহযোগীতায় প্রায়শ ব্যবস্থা নেয়া হয় এসব বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে। যদিও স্থানীয়দের লিখিত অভিযোগ না থাকায় কারা জড়িত রয়েছে তা নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। এতে সরাসরি কারো বিরুদ্ধে মামলা করাও যাচ্ছে না।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ