সোমবার, ৮ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২৩শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

, এর সর্বশেষ সংবাদ

বইপড়া আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে সরকার : সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ বেসরকারি গণগ্রন্থাগার পরিষদ ও আন্তর্জাতিক পাঠাগার আন্দোলন সংস্থার আয়োজনে জাতীয় গ্রন্থাগার ও সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শনিবার (১৮ ফেব্রুয়ারি) বাংলাদেশ শিশু একাডেমিতে পাঠাগার আন্দোলন বাংলাদেশ আয়োজিত জাতীয় গ্রন্থাগার ও সাহিত্য সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়েরর মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এমপি।

এতে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ এমপি।

বিশেষ অতিথি ছিলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সদস্য হাবিবা রহমান খান এমপি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. হাসানুজ্জামান কল্লোল, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান। সভাপতিত্ব করেন বেসরকারি গণগ্রন্থাগার পরিষদের সভাপতি মালিক খসরু। সম্মেলন শুরুর আগে সকালে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা দোয়েল চত্বর হয়ে শিশু একাডেমিতে প্রবেশ করে। শোভাযাত্রায় প্রত্যেকের হাতে একটি করে বই ছিল। বইপড়ার প্রতি সবাইকে উদ্বুদ্ধ করতে এই শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়।

প্রধান আলোচক কেএম খালিদ বলেন, আমরা প্রকৃত শিক্ষায় শিক্ষিত আলোকিত প্রজন্ম গড়ে তুলতে চাই। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় সে লক্ষ্যে কাজ করছে। আমরা বর্তমানে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্রের মাধ্যমে ৮৭২টি পাঠাগারকে অনুদান প্রদান করছি এবং খুব দ্রুত এর পরিধি বৃদ্ধি করতে চাই। আমরা পরীক্ষামূলকভাবে ১০০টি সেলুন লাইব্রেরি চালু করেছি, যা পুরোপুরি সফল হয়েছে। তিনি আরও বলেন, বইপড়া আন্দোলনকে এগিয়ে নিতে কাজ করছে সরকার। আমরা গণগ্রন্থাগার অধিদপ্তরের ডিজিটালাইজেশন প্রকল্প হাতে নিয়েছি, যেখানে সরকারি পাঠাগারের পাশাপাশি বেসরকারি গ্রন্থাগারগুলোও সংযুক্ত থাকবে।

উদ্বোধনী পর্বে শুভেচ্ছা বক্তব্যে সংগঠনের যুগ্ম মহাসচিব জামাল হোসেন, আলোচক হিসেবে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের সিনিয়র লাইব্রেরিয়ান কাম পরিচালক কনক মনিরুল ইসলাম, কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শুভাশিস ঘোষ বক্তব্য রাখেন।

জাতীয় গ্রন্থাগার ও সাহিত্য সম্মেলন-২০২৩ উপলক্ষে মো. ইমাম হোসাইন এর সম্পাদনায় “বইপড়া আন্দোলন” নামক একটি ম্যাগাজিন উন্মোচন করেন সম্মেলনের অতিথিবৃন্দ।

সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন প্রবীণ সাংবাদিক দৈনিক কালবেলা পত্রিকার সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আবেদ খান, জাতিসংঘ ও বিশ্ব খাদ্য সংস্থার সাবেক উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মাহমুদুল হাসান করিম, ময়মনসিংহ মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. গাজী হাসান কামাল, জাপান চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি বিশিষ্ট সমাজ সেবক আব্দুল হক, সোনালী ব্যাংকের সদ্য বিদায়ী ন্যায়পাল কামরুল ইসলাম, আগামী প্রকাশনের প্রকাশক ওসমান গনী, বাংলা টিভির চেয়ারম্যান সৈয়দ শামাদুল হকসহ দেশবরেণ্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মালিক খসরু পিপিএম এর সভাপতিত্বে, আয়োজক সংগঠনের উদ্যোক্তা ও জাতীয় সম্মেলনের সদস্য সচিব ও প্রধান সমন্বয়ক মো. ইমাম হোসাইন এর সঞ্চালনায়, সাংসদ হাবিবা রহমান খান এর পরিচালনায় শিশু একাডেমির মিলনায়তনে সম্মেলনটি উদ্বোধন করেন সম্মেলনের প্রধান অতিথি মো. তাজুল ইসলাম এমপি।

জাতীয় সম্মেলনে বক্তারা একে একে বাংলাদেশে একটি যুগোপযোগী বইপড়া আন্দোলন গড়ে তুলতে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আলোকপাত করেন।

সম্মেলনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে অবদানের জন্য পাঠাগার আন্দোলন বাংলাদেশ এর সর্বোচ্চ সম্মাননা জ্ঞানবন্ধু পদক প্রদান করা হয় দেশের বার জন বিশিষ্টজনের মধ্যে। তাঁরা হলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রী হিসেবে তাজুল ইসলাম এমপি, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ এমপি, বইপড়া আন্দোলনে অবদানের জন্য বাংলাদেশ বেসরকারি গণগ্রন্থাগার পরিষদের মহাসচিব হাবিবা রহমান খান শেফালী এমপি, মালিক খসরু পিপিএম, একটি উপজেলায় শত পাঠাগার স্থাপন করে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করায় কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী অফিসার শুভাশিস ঘোষ এবং পাঠাগার আন্দোলন বাংলাদেশ এর উদ্যোক্তা মো. ইমাম হোসাইন।

সম্মেলনের আলোচনা শেষে দেশের শ্রেষ্ঠ সাহিত্য সংগঠন (ওপেন একসেস বাংলাদেশ, বিনয় সাহিত্য সংসদ-কুমিল্লা, বইবন্ধু-ঢাকা, বাংলাদেশ বুকওয়ার্ম এসোসিয়েশন-ঢাকা, , শ্রেষ্ঠ বেসরকারি পাবলিক লাইব্রেরি (নারায়ণ মিস্ত্রী গ্রন্থাগার-ঝালকাঠি, সাহস লাইব্রেরি-কুমিল্লা, বঙ্গবন্ধু স্মৃতি পাঠাগার-ব্রাহ্মণবাড়িয়া, সারপুকুর যুব ফোরাম পাঠাগার-লালমনিরহাট, বইপড়া আন্দোলন, ময়মনসিংহ, শ্রেষ্ঠ সরকারি গণগ্রন্থাগার (জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগার, কুমিল্লা, রেজিনা আলম), বিশেষ সম্মাননা পান (ইঞ্জিনিয়ার জুনায়েদ আহমেদ সৈকত, আনিসুর রহমান আকন্দ, আবুল কাশেম, এস এম মুকুল, মনোয়ার হোসেন), শ্রেষ্ঠ সংগঠক হিসেবে বিশেষ সম্মাননা পান (লাবলু মিয়া, শেখ এখলাসউর রহমান, মাহমুদুল হাসান মনির, জামাল হোসেন, শাকিলা সরকার, রেজাউল করিম রেজা, কে এম মেহেদী হাসান বাপ্পি, মিরাজুল ইসলাম, শামীম হোসাইন, ওয়াহিদুজ্জামান বিশ্বাস, মোহাম্মদ আজিজুর রহমান, লোকমান হোসেন রাজু, ফরিদা ইয়াসমিন, সজিবুর রহমান খান, সাগর পারভেজ, নজরুল ইসলাম, থিং সং লেখক লায়লা আরজুমান শিউলী, শ্রেষ্ঠ সাংগঠনিক জেলা নাটোর ও কুমিল্লা কে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়।

এ সম্মেলনে সংগঠনের থিম সং উন্মোচন করা হয়, এছাড়াও সেলিনা সাথী ও রাশেদুজ্জামান সম্পদিত কাব্যকলি, সবুর বাদশার লেখা কাব্যচিত্র, বাউল মেলা কবিতা সংকলন নামকটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

অনুষ্ঠানে ৬১টি জেলার ৭০০ জন বেসরকারি গণগ্রন্থাগার গুলোর সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক ও প্রতিনিধিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

সম্মেলনের শুরুতে সকাল নয়টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণ হতে দোয়েল চত্বর হয়ে বাংলাদেশ শিশু একাডেমি এর চত্বর পর্যন্ত “বইয়ের জন্য রোর্ডমার্চ” শিরোনামে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা আয়োজিত হয়। এতে দেশের পাঁচ শতাধিক বইপড়া আন্দোলনের কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন।

স্বাধীনতার বায়ান্ন বছরের মধ্যে এটাই সর্বপ্রথম বেসরকারি গণগ্রন্থাগার গুলোকে নিয়ে জাতীয় পর্যায়ে সম্মেলন। আর ইতিহাসে বইয়ের জন্য রোর্ডমার্চ এটাই প্রথম।
সম্মেলনে সাংস্কৃতিক পরিবেশনায় অংশ নেন সংস্কৃতি সংগঠক নজরুল ইসলাম এর নেতৃত্বে পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ির একটি চৌকস নৃত্য দল।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ