বরিশাল প্রতিনিধি : বরিশালের গৌরনদী উপজেলায় দাবি করা চাঁদা না পেয়ে ছাত্রলীগের এক কর্মীকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রদল নেতাদের বিরুদ্ধে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় মারপিটে আহত ছাত্রলীগ কর্মীকে মধ্যরাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান বলে গৌরনদী মডেল থানার ওসি আনোয়ার হোসেন জানান।
নিহত রাশেদ সিকদার (২৪) উপজেলার বার্থী ইউনিয়নের বড় দুলালি গ্রামের কামাল সিকদারের ছেলে।
এ ঘটনায় রাশেদের বড় ভাই রাসেল সিকদার বাদী হয়ে বার্থী ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি আল আমিনসহ পাঁচজনকে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন।
রাশেদের বাবা কালাম সিকদার বলেন, আমার বড় ছেলে রাসেল সিকদারের ঢাকার ইসলামপুরে একটি প্লাস্টিকের কারখানা রয়েছে। ছোট ছেলে রাশেদ সেই কারখানায় কাজ করে। শুক্রবার সকালে রাশেদ বাড়িতে আসে। সন্ধ্যায় তার আড়াই বছরের ছেলের জন্য মিষ্টি কিনতে বার্থী বাজারে যায়। সেখানে ছাত্রদল নেতা আল আমিনসহ কয়েকজন রাশেদের কাছে এক লাখ টাকা চাঁদা এনেছে কি-না জানতে চায়। একপর্যায়ে তারা রাশেদের ওপর চড়াও হয়। আত্মরক্ষার্থে পাশের ঘরে আশ্রয় নেয় রাশেদ। সেখানে তাকে কাঠ দিয়ে মাথায় আঘাত করেন তারা।
তিনি বলেন, স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে গৌরনদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। পরে সেখান থেকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা অবনতি হলে রাশেদকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান।
কালাম সিকদারের দাবি, তার ছেলে ষষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করেছে। লেখাপড়ার সার্মথ্য না থাকায় তাকে ঢাকায় কাজে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। প্লাস্টিক কারখানা দিয়ে তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা ভালো হওয়ায় তার ছেলের কাছে বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করত ছাত্রদলের ওই নেতা। টাকা না দেওয়ায় তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার পরিবারের কেউ কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নয়।
একই কথা বলেছেন রাশেদের ভাই ঢাকার ইসলামপুরের সিকদার প্লাস্টিক সেন্টারের মালিক রাসেল সিকদার।
তিনি বলেন, রাশেদ আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে কাজ করত। মাসে দুই একবার বাড়িতে আসত। আমি কিংবা আমার ভাই কোনো রাজনীতির সঙ্গে জড়িত নই।
গৌরনদী উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. রুবেল গোমস্তা বলেন, ঘটনা সম্পর্কে আমি কিছু জানি না। খোঁজ নিয়ে অভিযোগের সত্যতা পেলে আল আমিনের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ওসি আনোয়ার হোসেন জানান, এ ঘটনায় রাশেদের ভাই পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেছেন। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
রাশেদের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় পাওয়া যায়নি; তবে চাঁদা না দেওয়ায় এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে এই পুলিশ কর্মকর্তার ভাষ্য।