শুক্রবার, ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

বান্দরবানে ভ্রমণ ৭ নভেম্বর থেকে উন্মুক্ত

বাবুল খাঁন, বান্দরবান: বান্দরবানের রোয়াংছড়ি -রুমা-থানচি উপজেলায় নিরাপত্তাজনিত কারণে পর্যটন স্পষ্টগুলো বন্ধ ছিল। দীর্ঘ একমাস পর বৃহস্পতিবার নীলগিরিসহ অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্র উম্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে পর্যটকদের জন্য।

সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে পর্যায়ক্রমে রোয়াংছড়ি -রুমা-থানচি উপজেলার পর্যটন স্পট খুলে দেওয়া হবে বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানান জেলা প্রশাসক।

বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের এ বিষয়ে জানান বান্দরবান জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন।

বৃহস্পতিবার থেকে বান্দরবান সদর, নীলগিরি, লামা, আলিকদম ও নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার পর্যটন স্পটসমুহে পর্যটকরা নির্বিঘ্নে ভ্রমণ করতে পারবেন।

বিফ্রিংকালে জেলা প্রশাসক সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বলেন, গতবছর ও এ বছর শুরুর দিকে পাহাড়ে নতুনভাবে কুকি-চীন সন্ত্রাসীদের নানান কর্মকাণ্ড ও রুমা-থানচি উপজেলায় ব্যাংক ডাকাতির ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্ত্রাসীদের দমনে যৌথবাহিনীর অভিযান পরিচালনাকালীন পর্যটকদের নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে পর্যটন স্পটগুলো ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।

দেশের ভ্রমণপিপাসু পর্যটক ও পর্যটনশিল্পের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল অংশীজন ব্যবসায়ীদের কথা মাথায় রেখে বৃহস্পতিবার থেকে জেলায় ৭টি উপজেলার মধ্যে রুমা, রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলা ব্যতীত বাকি ৪টি উপজেলায় সকল পর্যটন স্পটগুলো ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়া হলো।

এক প্রশ্নের জবাবে জেলা প্রশাসক শাহ মুজাহিদ উদ্দিন আরো বলেন, পর্যটন স্পটগুলোতে যথাযথ নিরাপত্তার জোরদার করতে জেলা পুলিশ প্রসাশন ও ট্যুরিস্ট পুলিশের টিম কাজ করবে। এবং পর্যটন স্পটগুলোতে যেন বর্জ্য ব্যবস্থাপনাসহ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বজায় রাখার জন্য জেলা প্রশাসন থেকে নিয়মিত তদারকি করা হবে।

যদি কোনো পর্যটন স্পট, হোটেল-মোটেল ও কটেজে পরিবেশ ধ্বংসের প্রমাণ পেলে যথাযথ আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও হুঁশিয়ার করেন জেলা প্রশাসক।

প্রশাসন সূত্রে জানা যায় , ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে জেলার দুর্গম এলাকাগুলোতে সশস্ত্র সংগঠনের আনাগোনা বৃদ্ধি পায়। এ কারণে ২০২২ সালের ১৭ অক্টোবর রুমা-রোয়াংছড়িতে দেশি-বিদেশি পর্যটক ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে স্থানীয় প্রশাসন। এই নিষেধাজ্ঞা কয়েক দফায় বাড়িয়ে রুমা-রোয়াংছড়ি-আলীকদম ও থানচি উপজেলায়ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়। পরে আলীকদম উপজেলা হতে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হলেও রুমা-রোয়াংছড়ি ও থানচি উপজেলায় বহাল ছিল। ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার মধ্যেও চলতি বছর ৩ ও ৪ এপ্রিল রুমা ও থানচিতে তিনটি ব্যাংকে ডাকাতি করে সশস্ত্র সংগঠন কেএনএফ। তারপর ৬ এপ্রিল থেকে সন্ত্রাস দমনে যৌথবাহিনী অভিযান শুরু করে। চলমান অভিযানে সেনাবাহিনীর কর্মকর্তাসহ নিহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন।

এছাড়া প্রায় দুই বছরের বেশি সময় ধরে পর্যটকদের নিরাপত্তা জনিত কারণে জেলার রোয়াংছড়ি-রুমা ও থানচি তিন উপজেলা ভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা আরোপ থাকায় বান্দরবান ভ্রমণ প্রত্যাশীরা বান্দরবান ভ্রমণে বিমুখ হয়ে পড়েছেন। ফলে আশানুরূপ পর্যটক না পাওয়ায় জেলার পর্যটন সংশ্লিষ্ট ব্যাবসায়ীরা প্রতিনিয়ত আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। তার মধ্যে আবারও অনিবার্য কারণ দেখিয়ে পর্যটকদের গত ৮ অক্টোবর থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত বান্দরবানে ভ্রমণ থেকে বিরত থাকার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিল জেলা প্রশাসন।

উল্লেখ্য, গত ৩০ অক্টোবর বান্দরবান জেলা হোটেল রিসোর্ট-ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সাথে মতবিনিময় সভায় ৭ থেকে ১০দিনের মধ্যে বান্দরবানের পর্যটন স্পটসমূহ পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছিলেন জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন।

প্রেসব্রিফিংয়ে আরো উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার শহিদুল্লাহ কাওছার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (মানবসম্পদ ও উন্নয়ন) এসএম মনজুরুল হক, সেনাবাহিনী, ডিজিএফআই, বিজিবির ঊর্ধ্বতন কমর্কর্তা, সাংবাদিকসহ পর্যটন সংশ্লিষ্ট নেতৃবৃন্দ।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *