কাজী আল আমিন, বিজয়নগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলার সাবেক যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কাউছার মিয়ার কাছে পাওনা টাকা চাওয়ায় তার ক্যাডার বাহিনী নিয়ে জনসম্মুখে কোপালেন একই গ্রামের ফজল ইসলামের দুই ছেলে খোকন ও সুজন মিয়া নামে দুই ভাইকে।
বুধবার সকাল ১১টায় উপজেলার চান্দুরা ইউনিয়নের আমতলী বাজারে এ ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ভুক্তভোগী পরিবারের সুজন মিয়া ৫ জনের নাম উল্লেখ করে থানায় মামলা করেন।
অভিযুক্তরা হলেন, কালো মিয়ার ছেলে কাউছার মিয়া (৩৫), ইয়াসিন মিয়া (২০), কাউছারের ছেলে ইমন (২২), জিল্লু মিয়ার ছেলে আরিফ মিয়া (২০) ও মৃত আব্দুল আলিম ছেলে কালু মিয়া (৬০)।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, গত এক বছর আগে অভিযুক্ত কাউছার মিয়া সুজন মিয়া থেকে বিজয়নগর থানা থেকে অকশনের মোটরসাইকেল কিনে দিবে বলে ৫০ হাজার টাকা নেয়। টাকা নেওয়ার এক বছরেও মোটরসাইকেল অথবা টাকা ফেরত পায়নি ভুক্তভোগী পরিবার। এভাবেই প্রতিনিয়ত তারিখের পর তারিখ দিতে থাকে। এমনকি কয়েকজন সালিশকারীদের কাছেও তারিখ দিয়ে প্রতারণা করে।
ঘটনার দিন ভুক্তভোগীর পরিবারের খোকন মিয়া কাউছারের মোবাইলে ফোনে টাকা চাইলে তাকে গালিগালাজ করেন। পরে তার লাঠিয়াল বাহিনী দিয়ে দুইজনকে রাস্তায় ফেলে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। স্থানীয় সাংবাদিকের খবরে পুলিশ আসলে কাউছার তার কার্যালয় থেকে বের হন। গুরুতর আহত খোকন মিয়া বর্তমানে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন।
এ বিষয়ে বিজয়নগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বিতর্কিত এই যুবলীগ নেতার নামে বলাৎকার মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে। বছর দুয়েক আগেও সিগারেট বাকি না দেওয়াকে কেন্দ্র করে ইউনিয়নের আলাদাউদপুর গ্রামের সংখ্যালঘু রিদুশীলের পরিবারের উপর অতর্কিত হামলা করে রক্তাক্ত জখম করেন।
সূত্রে জানা যায়, সে এলাকার লোকজনের কাছ থেকে থানা পুলিশেসহ বিভিন্ন অজুহাতে টাকা-পয়সা আত্মসাৎ করে থাকেন।
জনসাধারণের বক্তব্য, রাজনৈতিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিরীহ মানুষদের উপর প্রতিনিয়ত এভাবেই নির্যাতন করে আসছেন কাউছার। জানা যায়, ডজনের চেয়েও বেশি মানুষ তার কাছে টাকা-পয়সা পায়।
এক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, গত সোমবার রাতে চান্দুরা-আখাউড়া রোডের আমতলী বাজারের দক্ষিণ পাশে গ্রামীণ ব্যাংক সংলগ্ন সরকারি মেহগনি গাছ বাজারের আলম মিয়ার স’মিলে কেটে নিয়ে যান কাউছার। তিনি আরো বলেন, সকালে এগুলো নেওয়ার সময় ভিডিও ফুটেজ ধারণ করে রেখেছি।
যুবলীগ নেতা কাউছারের বিরুদ্ধে আরোও অভিযোগ, সরকারের দেওয়া টিউবওয়েল দিবে বলে অনেকের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা নিয়েও কাজ করেনি। তার বিরুদ্ধে এমন অভিযোগও রয়েছে দলীয় প্রভাব খাটিয়ে ভিন্ন মতাদর্শীর বাড়ি থেকে সরকারিভাবে বসানো টিউবেল উঠিয়ে নিয়ে যান।