কাজী আল আমিন, বিজয়নগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) : ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর থানায় স্বর্ণের বার প্রতারক চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে বিজয়নগর থানা পুলিশ।
শনিবার সকালে চান্দুরা বাস স্ট্যান্ডে একদল সংঘবদ্ধ প্রতারক চক্র সিএনজি নিয়ে যাত্রী বেশে অবস্থান করে। বিজয়নগর থানার নাজিরাবাড়ি গ্রামের ভুক্তভোগী সুরাইয়া বেগম চান্দুরা হতে চম্পকনগর বাজারে যাওয়ার জন্য সিএনজি স্টেশনে আসলে পূর্ব হতে অবস্থান করা প্রতারক চক্রের ড্রাইভার সাদ্দাম হোসেনের সিএনজিতে যাত্রী বেশে উঠে। প্রতারকচক্রের মহিলা সদস্য রিমা বেগমসহ তার অপর তিনজন সহযোগী (একজন তার স্বামী শরিফ, একজন তার আপন ভাই, অপরজন তার নিকট আত্মীয়) চম্পকনগর যাওয়ার পথে অভিনব কৌশলে একটি পুরাতন মানিব্যাগ প্রতারক চক্রের এক সদস্য ভুক্তভোগীর অগোচরে রাস্তায় ফেলে। পরে নিজেদের পরিকল্পনা মতো একটি মানিব্যাগ পেয়েছে বলে গাড়ি থামায়। গাড়ি থামিয়ে মানিব্যাগে থাকা কাগজের পোস্টার দ্বারা মোড়ানো একটি ২২ ক্যারেট এর স্বর্ণের বার যেটি তিন ভরি বলে একটি চিরকুটে লেখা থাকে। তখন তাদের মধ্যে স্বর্ণের বার নেওয়ার জন্য একে অপরের সাথে প্রতারণামূলক কথা বলে এবং অভিনয় করতে থাকে।
তাদের কথাবার্তায় ভুক্তভোগী সুরাইয়া বেগম এর নিকট অরজিনাল স্বর্ণ বলে বিশ্বাস জন্মায়। পরে তাদের মধ্যে মানিব্যাগটি পাওয়া ব্যক্তি তার বোনের বিয়ের জন্য স্বর্ণের বারটি বিক্রি করে দিতে চায়। তখন তারা নিজেদের মধ্যে দরদাম করে ভুক্তভোগীকে আরো গভীর বিশ্বাসে প্রলোভিত করে। তখন ভুক্তভোগী সুরাইয়া বেগম স্বর্ণ কিনতে রাজি হয় এবং দর কষাকষি করে তার সঙ্গে থাকা ১ লাখ ১০ হাজার টাকা প্রদান করে। তারা টাকা নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণ পর ভুক্তভোগী কিছুটা স্বাভাবিক হলে সে প্রতারিত হয়েছেন বলে বুঝতে পারেন। তখন তাৎক্ষণিক পুলিশকে অবহিত করলে বিজয়নগর থানা কর্মরত এসআই মো. ইউনুছ মিয়ার নেতৃত্বে সঙ্গীয় ফোর্সসহ পুলিশ সাড়াশি অভিযান পরিচালনা করেন। পরে প্রতারক চক্রের ৩ সদস্যকে আটক করে এবং ২ টি নকল স্বর্ণের বার জব্দ করে।
গ্রেফতারকৃত আসামিদের দেওয়া তথ্য মতে ঘটনার মূলহোতা শরিফুল ইসলামকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থেকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে তার দেখানো মতে নকল স্বর্ণের বার তৈরির যন্ত্রপাতি সহ আরো পাঁচটি নকল স্বর্ণের বার উদ্ধার করা হয়। ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদে উক্ত স্বর্ণের চামচ, দোকান ঘর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, সড়ক বাজার হতে আসামির দেখানো নমুনা আলামত হিসেবে জব্দ করা হয়। এ ঘটনায় মামলা রুজু করা হয়।
এ বিষয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সোনাহর আলী শরীফ বলেন, আমাদের কাছে সঠিক তথ্য-উপাত্ত থাকায়, পুলিশি কায়দা কানুন ব্যবহার করে, গুরুত্বের সাথে দ্রুত আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে থাকি । জেলাব্যাপী আমাদের এ অভিযান অব্যাহত আছে ।