নিউজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বলেছেন, তাঁর সরকার বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)-কে আধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত একটি বিশ্বমানের বাহিনীতে রূপান্তরিত করতে কাজ করে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে একটি বিশ্বমানের আধুনিক সীমান্তরক্ষী বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলার জন্য ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ভিশন ২০৪১’ পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে রাজধানীর পিলখানাস্থ বিজিবি সদর দপ্তরের অভ্যন্তরে বীর উত্তম আনোয়ার হোসেন প্যারেড গ্রাউন্ডে ‘বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) দিবস-২০২২’ উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বর্ডার গার্ডের দায়িত্বশীলতার প্রশংসা করেন। পাশাপাশি কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের দেখভালেও তাদের বিশেষ ভূমিকার উল্লেখ করেন। সীমান্ত পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখায় তাদের পেশাদারিত্বেরও প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার বিজিবি’র সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য বিজিবি পুনর্গঠনের আওতায় ব্যাপক উন্নয়নমূলক কাজ করে যাচ্ছে। ফলে, বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ একটি দক্ষ, শক্তিশালী আধুনিক ও ত্রিমাত্রিক বাহিনী হিসেবে প্রতিষ্ঠানিক রূপলাভ করেছে।
তিনি বলেন, বিজিবি’র সাংগঠনিক কাঠামোতে নতুন ইউনিট/সেক্টর/রিজিয়ন সৃষ্টির ফলে কমান্ড স্তরে একটি ভারসাম্য সৃষ্টি হয়েছে। ফলে, সুষ্ঠুভাবে সীমান্ত সুরক্ষা, সীমান্ত অপরাধ দমন এবং সীমান্তবর্তী জনসাধারণের জানমাল রক্ষা করা আগের চেয়ে সহজতর হয়েছে।
তিনি বলেন, নিñিদ্র নজরদারি ও আন্তঃরাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ঝুঁকিপূর্ণ সীমান্তে স্মার্ট ডিজিটাল সার্ভেইল্যান্স এন্ড ট্যাকটিকাল রেসপন্স সিস্টেম স্থাপন করা হয়েছে। এসব অত্যাধুনিক অস্ত্র ও সরঞ্জামাদি বিজিবিতে যুক্ত হওয়ায় এ বাহিনীর আভিযান সক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
তিনি বলেন, এই দেশ আমাদের, দেশ যত উন্নত হবে আপনাদের পরিবারই ভাল থাকবে, সুস্থ থাকবে, উন্নত জীবন পাবে, শিক্ষা-দীক্ষা, চিকিৎসা ও কর্মসংস্থান সহ সবধরণের সুযোগ পাবে। সেই কথাটা সবসময় মনে রাখতে হবে।
তিনি বলেন, বর্ডার গার্ড আইন ২০১০ পাশের পর এই বাহিনীকে আমরা আধূনিক ও যুগোপযোগী করে গঠন করেছি। আমার বিশ^াস আধুনিক সীমান্ত রক্ষী বাহিনী হিসেবে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ তার লক্ষ্য অর্জনে এগিয়ে যাবে।
সরকার প্রধান বলেন, আমি বিশ্বাস করি, যেকোন পেশাদার বাহিনীর জন্য প্রশিক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি সুশৃঙ্খল ও দক্ষ বাহিনীর জন্য প্রশিক্ষণের বিকল্প নেই। বিজিবি সদস্যদের উন্নত প্রশিক্ষণের জন্য সাতকানিয়ার ‘বর্ডার গার্ড ট্রেনিং সেন্টার এন্ড কলেজ’ এর পাশাপাশি চুয়াডাঙ্গায় আরও একটি প্রশিক্ষণ সেন্টার স্থাপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
তিনি বলেন, জাতির পিতা যেভাবে দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটাতে চেয়েছিলেন আজকে আওয়ামী লীগ সরকার সেই পদক্ষেপটাই নিয়েছে। খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি গৃহহীন-ভূমিহীনদের বিনামূল্যে ঘর এবং জীবন-জীবিকার ব্যবস্থা করে দিচ্ছে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের দেশে একটি মানুষও ভূমিহীন-গৃহহীন থাকবে না, ইনশাল্লাহ। আমরা সেভাবেই কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি বলেন, প্রত্যেকটা মানুষের জন্য একটা ঠিকানা গড়ে দেয়ার পাশাপাশি সকলের হাতে আজকে মোবাইল ফোন, ইন্টারনেট সার্ভিস, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণ, ফ্রিলান্সিং, ইয়াং জেনারেশনের জন্য আমরা সর্বক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা নিচ্ছি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ আজকে এগিয়ে যাচ্ছে এবং আজকে আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি যে দেশকে জাতির পিতা যুদ্ধ বিধ্বস্থ অবস্থা থেকে গড়ে তুলে স্বল্পোন্নত দেশের পর্যায়ে রেখে গিয়েছিলেন। আমরা সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করে ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী এবং ২০২১ সালে স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উদযাপনকালীনই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি। এটা আমাদের ধরে রেখে এগিয়ে যেতে হবে। যদিও কোভিড-১৯ অতিমারীর কারণে বিশ^ব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা তারও পর রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ ও একে কেন্দ্র করে স্যাংশন ও পাল্টা স্যাংশনের ফলে সারাবিশে^ অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। আমাদের দেশে যাতে এই মন্দা না আসে সেজন্য আমাদেরকেই তার ব্যবস্থা নিতে হবে। কারো কাছে হাত না পেতে নিজেদের খাদ্য উৎপাদন করে আমরা নিজেরা নিজেদের মতই চলবো, মাথা উঁচু করে চলবো।
তিনি বলেন, এই কারণেই আমি আহ্বান জানিয়েছি এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি পড়ে না থাকে, প্রতিটি ইঞ্চিতে যে যা পারেন তা-ই উৎপাদন করবেন।
প্রতিটি বিওপিতেই আমাদের বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের সদস্যরা কিছু না কিছু উৎপাদন করছেন বা পশু পাখি পালন করায় তিনি সকলকে ধন্যবাদ জানান।
জাতির পিতার স্বপ্ন পূরনের কথা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে ইনশাল্লাহ বাংলাদেশ হবে উন্নত, সমৃদ্ধ দেশ, স্মার্ট বাংলাদেশ। যে বাংলাদেশের প্রতিটি মানুষ ই-ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করবে।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যান অর্থাৎ এই ভূখন্ড এই ব-দ্বীপ অঞ্চলটায় প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন উন্নত জীবন পেতে পারে সেই পদক্ষেপও আমরা নিয়েছি। সেজন্য প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নের কাজও আমরা শুরু করেছি।
বিজিবিকে বিশ্বমানের বাহিনী হিসেবে গড়ে তোলা হবে : প্রধানমন্ত্রী
- যায়যায়কাল
- ডিসেম্বর ২০, ২০২২
- ৫:০৭ অপরাহ্ণ
Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram