সোমবার, ২৩শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,৭ই জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বিজ্ঞান মেলায় চ্যাম্পিয়ন সাতক্ষীরার সামিউল আলিম

আব্দুর রহমান, সাতক্ষীরা: বিজ্ঞান চর্চা এখন আর শুধু পাঠ্যবইয়ের মাঝে সীমাবদ্ধ নেই। সেটি আজ বাস্তব উদ্ভাবনে রূপ নিচ্ছে সাতক্ষীরার উঠতি প্রজন্মের হাতে। এর জ্বলন্ত প্রমাণ রেখে গেলেন জেলারই কৃতী শিক্ষার্থী সামিউল আলিম তাজ।

সম্প্রতি ঢাকায় অনুষ্ঠিত ৪৬তম জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সপ্তাহ ও বিজ্ঞান মেলা ২০২৫-এ জুনিয়র গ্রুপে জাতীয় পর্যায়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে সামিউল। তিনি খুলনার জাহানাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজ (ইংলিশ ভার্সন)-এর অষ্টম শ্রেণির ছাত্র।

এই উদ্ভাবনী প্রকল্পে ভয়েস কমান্ড ব্যবহার করে গৃহস্থালির বিভিন্ন কাজ ও কৃষিকাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরিচালনার প্রযুক্তি উপস্থাপন করা হয়। এর মাধ্যমে একটি ঘরের নিরাপত্তা, আলো-তাপমাত্রা, রান্না, দরজা-জানালা, সেচ ব্যবস্থা, পানির পাম্পসহ নানা কাজ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। প্রকল্পটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয় এবং বিচারকমণ্ডলীর বিশেষ প্রশংসা অর্জন করে।

উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে একের পর এক শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনের পর সামিউল খুলনা বিভাগের প্রতিনিধিত্ব করে ঢাকায় জাতীয় পর্বে অংশ নেয়। ১৮-২০ জুন ঢাকার জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি কমপ্লেক্সে অনুষ্ঠিত হয় এই মেলা। ২০ জুন পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন মোঃ মোকাব্বির হোসেন, সিনিয়র সচিব, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়।

বিশেষ অতিথি ছিলেন ড. সামিনা আহমেদ, চেয়ারম্যান, বিসিএসআইআর। সভাপতিত্ব করেন অতিরিক্ত সচিব আবু সাঈদ মোঃ কামরুজ্জামান।

এছাড়াও সামিউলের প্রকল্প ঘুরে দেখে সরাসরি প্রশংসা করেন দেশের অর্থ ও বাণিজ্য উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ।
তার উপস্থিতি ও উৎসাহ প্রকল্পটির গুরুত্ব আরও বাড়িয়ে তোলে। সামিউলের এই অসাধারণ সাফল্যের পেছনে রয়েছে তার বিজ্ঞানের শিক্ষক প্রভাষক মোরল মুশফিকুর রহমান-এর অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনা।

প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, “এই কৃতিত্ব শুধু সামিউলের নয়, এটি সাতক্ষীরা তথা সমগ্র খুলনা অঞ্চলের অর্জন।”

সামিউল সাতক্ষীরা জেলার তালা উপজেলার ইসলামকাটি গ্রামের সন্তান। তার বাবা টিপু সুলতান ও মা তাহেরা আক্তার সন্তানের এই অর্জনে গর্বিত।

তারা জানান, “ছোটবেলা থেকেই সামিউল প্রযুক্তিপ্রেমী এবং উদ্ভাবনী চিন্তায় আগ্রহী ছিল। এই সাফল্য আমাদের পরিবার এবং জেলার জন্য আনন্দের।” সামিউল আলিম তাজের মতো শিক্ষার্থীরাই প্রমাণ করে, প্রযুক্তির সঠিক ব্যবহার ও সৃজনশীলতা যদি লালন করা হয়— তাহলে বিশ্বদরবারে বাংলাদেশের নাম উজ্জ্বল করাও সম্ভব।

তার এই কৃতিত্ব আগামী দিনের বিজ্ঞানমনস্ক প্রজন্মকে উৎসাহিত করবে এবং সাতক্ষীরাকে একটি নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে— এমনটাই প্রত্যাশা সকলের।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *