শনিবার, ১৭ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,৩১শে মে, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

বিদায় ফারুক আহমেদ

যায়যায়কাল প্রতিবেদক: ফারুক আহমেদকে নিয়ে দিনভর নানা খবর, অভিযোগ-পাল্টা অভিযোগের পর বড় খবর এলো রাতে।

বিসিবি পরিচালক হিসেবে তার মনোনয়ন বাতিল করে দিল জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ (এনএসসি)। বিসিবি সভাপতির দায়িত্বে থাকার শর্তও তাই স্বয়ংক্রিয়ভাবেই হারিয়ে ফেললেন তিনি।

বৃহস্পতিবার রাত ১১টায় যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানায় মনোনয়ন বাতিল করার খবর।

গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর বিসিবিতে পরিবর্তনের পালায় ২১ আগস্ট এনএসসির মনোনয়নেই বোর্ড পরিচালক হন ফারুক। পরে তিনি সভাপতি নির্বাচিত হন। ৯ মাস পর তার সেই মনোনয়ন বাতিল করে দিল এনএসসি।

বিসিবি সভাপতি হতে হলে আগে পরিচালক হওয়া বাধ্যতামূলক।

বিসিবির গঠনতন্ত্র অনযায়ী, নির্বাচিত পরিচালকদের পাশাপাশি পরিচালনা পর্ষদে দুজন সরাসরি জায়গা পান এনএসসির মনোনয়নে। নাজমুল হাসান সভাপতি থাকার সবশেষ মেয়াদে এই ক্যাটাগরিতে থেকে পরিচালক হয়েছিলেন আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ও জালাল ইউনুস। দেশে রাজনৈতিক পালাবদলের পর পদত্যাগ করেন জালাল, আর বাতিল করা হয় সাজ্জাদুলের মনোনয়ন। ফাঁকা হওয়া দুটি পদের একটি পেয়েছিলেন ফারুক, আরেকটি নাজমুল আবেদীন।

পরিচালকদের ভোটে বিসিবি সভাপতি নির্বাচিত হয়ে থাকেন। নাজমুল হাসান টানা তিন দফায় বিসিবি সভাপতি হয়েছিলেন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। ফারুকও সভাপতি হয়েছিলেন কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছাড়াই। কিন্তু বছর না ঘুরতেই তার ওপর থেকে সরে গেল আস্থার হাত।

ফারুককে নিয়ে দিনজুড়েই দেশের ক্রিকেটে ছিল নানা খবরের ছড়াছড়ি। বুধবার রাতে তার সঙ্গে বৈঠকে যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া জানিয়ে দেন, বিসিবি সভাপতির পদে পরিবর্তন চান তারা।

ফারুক বৃহস্পতিবার জানান, পদত্যাগের কোনো কারণ দেখছেন না তিনি। এর মধ্যেই জানা যায়, ফারুকের বিরুদ্ধে অনাস্থা জানিয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছেন আটজন বিসিবি পরিচালক।

ফারুক জবাবে বলেন, অনাস্থা চিঠির কোনো সুযোগ গঠনতন্ত্রে নেই। ওই ৮ জন পরিচালকের বিরুদ্ধেই পাল্টা অভিযোগ আনেন তিনি।

ফারুকের মনোনয়ন বাতিল করে এনএসসির যুগ্মসচিব আমিনুল ইসলামের স্বাক্ষরিত সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘৮ জন পরিচালক অনাস্থা প্রস্তাব দাখিল করায় এবং বিপিএল সংক্রান্তে গঠিত সত্যানুসন্ধান কমিটির প্রতিবেদন পর্যালোচনায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখার প্রয়োজনে’ এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

পরিচালক পদে না থাকায় বিসিবি সভাপতির দায়িত্বে থাকার মূল শর্তই হারিয়ে ফেললেন ফারুক। কোনো নিয়মের ফাঁকে তিনি দায়িত্বে থাকতে পারেন কি না, এটিই এখন প্রশ্ন। বিসিবি সভাপতির পরিচালক পদই নেই, দেশের ক্রিকেটে আগে কখনও এমনটি দেখা যায়নি। তাই নিয়মটি নিয়ে কিছুটা ধোঁয়াশা আছে।

ফারুক আহমেদ নিজেও ঠিক পরিষ্কার নন নিয়ম নিয়ে। তিনি শুধু বললেন, “এখনই কিছু বলতে চাই না। তবে এখনও পদত্যাগ করিনি। আমার আইনজীবীদের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেব।”

সম্ভাব্য নতুন সভাপতি অবশ্য তৈরি হয়েই আছেন। সাবেক জাতীয় অধিনায়ক আমিনুল ইসলাম বুলবুল বৃহস্পতিবার জানান, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিসিবিতে কাজ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে তাকে এবং তিনি যে কোনো দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত।

সভাপতির দায়িত্বের কথা অবশ্য সরাসরি বলেননি তিনি। তবে বিসিবির আগামী নির্বাচন পর্যন্ত বোর্ডে কাজ করার আগ্রহের কথা জানিয়েছেন। বিসিবি নির্বাচন করবেন না এবং দীর্ঘমেয়াদি দায়িত্বে থাকবেন না বলেও সরাসরি জানিয়ে দিয়েছেন দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান।

আগামী অক্টোবরের মধ্যে বিসিবি নির্বাচনের বাধ্যবাধকতা আছে।

ফারুকের জায়গায় এনএসসির মনোয়নে আমিনুল বোর্ড পরিচালক হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। এজন্য অবশ্য কাউন্সিলর হওয়ার বাধ্যবাধকতাও আছে। ফারুক আহমেদ বিসিবির কাউন্সিলর ছিলেন আগে থেকেই। এবার আমিনুলের সেই শর্তও পূরণ করা হয়ে গেছে। বিসিবির গত নির্বাচনে থাকা এক কাউন্সিলরের পরিবর্তে বৃহস্পতিবারই আমিনুলকে কাউন্সিলর করে নিয়েছে এনএনসি। বিসিবির গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, এনএসসি কাউন্সিলর মনোনয়ন দিতে পারে পাঁচ জন।

তবে কাউন্সিলর পরিবর্তন করতে হলে সেটি বিসিবির সভায় অনুমোদন পেতে হয়। সেই আনুষ্ঠানিকতার ব্যাপার আমিনুলের ক্ষেত্রে রয়ে গেছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ