সোমবার, ২৮শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৩ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বীরগঞ্জে ৭ বছরেও শেষ হয়নি জয়ন্তীয়া সেতুর নির্মাণ কাজ, লাপাত্তা ঠিকাদার

বীরগঞ্জ (দিনাজপুর) প্রতিনিধি: দিনাজপুরের বীরগঞ্জ ও খানসামা উপজেলার লাখো মানুষের যাতায়াতের একমাত্র ভরসা জয়ন্তীয়া সেতুর নির্মাণ কাজ সাত বছর ধরে বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয় ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান কাজ অসমাপ্ত রেখেই উধাও হয়ে যাওয়ায় সেতুটি এখন অর্ধসমাপ্ত অবস্থায় পড়ে আছে। এতে দুই উপজেলার কয়েক লাখ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছে।

২০১৮ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর আত্রাই নদীর জয়ন্তীয়া ঘাটে ৪৪ কোটি ১৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ৪৫০ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতু নির্মাণ শুরু করে ঢাকাস্থ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সুরমা কনস্ট্রাকশন।

প্রকল্পটির তত্ত্বাবধানে ছিল স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি), দিনাজপুর।

চুক্তি অনুযায়ী ২০২১ সালের এপ্রিলের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল। তবে দুই দফা সময় বাড়ানো হলেও এখন পর্যন্ত মাত্র তিনটি স্প্যানের কাজ শেষ হয়েছে, বাকি ছয়টি স্প্যানের কাজ বন্ধ রয়েছে।

স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, ঠিকাদার ও এলজিইডির উদাসীনতার কারণে দীর্ঘদিন ধরে কাজের অগ্রগতি স্থবির হয়ে আছে। শুষ্ক মৌসুমে পারাপারের জন্য কাঠ ও বাঁশের সাঁকোর ওপর নির্ভর করতে হয়, আর বর্ষাকালে একমাত্র ভরসা হচ্ছে স্যালোচালিত নৌকা। এতে জনসাধারণ, ভ্যানচালক, মোটরসাইকেল ও ব্যাটারিচালিত যানবাহনের চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে।

মধুবনপুর এলাকার ভ্যানচালক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, “জীবিকার তাগিদে প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হয়। সেতুটা হলে আমাদের চলাচল সহজ হতো, আয়-উপার্জনও বাড়ত।”

স্থানীয় ব্যবসায়ী তোতা মিয়া ও সাব্বির হোসেন ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, “সেতু না থাকায় কৃষিপণ্য পরিবহনে অতিরিক্ত খরচ হচ্ছে। এতে কৃষক ও ব্যবসায়ী উভয়েরই ক্ষতি হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সেতুর কাজ সম্পন্ন করা জরুরি।”

যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সুরমা কনস্ট্রাকশন-এর স্বত্ত্বাধিকারী আইয়ুব আলী ফোন রিসিভ করেননি।

তবে প্রতিষ্ঠানটির ম্যানেজার ফজলুল হক জানান,“আমরা কাজ ছেড়ে দিয়েছি এবং আর এ প্রকল্পে যুক্ত নেই।”

এ বিষয়ে এলজিইডি দিনাজপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী মাসুদুর রহমান এবং বীরগঞ্জ উপজেলা প্রকৌশলী হুমায়ুন কবির বলেন, “চলমান ঠিকাদারকে বাতিল করা হয়েছে। নতুন করে পুনঃটেন্ডার আহ্বানের প্রস্তুতি চলছে। আশা করা হচ্ছে আগামী ৪ থেকে ৫ মাসের মধ্যে সেতুর কাজ পুনরায় শুরু হবে।”

স্থানীয়দের আশা, এবার যেন প্রকল্পটি আর স্থবির না হয়ে পড়ে, আর দীর্ঘদিনের ভোগান্তির অবসান ঘটে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ