সোমবার, ২২শে পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,৬ই জানুয়ারি, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

বেগমগঞ্জে অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ

ম.ব.হোসাইন নাঈম, নোয়াখালী প্রতিনিধি: নোয়াখালীর বেগমগঞ্জের ছয়ানী ইউনিয়নে এক অন্তঃসত্ত্বা গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। এই ঘটনায় নিহতের স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে গেছে পুলিশ।   

নিহত গৃহবধূর নাম সুরাইয়া আক্তার (১৮)। সে উপজেলার ৫ং ছয়ানী ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের জাহিদপুর গ্রামের দুলাল হোসেনের মেয়ে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবার থানায় লিখিত অভিযোগের প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান।

শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) দুপুর ২টার দিকে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের দোয়ালিয়া ঠাকুর বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।  

নিহতের চাচা জাকির হোসেন ও নুর আহমদ অভিযোগ করে বলেন, নয় মাস আগে তার ভাতিজি সুরাইয়া আক্তারের সঙ্গে উপজেলার ছয়ানী ইউনিয়নের ৮নম্বর ওয়ার্ডের দোয়ালিয়া গ্রামের ঠাকুর বাড়ির মো.আবদুল্ল্যার ছেলে মো. ফয়সাল মাহমুদ পাভেলের বিয়ে হয়। বর্তমানে সে ২-৩ মাসের অন্তঃস্বত্তা ছিল। বিয়ের পর থেকেই স্বামীসহ শ্বশুরবাড়ির লোকজন সুরাইয়ার ওপর নানাভাবে নির্যাতন চালাতেন। এ নিয়ে প্রায়ই স্বামী-স্ত্রীর ঝগড়া হতো। এই ভয়ে সে বাবার বাড়িতে গেলে স্বামীর বাড়ি আসতে চাইতো না। গত ৪দিন আগে সে বাবার বাড়ি থেকে স্বামীর বাড়িতে যায়। গত ৩দিন ধরে তার স্বামীর পরিবারে ঝগড়া চলছে। এই ঝগড়ার জের ধরে গত ৩দিন তাদের ঘরে কোনো খাবার রান্না হয়নি।  সে গত ৩ দিন ধরে উপোস ছিল। নানা মুখি নির্যাতনে অতিষ্ঠ হয়ে শুক্রবার দুপুর ১২টার দিকে সে বাবার বাড়ি চলে যেতে চেষ্টা করলে তাকে নির্যাতন করে হত্যা করা হয়। গরীব পরিবারের মেয়ে হওয়ায় সে স্বামীর  বাড়ির নির্যাতনের বিষয়ে বাবার বাড়ির লোকজনকে তেমন অভিযোগ করত না। সে মুখ বুঝে সব কিছু সহ্য করে স্বামীর সংসার করছিল। 

তারা অভিযোগ করে আরো বলেন, বিকেল সাড়ে ৩টার দিকে সুরাইয়ার শ্বশুর বাড়ির লোকজন আমাদেরকে ফোনে জানান সুরাইয়া বিষপানে আত্মহত্যা করেছে।  কিন্ত আমরা তার মুখে কোন বিষের গন্ধ পাইনি। তার মুখে একটি চড়ের দাগ রয়েছে। তারা দুপুর ১২টার দিকে আমাদের মেয়েকে হত্যা করে বিষ খেয়ে আত্মহত্যা বলে প্রচার করেন। এক পর্যায়ে তারা সুরাইয়াকে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরে আবার তারা সেখান থেকে মরদেহ বাড়িতে নিয়ে আসে।  

অভিযোগের বিষয়ে জানতে নিহতের শ্বশুর মো. আবদুল্ল্যাহ অভিযোগ নাকচ করে দিয়ে বলেন, সে অনেক ভালো মেয়ে ছিল। আমার ছেলে তাকে খুব ভালোবাসত। তাকে হত্যার প্রশ্নই উঠেনা। 

বেগমগঞ্জ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো.শাহেদুল ইসলাম ঘটনাস্থল থেকে বলেন, আশে পাশের লোকজন জানিয়েছে নিহত গৃহবধূর গায়ে একটা খিঁচুনি উঠেছে। পরে নিহতের শ্বশুরের পরিবারে লোকজন তাকে হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর মৃতদেহ ময়না তদন্ত ছাড়া পুনরায় বাড়িতে নিয়ে আসে। মরদেহের সুরতহাল রিপোর্ট সম্পন্ন করা হয়েছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নিহতের শরীরে দৃশ্যমান কোনো আঘাতের চিহৃ দেযায়নি।  এই ঘটনায় কাউকে আটক করা হয়নি। তবে নিহতের স্বামীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।  ।  

বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর জাহেদুল হক রনি বলেন, নিহতের পরিবারের অভিযোগের বিষয়ে শুনেছি। পুলিশকে ঘটনাস্থলে পাঠানো হয়েছে।  এই ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।  মরদেহ উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হচ্ছে। ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যু সঠিক কারণ জানা যাবে।  

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ