দিনাজপুর প্রতিনিধি: দিনাজপুরের সেতাবগঞ্জে সাংবাদিক মো. আব্দুল মজিদ খাঁনের বসতবাড়ি থেকে নগদ টাকা, মোবাইল ফোনসহ দেড় লক্ষাধিক টাকার মালামাল চুরি করে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে তার স্ত্রী মোছা. আশা আক্তারের বিরুদ্ধে। তিনি এ ঘটনায় বোচাগঞ্জ থানায় অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে মো. আব্দুল মজিদ খাঁনের শোয়ার ঘর থেকে মানিব্যাগে থাকা ৬ হাজার ৫০০ টাকা, ভোটার আইডি কার্ড, হিরো হোন্ডা মোটরসাইকেলের লাইসেন্স, ড্রয়ারে থাকা নগদ ৫০ হাজার টাকাসহ মোট ৫৬ হাজার ৫০০ টাকা চুরি করে নিয়ে যায়। তাছাড়া দুইটি মোবাইল সেট- অপ্পো রেনো এইট ফাইভ জি যার মূল্য ৪০ হাজার টাকা, স্যামসাং গ্যালাক্সি এ থারটিন যার মূল্য ২৬ হাজার টাকা। মোট ৬৬ হাজার টাকা ও দুই মোবাইল সেটের রশিদসহ ঘরের প্রধান গেট খুলে পালিয়ে যায় আশা আক্তার। অনেক খোঁজাখুঁজি করা পরও তাকে পাওয়া যায়নি।
অভিযুক্তরা হলেন- ১. মোছা. আশা আক্তার (২৫), পিতা মো. লাইছুর রহমান, ২. মো লাইছুর রহমান (৫৫), পিতা মৃত মফির উদ্দিন ৩. মোছা. লিপি আক্তার (৪৫), স্বামী মো. লাইছুর রহমান, ৪. মো. নয়ন মিয়া (২২), ৫. মো. আ. মালেক ওরফে চৌধুরী (৬০) পিতা মৃত মশির উদ্দিন, ৬. মো. দুলাল মিয়া (৬৫), পিতা মৃত আঃ হামিদ। তারা বোচাগঞ্জ উপজেলার বড় সুলতানপুর গুচ্ছগ্রাম আবাসন এলাকার বাসিন্দা।
মো. আব্দুল মজিদ খাঁন জানান, গত ৩১ মে বিকাল ৪:৩০ মিনিটের দিকে সেতাবগঞ্জ বাজারে অসুস্থ অবস্থায় আসেন আশা আক্তার। তাকে বোচাগঞ্জ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়। এরপর তিনি সুস্থ হয়ে স্বামী মজিদ খানের বাড়িতে থাকতে শুরু করেন। পাঁচ মাস ১৪ দিন থাকার পর তিনি চুরি করে বৃহস্পতিবার পালিয়ে যান।
আব্দুল মজিদ খাঁনের অভিযোগ, ইতিপূর্বে নগদ টাকা চার লাখ পাঁচ হাজার ৬শ’ টাকা ও স্বর্ণের অলংকার যার মূল্য ৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন আশা আক্তারের বড় বোন রাশিদা আক্তার (২৮)।
তিনি আরও জানান, ফরিদপুর জেলে থাকাকালীন ২০২৩ সালের ১৫ জুন তার বাসায় টাকা চুরি করে আশা আক্তারসহ তার পরিবারের লোকজন। আশা আক্তারের বড় বোন রাশিদা আক্তার ও দুলাভাই দেলোয়ার হোসেনের কাছে টাকা ও স্বর্ণ অলংকার লুকানো আছে। গত ১১/৭/২০২৩ ইংরেজি তারিখে আঃ মজিদ খান বাড়িতে এসে দেখে তার স্ত্রী নেই। গত ১২/৭/২০২৩ তারিখে নিজের স্ত্রীকে দিনাজপুর থেকে ফরিদপুরে নিয়ে আসেন। কিন্তু ১৫/০৭/২০২৩ ইং তারিখে পুনরায় আশা আক্তার একটি বাটন মোবাইল যার মূল্য ১২০০ টাকা ও নগদ ৫০০০ টাকা মোট ৬২০০ টাকা নিয়ে ভোর ৫ টা ৩০ মিনিটে ঘরের সিটকিনি বাইরে থেকে বন্ধ করে পালিয়ে যায়।
গত ২১/০৮/২০২৩ ইংরেজি তারিখে মোছাঃ আশা আক্তার ইচ্ছাকৃতভাবে তার স্বামীর বাসায় আসেন।
আবার ০৩/১১/২০২৩ ইংরেজি তারিখে আনুমানিক ভোর ৫ টার দিকে অভিনব কায়দায় মেনগেটের সিটকিনি বন্ধ করে তিনটি মোবাইল সেট Samsung Galaxy A12 যার মূল্য ১৭ হাজার টাকা, Infinix Hot 20 যার মূল্য ১৪ হাজার ৪শ’ টাকা, Realme Note 10 pro যার মূল্য ২৬ হাজার ৫ শত টাকা মোট ৫৭ হাজার ৫ শত টাকা, তিনটি মোবাইল সেটের রশিদ সহ ৩০ হাজার ৬ শত টাকা নিয়ে পালিয়ে যায় আশা আক্তার।
গত ১৫/১২/২০২৩ ইংরেজি তারিখে আশা আক্তার কে আঃ মজিদ খান দিনাজপুর জেল কারাগার ভিতর থেকে নিজ ভাড়াটিয়া বাসায় নিয়ে আসে।
গত ৩১/০১/২০২৪ ইংরেজি তারিখে আনুমানিক ১১টার সময় মিশন রোড কুঠিবাড়ি বিহারী কলোনি থেকে দুই শিশু কন্যা জান্নাতি ও মিমকে নিয়ে আবারো পালিয়ে যায়। দিনাজপুর কোর্টের মামলা তুলে না নিলে দুই শিশু কন্যাকে ফেরত দেওয়া যাবে না বলে হুমকি দেয়।
কোন উপায় না পেয়ে দিনাজপুর কোতোয়ালি থানায় আঃ মজিদ খান একটি সাধারণ নিখোঁজ ডায়েরি নথিভুক্ত করেন। যার ডাইরি নং ২১৯৫ তারিখ ৩১/০১/২০২৪ অভিযুক্তরা দীর্ঘদিন যাবত অনেকের সাথে প্রতারণা করেছে।
বোচাগঞ্জ থানার মামলা নং ৪-১০/১২/২০২৩ দিনাজপুর কোড নং ১২৯/২৩ , বোচাগঞ্জ সাধারণ ডায়েরি নং ৩৩১-০৭/০২/২০২৪ দিনাজপুর কোতোয়ালি থানা ডাইরি নং ২১৯৫-৩১/০১/২০২৪, সিআর নং ১৮৪/২৪, নির্বাহী কোর্ট মামলা নং ৯২ পি/২৪ বর্তমান দিনাজপুর পিবিআই তে তদন্তধীন রয়েছে।
বৃহস্পতিবার বোচাগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত অফিসার ইনচার্জ হাসান জাহিদ সরকারের নির্দেশক্রমে ডিউটি অফিসার মো. জহুরুল ইসলাম অভিযোগটি গ্রহণ করেন ও সেকেন্ড অফিসার মো. সুজন দায়িত্ব অর্পণ করেন তদন্ত কর্মকর্তা এসআই প্রদীপের নিকট। তিনি তদন্ত করে সমাধান খুঁজে বের করবেন বলে আশ্বাস দেন।