শাহদাৎ হোসেন লাল, স্টাফ রিপোর্টার: কুড়িগ্রামের রাজারহাট উপজেলার চাকিরপশার ইউনিয়নের হযরত উম্মে হাবিবা (রা:) বালিকা নূরানী ও হাফিজিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক মো. আব্দুর রহিম ওরফে মামুনের বিরুদ্ধে এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ উঠেছে।
মামুন ওই মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হাবিবুর রহমানে শ্যালক বলে জানা যায়। এ ঘটনায় মাদ্রাসার অন্যান্য শিক্ষার্থী-অভিভাবক ও এলাকাবাসীর মধ্যে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছে। এলাকা জুড়ে বইছে সমালোচনার ঝড় ও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়েছে।
শনিবার রাজারহাট থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন ওই ছাত্রীর মা।
অভিযোগে বলা হয়েছে, গত ৩ সেপ্টেম্বর রাজারহাট সরকারি মীর ইসমাইল হোসেন ডিগ্রী কলেজ মাঠের ওয়াজ মাহফিল চলাকালীন সময় রাত ৮.৩০ মিনিটে আব্দুর রহিম ওরফে মামুন ওই ছাত্রীকে তার রুমে মোবাইলের চার্জার নিয়ে আসতে বলে। পরে সে চার্জার নিয়ে আসলে ভিকটিমকে একা পেয়ে পিছন থেকে জাপটে ধরে এবং শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর জায়গায় স্পর্শ করে ও যৌন নিপীড়নের চেষ্টা করেন।
এমতবস্থায় ওই ছাত্রী চিৎকার ও কাঁন্নাকাটি করলে তাকে ছেড়ে দেয় মামুন। ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে এ বিষয়ে জানাতে নিষেধ করে। শ্লীলতাহানির শিকার ওই ছাত্রীর বাবা-মা জীবিকার তাগিদে ঢাকায় থাকার কারণে সে কাউকে জানাতে পারেনি। পরে ঘটনার পর মাদ্রাসা ছুটি হলে বাড়িতে এসে গত ১৫ অক্টোবর উক্ত বিষয়টি মুঠোফোনে তার মাকে জানায়।
মেয়ের শ্লীলতাহানির ঘটনা শুনে তার মা ঢাকা থেকে বাড়িতে এসে বাদি হয়ে সুবিচারের প্রত্যাশায় রাজারহাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।
ভুক্তভোগীর দাবি, তারা মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক হাবিবুর রহমান ও তার স্ত্রী হাফেজা শিক্ষিকা মোছা. মাহমুদা বেগম (৪০) এর কাছে অভিযোগ দায়ের করলে তারা বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে দায়সারাভাবে সমাধানের চেষ্টা করে। শ্লীলতাহানির শিকার ভিকটিম ১২ পাড়া কোরআনের হাফেজা।
তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি ঘটনার রাতে দায়িত্ব প্রাপ্ত হাফেজাকে এ বিষয়ে জানালে তিনি কাউকে জানাতে নিষেধ করেন। এর আগে এমন ঘটনা আরও বেশ কয়েকবার ঘটিয়েছে মামুন।
এ বিষয়ে জানতে গিয়ে দেখা গেল মাদ্রাসার প্রধান গেটে তালা ঝুলানো। সাইনবোর্ডে উল্লেখিত নম্বরে ফোন দিলে কথা হয় প্রধান পরিচালক আব্দুর রহমানের সাথে।
তিনি বলেন, আমি আমার মা ও পরিবারের অন্য সদস্যরা মিলে ঘটনার আগের দিন থেকে রংপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য অবস্থান করছি।
শিক্ষার্থী শ্লীলতাহানির ঘটনা সম্পর্কে বললেন, পূর্ব শত্রুতার জের ধরে একটি পক্ষ আমাদেরকে হেনস্তা ও চরিতার্থ করার স্বার্থে মিথ্যে মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
আব্দুর রহমান আরও বলেন, তারা আমাদের নিকট বিভিন্ন সময় টাকা দাবি করলে টাকা না দেওয়ায় আমাদের উপর আরও ক্ষিপ্ত হয়।
রাজারহাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) রেজাউল করিম রেজা বলেন, শ্লীলতাহানির ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে একটি মামলা রুজু হয়েছে। পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ হতে আসামি গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।