রবিবার, ৭ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২২শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকায় ছাত্রকে হাত-পা বেঁধে মারধর

পাবনা প্রতিনিধি : পাবনার সাঁথিয়ায় তিন দিন মাদ্রাসায় অনুপস্থিত থাকায় আসাদুল (৮) নামের এক ছাত্রকে হাত-পা বেঁধে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছেন একজন শিক্ষক।

মারধরে আহত ওই শিশুটি বর্তমানে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন। শিশুটির মায়ের দাবি, জন্ডিসে আক্রান্ত হওয়ায় তাকে মাদ্রাসায় যেতে দেয়নি পরিবার।

৬ সেপ্টেম্বর সাঁথিয়া উপজেলার গৌরীগ্রাম ইউনিয়নের হাড়িয়াকাহন বাইতুল উলুম নুরানী হাফিজিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।

অভিযুক্ত ওই শিক্ষকের নাম মাওলানা ইকবাল হোসাইন। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক। এ ঘটনায় থানায় মামলা না করে স্থানীয় বিচারের আশ্বাস দিয়েছেন মাদ্রাসার পরিচালনা কমিটি।

পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ওই মাদ্রাসার ছাত্র আসাদুলের জন্ডিস হওয়ার কারণে তিন দিন মাদ্রাসায় অনুপস্থিত ছিল। গত রোববার রাত ১১টায় তার দুই সহপাঠী সজিব ও সিয়ামকে দিয়ে বাড়ি থেকে ডেকে পাঠায় শিক্ষক ইকবাল।

পরে মাদ্রাসায় এসে আসাদুল অসুস্থের কথা জানালে ওই শিক্ষক রশি দিয়ে হাত-পা বেঁধে, মাথা টেবিলের নীচে দিয়ে কোমড়ের নিচে বেত এবং স্টিলের স্কেল দিয়ে বেধড়ক মারধর ও জখম করেন। এক পর্যায়ে আসাদুল নিস্তেজ হয়ে যায়। এ সময় তাকে হাত পা বেঁধে কাঁথা দিয়ে ঢেকে রাখা হয়।

পরে আসাদুলের মা খবর পেয়ে মাদ্রাসায় গিয়ে ছেলেকে খোঁজাখুঁজি করেন। এ সময় ওই শিক্ষক জানান আসাদুল বাড়ি চলে গেছে। পরে খোঁজাখুঁজি করে মাদ্রাসার ভেতরে কাঁথার নীচে কাতরানো শুনে আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে রাত ১টায় সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভর্তি করা হয় আসাদুলকে।

আসাদুলের মা শোভা খাতুন জানান, ‘আমার ছেলের জন্ডিস ধরা পড়ায় তাকে আমরা মাদ্রাসায় যেতে দেয়নি। আমি যদি ওই সময় দ্রুত না যাই তাহলে হয়তো আমার ছেলে মারা যেত। আমার ছেলেকে অমানবিক নির্যাতন করছে।’

আসাদুলের বাবা আনোয়ার হোসেন জানান, ‘মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ থানায় অভিযোগ দিতে নিষেধ করেছে।’

ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত শিক্ষক মাওলানা ইকবাল হোসেন পলাতক এবং মোবাইলফোন বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আশরাফ আলী ঘটনার সত্যতা শিকার করে বলেন, মাদ্রাসার পক্ষ থেকে ওই ছাত্রের যাবতীয় চিকিৎসার ব্যয় বহন করা হবে।

সাঁথিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক চিকিৎসক(আরএমও) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, শিশুটিকে যেদিন নিয়ে আসে সেদিন তার অবস্থা খুবই নাজুক ছিল।

সে প্রচুর ভয় পেয়েছে। পরে যেনো জটিল কোনো সমস্যা না হয় সেজন্য তাকে নিবির পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তবে মারধরের জখম শুকাতে সময় লাগবে।

সাঁথিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা(ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন,শিক্ষার্থীকে মারধরের খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। পরিবারের পক্ষ থেকে কোন অভিযোগ পাওয়া যায়নি,পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Share on facebook
Facebook
Share on twitter
Twitter
Share on linkedin
LinkedIn
Share on whatsapp
WhatsApp
Share on tumblr
Tumblr
Share on telegram
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ