মঙ্গলবার, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

এর সর্বশেষ সংবাদ

মাভাবিপ্রবিতে পর্দা কর্ণার চালু

সমাপ্তী খান, ‎মাভাবিপ্রবি: মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (মাভাবিপ্রবি) নারী শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় দীর্ঘদিন ধরে একটি পৃথক, নিরাপদ ও পর্দাবেষ্টিত কর্ণার স্থাপনের দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারই প্রেক্ষিতে পূর্ণরুপে কেন্দ্রীয় ক্যাফেটেরিয়ায় স্থাপন করা হয়েছে আল-আসলামিয়া পর্দা কর্ণার।

প্রথম পর্যায়ে পর্দা কর্ণারের অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন নারী শিক্ষার্থীরা। পর্দা কর্ণারের নামে আমাদের সাথে প্রহসন করেছে প্রশাসন, আমরা চেয়েছি নিরাপদ আশ্রয় তারা দিয়েছে বাঁশের বেড়া, এইরকম নানা অভিযোগ তুলেন শিক্ষার্থীরা। পরবর্তীতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কাচেঁর গ্লাসের তৈরী বেষ্ঠনীর মাধ্যমে পরিপূর্ণরুপে স্থাপন করেছেন এই আল-আসলামিয়া পর্দা কর্ণার।

গণিত বিভাগের ২০-২১ সেশনের শিক্ষার্থী খাদিজা আরেফিন মীম বলেন, আলহামদুলিল্লাহ, এটি ছিল আমাদের সবার দীর্ঘ প্রতীক্ষিত একটি চাহিদা। আল্লাহর কাছে অফুরন্ত শুকরিয়া, তিনি অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে এত সুন্দর ও আকাঙ্ক্ষিত ‘পর্দা কর্ণার’ বাস্তবায়নের তৌফিক দিয়েছেন। আরেকবার প্রমাণিত হলো—আল্লাহর হুকুম পালনের উদ্দেশ্যে যে কাজগুলো করা হয়, আল্লাহ নিজ দায়িত্ব নিয়ে তা সহজ করে দেন এবং বাস্তবায়নের মাধ্যমে বান্দার মনে প্রশান্তি দান করেন। হয়তো সেই কারণেই এই দাবি এত দ্রুত ফলপ্রসূ হয়েছে। ভিসি স্যার ও প্রশাসনের প্রতি অন্তরের গভীর থেকে শুকরিয়া—এত সুন্দরভাবে বিষয়টি বাস্তবায়ন করার জন্য।

একই বিভাগের শিক্ষার্থী আমিনা সুলতানা মুনা বলেন, পর্দা কেবলই একটা শব্দ নয়, এটা স্পষ্টতই রবের নির্দেশনা। এই মহাদেশের সুদীর্ঘ ইতিহাস মুসলিমদের রবের বাণী আহকাম মেনে চলা এবং দাওয়াত পৌঁছে দেয়ার দাবি সুপ্রতিষ্ঠিত। ইসলাম বরাবরই উৎসাহিত করে জ্ঞানার্জনের জন্য। বিশ্ববিদ্যালয়েও মুসলিম মেয়ে শিক্ষার্থীরা ইসলামকে মনে প্রাণে ধারণ করেন এবং পর্দার বিধান সর্বোচ্চ দিয়ে পালনের চেষ্টা করেন।
তারই প্রেক্ষাপটে একটা পর্দা কর্ণার ছিল দীর্ঘদিনের প্রতীক্ষিত এবং আকাঙ্ক্ষিত স্থান যেখানে স্বস্তিকর অবস্থায় বসে খাদ্য গ্রহণের মতো বেসিক হিউম্যান রাইটস বাস্তবায়িত হয়। স্মারকলিপি দেয়া থেকে শুরু করে দীর্ঘ এই প্রসেডার্সে আমরা পেয়েছি অকুণ্ঠ সমর্থন আমাদের মাভাবিপ্রবি ভিসি স্যার, প্রশাসন থেকে শুরু করে আমাদের শিক্ষকদের, ক্যাম্পাসের সকল দল মত,সকল স্টুডেন্ট সাবেক-বর্তমান, ক্যাম্পাস সাংবাদিকবৃন্দ সকলের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

নাম প্রস্তাবনার প্রশ্নে আমিনা সুলতানা মুনা আরও বলেন, রুফাইদা আল আসলামিয়া
তিনি ছিলেন প্রথম নারী মুসলিম সেবিকা হিসেবে স্বীকৃত একজন ইসলামী চিকিৎসক। তিনি মূলত তাঁর চিকিৎসক বাবা সাদ আল-আসলামির কাছ থেকে চিকিৎসাবিদ্যা সম্পর্কে শিক্ষা গ্রহণ করেন। পরবর্তী সময়ে তিনি চিকিৎসাবিদ্যায় এতই ব্যুৎপত্তি অর্জন করেন যে রাসুল (সা.) যুদ্ধে আহত সব সৈনিককে তাঁর কাছে চিকিৎসার জন্য পাঠাতেন। তিনি আহতদের সেবায় মসজিদে একটি তাঁবু করেছিলেন।

তাঁর দায়িত্বাধীন সেই অস্থায়ী হাসপাতালকে বলা হতো খিমাতু রুফাইদা। আজকের পৃথিবীর ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল ও চিকিৎসার ধারণাটি এখান থেকেই মানুষ নিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশকিছু স্থাপনা বা স্থানের ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ লেজেন্ডারি মানুষের নাম যেহেতু আছে। তো আমরা নিজেরা ভেবে এমন একটি নাম প্রস্তাবনায় রেখেছি যাতে এই নারী সাহাবীর সাহসিকতা, দৃষ্টান্ত ইতিবাচক ভাবে আমরা লালন করতে পারি।

এই বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আশরাফ আলী বলেন, আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছি পর্দা কর্ণারের কাজটি সম্পূর্ণ করার জন্য। আশা করি, শিক্ষার্থীরা এবার পূর্ণাঙ্গ পর্দা বজায় রেখে খাবার খেতে পারবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ