
রেদোয়ান হোসেন জনি, মিরসরাই : চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে ৩ সন্তানের জননীকে অপহরণের এক মাস পেরিয়ে গেলেও সন্ধান না মেলায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে পরিবার। ওই গৃহবধূর নাম আকলিমা আক্তার।
তিনি মিরসরাই উপজেলার ৭ নং কাটাছরা ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের বামনসুন্দর গ্রামের আবুল কালামের পুত্র মোহাম্মদ ফারুকের স্ত্রী। গত ১১ জুন রাতে অপহরণের ঘটনা ঘটার পর ৩০ জুন চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এ অপহৃতের স্বামী মোহাম্মদ ফারুক বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। অপহরণের ১ মাস পেরিয়ে গেলেও আকলিমার সন্ধান না মেলায় দেড় বছরের একটি শিশুসহ ৩ সন্তান নিয়ে চরম দুশ্চিন্তার মধ্যদিয়ে দিনযাপন করছেন স্বামী ফারুক।
চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে দায়েরকৃত মামলা সূত্রে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২ জানুয়ারি মিরসরাই উপজেলার রহমতাবাদ গ্রামের নুরুল আবছারের মেয়ে আকলিমা আক্তারের সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয় একই উপজেলার বামনসুন্দর গ্রামের আবুল কালামের পুত্র মোহাম্মদ ফারুক। বিয়ের পর আকলিমার গর্ভে জন্ম নেয় বর্তমানে দেড় বছর বয়সী মোতালেব, ৪ বছর বয়সী ওমর ও ৯ বছর বয়সী আব্দুল ইয়াছিন আরাফাত। তারা একা বাড়িতে বসবাস করতেন। গত ১১ জুন রাত প্রায় ১২ টার সময় ফারুকের বসতবাড়ীর টিনের তৈরি গেইট ভেঙে ইছাখালী ইউনিয়নের লুদ্দাখালী গ্রামের আবু সুফিয়ানের ছেলে ইমাম হোসেন হৃদয়ের নেতৃত্বে আরো কয়েকজন অজ্ঞাত আসামিরা দেশীয় অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত হয়ে বাড়িতে প্রবেশ করেন। পরে আকলিমার মুখে গামছা দিয়ে বেঁধে তুলে নিয়ে যায়।
অপহরণকারীদের ফারুক বাঁধা দিতে গেলে তাকে রাম দা দিয়ে কোপানোর চেষ্টা করে। এ সময় ফারুকের চিৎকারে স্থানীয়রা জড়ো হওয়ার পূর্বেই আকলিমাকে মাইক্রোবাসযোগে অপহরণ করে নিয়ে যায় অপহরনকারীরা। গত ১১ জুন রাতে অপহরণের ঘটনা ঘটারপর ৩০ জুন চট্টগ্রাম নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এ অপহৃতের স্বামী মোহাম্মদ ফারুক বাদী হয়ে মামলা দায়ের (নং-৮৯) করেন।
প্রত্যক্ষদর্শী শেখ ফরিদ জানান, ঘটনার দিন রাত প্রায় ১২ টার দিকে ফারুকের চিৎকারে স্থানীয়রা এগিয়ে আসার আগেই ফারুকের স্ত্রী আকলিমাকে একটি মাইক্রোবাসযোগে তুলে নিয়ে যায় অপহরণকারীরা। বর্তমানে ফারুক করুণভাবে দিনাতিপাত করছে।
এ বিষয়ে মোহাম্মদ ফারুক বলেন, আমার স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে দেড় বছরের দুগ্ধপানকারী ছেলে মোতালেবসহ ৩ সন্তান নিয়ে খুব কষ্টে দিনযাপন করছি। আমি প্রশাসনের কাছে দাবি জানাবো যেন দ্রুত আমার স্ত্রীকে উদ্ধার করে দেয়। আমি অপহরণকারীদের কঠিন বিচার দাবি করছি।
ফারুকের আইনজীবী বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের (হাইকোর্ট বিভাগ) এবং চট্টগ্রাম জর্জ কোর্টের এডভোকেট মো. নাজমুল হোসেন রাসেল জানান, অপহৃত গৃহবধূ আকলিমার স্বামী মোহাম্মদ ফারুক গত ৩০ জুন চট্টগ্রাম বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এ বাদী হয়ে ইমাম হোসেন প্রকাশ হৃদয়সহ অজ্ঞাতনামা কয়েকজনকে আসামি করে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০০০ (সংশোধিত-২০০৬) এর ৭/৩০ ধারায় মামলা (নং-৮৯) দায়ের করেছেন।