রেদোয়ান হোসেন জনি, মিরসরাই(চট্টগ্রাম): মিরসরাই উপজেলার বারইয়ারহাট ডিগ্রি কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির মানবিক বিভাগের ছাত্র মাইনুল হাসান সম্রাটকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর অভিযোগে ছাত্র সমাজের উদ্যোগে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়েছে।
বুধবার সকালে বারইয়ারহাট ডিগ্রি কলেজ এলাকায় বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করা হয়। এসময় সম্রাটের সহপাঠীরা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার করে তার দ্রুত মুক্তি দাবি করেন।
মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ২৮ জুলাই ধুম ইউনিয়নের দক্ষিন ধুম চর মিয়া হাজী কেরানী বাড়ির দেলোয়ার হোসেনের স্ত্রী জান্নাতুল নাঈমা বাদী হয়ে জোরারগঞ্জ থানায় জোরপূর্বক গণধর্ষণ করে আহত করার অপরাধে মামলা দায়ের করেন।
মামলায় ৪ জনকে আসামি করা হয়, এতে ২ নং আসামি করা হয় ধুম ইউনিয়নের দক্ষিণ ধুম চৌকিদার বাড়ির নুরুল আলমের পুত্র মাইনুল হাসান সম্রাটকে।
জানা যায়, ভিকটিম নার্গিস আক্তার মানসিক প্রতিবন্ধী। তার মাঝে মাঝে মানসিক সমস্যা দেখা দেয় এবং অন্যসময় স্বাভাবিক থাকেন। ভিকটিম যখন স্বাভাবিক আচরণ করেন তখন মাইনুল হাসান সম্রাটের পরিবারের পক্ষ থেকে ভিকটিম থেকে প্রকৃত ঘটনা জানার জন্য কথোপকথনের ভিডিও ধারণ করা হয়। সেখানে দেখা যায় ভিকটিম নার্গিস সম্রাটকে নির্দোষ দাবি করেন এবং তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য প্রয়োজনে কোর্টে গিয়েও তিনি বলবেন।
মাইনুল হাসান সম্রাটের একাধিক সহপাঠীরা জানান, সম্রাট নিয়মিত কলেজে আসতো। কখনো কারো সাথে খারাপ আচরণ করতো না, বন্ধুত্বসুলভ আচরণ করতো। আমাদের নির্দোষ সহপাঠী সম্রাটের বিরুদ্ধে দায়ের করা মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং তার দ্রুত মুক্তি চাই।
মাইনুল হাসান সম্রাটের বাবা নুরুল আলম বলেন, আমার ছেলেকে যখন মিথ্যা মামলায় গ্রেফতার করা হয় তখন সারাদেশ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল ছিল। আমার ছেলেও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে স্বোচ্ছার ছিল। এদিকে আমি অনেক বছর যাবত বিএনপির রাজনীতির সাথে জড়িত। আমাদের ইউনিয়নের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর ভূঁইয়া আমাকে বিএনপি আর ক্ষমতায় আসবে না বলে বেশ কয়েকবার আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার জন্য চাপ দিলেও আমি যোগ না দেওয়ায় আমার প্রতি ক্ষুদ্ধ ছিলেন। আমার ছেলে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সোচ্চার থাকা এবং আমার বিএনপির রাজনীতিতে জড়িত থাকাকে পুঁজি করে আমার ছেলেকে চেয়ারম্যানের পরামর্শেই এই মিথ্যে মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মাইনুল হাসান সম্রাটের মা নার্গিস আক্তার বলেন, আমার ছেলে পড়াশোনা ছাড়া কখনো কোন বাজে আড্ডায় থাকতো না। সে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনেও সোচ্চার ছিল। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সোচ্চার থাকার কারণেই তাকে মিথ্যা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা দেওয়া হয়। আমি আমার সন্তানকে দ্রুত ফিরে পেতে চাই।
জোরারগঞ্জ থানার তৎকালীন ওসি আব্দুল্লাহ আল হারুন সিআইডিতে বদলি হওয়ায় এ বিষয়ে তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।