
মো. সাখাওয়াত হোসেন, মুরাদনগর: কৃষ্ণচুড়ার মোহনীয় সৌন্দর্য্য নিয়ে প্রকৃতিতে হাজির হয়েছে গ্রীষ্মকাল। কৃষ্ণচুড়ার এই চোখ ধাঁধানো সৌন্দর্য্য গ্রীষ্মকে দিয়েছে অনন্য মাত্রা।
তাইতো গ্রীষ্মের কাঠফাটা রোদ্দুরকে সহনীয় করতে নতুন সাজে সেজে ওঠেছে প্রকৃতি। এ মৌসুমে কৃষ্ণচুড়ার লাল রঙের যে উম্মাদনা, তা এতই আবেদনময়ী যে চোখ ফেরানো যায় না।
কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার রাস্তার পাশে, স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসার আঙিনায়, কবরস্থানের পাশে ও বাড়ির আঙ্গিনায় দেখা যায় কৃষ্ণচুড়ার আগুন লাগা রূপের আভা। গ্রীষ্মের চোখ জুড়ানো এসব বর্ণিল ফুল বাঙ্গালী মনকে নাড়া দেয় গভীরভাবে।
বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ফুল প্রেমী ড. মনিরুজ্জামান বলেন, ফুল ভালোবাসে না পৃথিবীতে এমন লোক খুব কমই আছেন। যারা ফুল ভালোবাসেন তাদের কাছে গ্রীষ্মের এই আগুন রাঙা কৃষ্ণচূড়া বেশ পছন্দের ফুল। বাংলা কাব্য, সাহিত্য ও সংগীতে এসেছে এই ফুলের কথা।
শুধু কবিুসাহিত্যিক নয়, মুরাদনগরে পথচারী থেকে শুরু করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষের চোখ জুড়িয়ে দেয় কৃষ্ণচূড়া।
নবম শ্রেণীর শিক্ষার্থীর সিনথিয়া জানান, তাদের স্কুলের পাশে কয়েকটি কৃষ্ণচূড়া গাছ রয়েছে। কৃষ্ণচূড়া ফোটার এই সময়টা তাঁর অন্য রকম ভালো লাগে।
কৃষ্ণচূড়া প্রেমী খলিলুর রহমান যিনি এক যুগেরও বেশি সময় ধরে স্বেচ্ছাশ্রমে উপজেলার স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও রাস্তাঘাটে শতাধিক কৃষ্ণচূড়া গাছ লাগিয়েছেন তিনি বলেন, কৃষ্ণচূড়া, রাধাচূড়া, সোনালূ এগুলো আমার খুব পছন্দের ফুল।
আমি ১০-১২ বছর ধরে এই গাছগুলো সংগ্রহ করে বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও রাস্তাঘাটে লাগিয়েছি। এখনো গাছের চারা সংগ্রহ করে লাগিয়ে যাচ্ছি। অনেকগুলো গাছ অনেক বড় হয়েছে। আবার অনেক বড় বড় গাছ ঝড়ে ভেঙ্গে গেছে। সেখানে আবারো গাছ লাগিয়েছি। সেগুলো ধীরে ধীরে বড় হচ্ছে।
কৃষ্ণচূড়া পাগল এই মানুষটি আরো বলেন, অন্যান্য ফুল গাছে যখন নতুন পাতা আসে, কিন্তু ফুল আসে না; ঠিক তখনই কৃষ্ণচূড়ার সব পাতা ঝরে গিয়ে ফুলের কলি দেখা দেয়। আর গ্রীষ্মের শুরুর সময়টাতে দেখা যায় লালের আভাস। যখন নিজের লাগানো গাছগুলোতে পরিপূর্ণভাবে ফুল ফোটে তখন সেগুলো দেখে নিজের মনের মধ্যে অন্যরকম প্রশান্তি চলে আসে। আসলে কৃষ্ণচূড়ার তুলনা শুধু কৃষ্ণচূড়াই। রঙে, রূপে, উজ্জ্বলতায় ও কমনীয়তায় কোনো কিছুই যেন কৃষ্ণচূড়ার সমকক্ষ নয়।