বিশেষ প্রতিনিধি, সিরাজগঞ্জ : ‘মেধাবী রাব্বি সরকার এখন ঝালমুড়ি বিক্রেতা’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ হয় পত্রিকায়। প্রতিবেদনে সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার জয়ানপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ৯ম শ্রেণিতে পড়ুয়া মেধাবী শিক্ষার্থী রাব্বি সরকারের পিতা মারা যাওয়ার পর অসুস্থ মা আর ১৯ মাস বয়সী প্রতিবন্ধী ছোট বোনকে নিয়ে তার হার না মানা এক জীবন গল্পের কথা প্রকাশ পায়।
সেখানে মেধাবী শিক্ষার্থী তার মালামাল শূন্য দোকানে কিছু পণ্য সামগ্রী সহযোগিতা চেয়ে প্রতিবেদকের মাধ্যমে দেশবাসীর কাছে সহযোগিতা কামনা করেন। প্রতিবেদনটি প্রকাশ হওয়ার পরেই তা স্যোশাল মিডিয়াসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক প্রচার ঘটে। বিষয়টি নজরে আসে উপজেলার স্বেচ্ছাসেবী ও দৈনিক সকালের সময় পত্রিকার রায়গঞ্জ উপজেলা পাঠক ফোরামের সদস্য কাজল দাসের।
বিষয়টি নিয়ে তিনি ফেসবুকে পোস্ট করলে সিরাজগঞ্জ কোতোয়ালি থেকে “সুখ পাখি” মানবিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক শেখ রজব আলী ‘ আলোর জন্য যাকাত তহবিল’ থেকে দোকানে পণ্য সামগ্রী ক্রয় করার জন্য দশ হাজার টাকা ব্যবস্থা করে দেন। তার দেওয়া এই অর্থায়নে বুধবার বিকালেই মেধাবী শিক্ষার্থী রাব্বি সরকারের দোকানের মালামাল নিয়ে হাজির হয় স্বেচ্ছাসেবী কাজল দাস ও তার সহযোগীরা। এলাকাবাসীদের উপস্থিতে মেধাবী শিক্ষার্থী রাব্বি সরকারের দোকানে মালামাল দিয়ে সাজিয়ে দেন তারা।
মালামাল তুলে দেওয়ার বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় বাসিন্দা ও গণমাধ্যমকর্মী ড. গোলাম মোস্তফা বলেন, রাব্বি সরকার একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। তার বাবা মারা যাওয়ার পর থেকে পড়াশোনার পাশাপাশি সংসারের হাল ধরতে বিদ্যালয়ের পাশেই ঝাল মুড়ি বিক্রি করে। এ নিয়ে দৈনিক সকালের সময় পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন ও ছাপা হয়েছিলো। আজকে দেখলাম স্বেচ্ছাসেবীরা মালামাল শূন্য দোকানটিতে মালামাল দিয়ে পূর্ণ করে দিয়েছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি মহতি উদ্যোগ বলে মনে করি।
স্বেচ্ছাসেবী কাজল দাস এ প্রতিবেদককে ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, আমরা সবসময় অসহায় মানুষের পাশে থেকে কাজ করার চেষ্টা করি। মেধাবী রাব্বি সরকার কে নিয়ে আমরা পত্রিকায় একটি প্রতিবেদন দেখি। তারপর “সুখ পাখি” মানবিক সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক শেখ রজব আলী ‘আলোর জন্য যাকাত তহবিল’ থেকে দোকানে পণ্য সামগ্রী ক্রয় করার জন্য ১০ হাজার টাকা ব্যবস্থা করে দেন। এ অর্থায়নে আমরা রাব্বি সরকারের এই মালামাল শূন্য দোকানে মালামাল তুলে দিয়েছি।
তিনি আরো বলেন, তার এই দুর্দশার কথা সকালের সময় পত্রিকায় প্রকাশ হয়েছে বলেই আজ আমরা এই মেধাবী শিক্ষার্থীর পাশে দাঁঁড়াতে পেরেছি।
এ বিষয়ে উপজেলার ধানগড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মীর ওবায়দুল ইসলাম মাসুম বলেন, রাব্বি একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। সে তার অল্প বয়সেই বাবাকে হারিয়ে এক জীবন যুদ্ধে নেমে পড়েছে।
দৈনিক সকালের সময় পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশের মাধ্যমে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে দোকানের মালামাল তুলে দিয়ে সহযোগিতা করেছে। নিঃসন্দেহে এটি একটি ভালো কাজ।