জাহিদ মাহমুদ, মেহেরপুর প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনীর হুদাপাড়া গ্রামের পৃথক স্থান থেকে স্বামী, স্ত্রীর মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ।
বুধবার (২৬ অক্টোবর) সকালে নিজ ঘর থেকে সাবিনা খাতুন (৩০) নামের এক গৃহবধুর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পরে দুপুর ১টার দিকে স্বামী বিদ্যুত হোসেনের ঝুলন্ত মরদেহ গ্রামের একটি বাঁশবাগান থেকে উদ্ধার করা হয়।
সাবিনা খাতুন কুমারীডাঙ্গা গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের মেয়ে । বিদ্যুত হোসেন হুদাপাড়া গ্রামের দিনমজুর ওলি আহম্মেদের ছেলে।
জানা যায়, ঘরের মেঝেতে ভারি পাথর ও বিছানায় রক্তের ছোপ ছোপ দাগ দেখে পুলিশের ধারণা সাবিনাকে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করে হত্যা করার পর পরই স্বামী বিদ্যুত হোসেন গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
স্থানীয় ইউপি সদস্য মনিরুল ইসলাম জানান, মাস খানেক আগে গাংনীর কুমারীডাঙ্গা গ্রামের মৃত আব্দুস সাত্তারের মেয়ে সাবিনা খাতুনের সাথে হুদাপাড়া গ্রামের দিনমজুর বিদ্যুত হোসেনের বিয়ে হয়। এটি সাবিনার দ্বিতীয় আর বিদ্যুতের পঞ্চম বিয়ে। বিয়ের পর থেকে সাবিনা বিদ্যুতের মাঝে চলছিল দাম্পত্য কলহ। সপ্তাহ খানেক আগে বিদ্যুত তার স্ত্রী সাবিনাকে তার পিতার বাড়িতে রেখে আসে।
মঙ্গলবার বিকেলে সাবিনা ও তার ভাই স্বামির বাড়িতে চলে আসে। সন্ধ্যায় সাবিনা ও তার ভাইকে মারধর করে বিদ্যুত। রাতেই সাবিনার ভাই নিজ বাড়িতে চলে গেলেও সাবিনা থেকে যায় স্বামির বাড়ি। ভোরে বিদ্যুত ও তার পরিবারের লোকজন বাড়ি থেকে সটকে পড়ায় প্রতিবেশিদের সন্দেহ হয়। পরে লোকজন ওই বাড়িতে গিয়ে সাবিনার লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশে খবর দিলে মরদেহ উদ্ধার করে । পরে দুপুর ১টার দিকে হুদাপাড়া গ্রামের মাঠের একটি বাগানের আম গাছে ঝুলন্ত অবস্থায় বিদ্যুতের মরদেহ দেখে পুলিশে খবর দেয়া হয়েছে।
স্থানীয় হেমায়েতপুর ক্যাম্প পুলিশের এসআই মাসুদ জানান, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, সাবিনার নিথর দেহ খাটের উপর পড়ে আছে। রক্তাক্ত বিছানার পাশেই রয়েছে পাথরের একটি ভারী বস্তু। তাতেও রক্ত লেগে আছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ঘুমন্ত অবস্থায় ওই পাথর দিয়ে সাবিনার মাথায় আঘাত করে হত্যা করা হয়েছে। পরে বিদ্যুতকে খুজে পাওয়া যাচ্ছিলনা। স্থানীয়রা দুপুরে বিদ্যুতের ঝুলন্ত মরদেহ দেখতে পেয়ে আমারদের জানালে মরদেহ উদ্ধার করেছি।
গাংনী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক বলেন, গৃহবধু সাবিনার মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করার প্রক্রিয়া শেষ করতেই বিদ্যুতের মরদেহ দেখেছে বলে স্থানীয়রা আমাকে সংবাদ দিলে ঘটনা স্থলে গিয়ে বিদ্যুতের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। দুজনের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য মেহেরপুর মর্গে প্রেরণের প্রক্রিয়া চলছে।