যায়যায় কাল প্রতিবেদক : নতুন বাজেট ঘোষণার ঠিক আগের দিন মে মাসের রপ্তানি আয়ে ধসের তথ্য সামনে এল, যা গত বছরের একই মাসের তুলনায় ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ কম।
রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো-ইপিবি এ তথ্য প্রকাশ করেছে বুধবার, যেখানে বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে উত্থাপন হতে চলেছে ২০২৪-২০২৫ অর্থবছরের বাজেট।
ইপিবি বলছে, গত মে মাসে ৪০৭ কোটি ৯ লাখ ৩০ হাজার ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৩৩ দশমিক ৯০ কোটি ডলার। অর্থাৎ, লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২৩ দশমিক ৭৫ শতাংশ কম আয় হয়েছে এ মাসে।
রপ্তানি আয়ের এই অংক ২০২৩ সালের মে মাসের ৪৮৪ কোটি ৯৬ লাখ ডলার আয়ের তুলনায় ১৬ দশমিক ৬ শতাংশ কম।
আগের মাস এপ্রিলেও রপ্তানির হিসাবে পিছুটান দেখা গিয়েছিল। টানা ৩ মাস দুই অঙ্কের প্রবৃদ্ধি অর্জনের পর এপ্রিলে এসে আগের বছরের একই মাসের চেয়ে রপ্তানি আয় প্রায় ১ শতাংশ কমে যাওয়ার তথ্য আসে।
এপ্রিলে বিভিন্ন দেশে পণ্য রপ্তানি থেকে ৩৯১ কোটি ৬৯ লাখ ডলার এসেছিল, ২০২৩ সালের এপ্রিলে যা ছিল ৩৯৫ কোটি ৬০ লাখ ডলার।
বিদায়ী ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরে ৬ হাজার ২০০ কোটি টাকার পণ্য রপ্তানির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। প্রথম ১১ মাসে ৫ হাজার ৬৩১ কোটি ডলার রপ্তানি হওয়ার কথা থাকলেও হয়েছে ৫ হাজার ১৫৪ কোটি ২৭ লাখ ডলার। ফলে রপ্তানি আয় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৮ দশমিক ৪৭ শতাংশ পিছিয়ে আছে।
অবশ্য বিদায়ী অর্থবছরের মে পর্যন্ত মোট রপ্তানি আগের অর্থবছরের ১১ মাসের চেয়ে ২ দশমিক ১ শতাংশ এগিয়ে আছে।
বিদীয় অর্থবছরের ১১ মাসে রপ্তানি যতটুকু ইতিবাচক ধারায় আছে, তা কেবল পোশাক খাতের কারণেই রয়েছে বলে ইপিবির পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে।
এ সময়ে ৪ হাজার ৩৮৫ কোটি ডলারের তৈরি পোশাক বিদেশের বাজারে গেছে, যেখানে আগের অর্থবছরের একই সময়ে এ খাত থেকে এসেছিল ৪ হাজার ২৬৩ কোটি ডলার।
একক মাস হিসাবে গত বছর মে মাসে ৪০৫ কোটি ডলারের পোশাক পণ্য রপ্তানি হলেও সদ্য বিদায়ী মে মাসে রপ্তানি ১৭ দশমিক ১৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ৩৩৫ কোটি ডলার। ২০২৩ সালের মে মাসের পোশাক রপ্তানিতে ২৮ শতাংশ প্রবৃদ্ধি ছিল।
পোশাক রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএ এর একজন পরিচালক বলেন, এবার মের রপ্তানি তথ্য মোটেও সন্তোষজনক নয়। বিশ্বের প্রধান দুই পোশাক বাজার যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন পোশাক আমদানি কমিয়ে দিয়েছে। এটাই রপ্তানি কমে যাওয়ার প্রধান কারণ।
উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় বিশ্ববাজারে প্রতিযোগিতা সক্ষমতা কমে যাচ্ছে বলে মনে করছেন তৈরি পোশাক খাতের এ ব্যবসায়ী নেতা।
ইপিবি এর তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যাচ্ছে, বিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্য রপ্তানি ৯৬ কোটি ১০ লাখ ডলারে পৌঁছালেও পিছিয়ে থাকার চিত্র ১৪ দশমিক ১৭ শতাংশ।
তৈরি পোশাক বাদে আর কোনো খাতই বিদায়ী অর্থবছরের ১১ মাসে রপ্তানি আয় ১ বিলিয়ন ডলারের ঘর ছাড়াতে পারেনি।