নিজস্ব প্রতিবেদক: মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুরে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির সংঘর্ষে নিহত যুবদলকর্মী শহিদুল ইসলাম শাওনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) জেলার মীরকাদিম পৌরসভার মুরমায় দাদার কবরের পাশে তাকে সমাহিত করা হয়।
এসময় বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীসহ স্থানীয় নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে, ঢাকায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ও মুন্সীগঞ্জে মীরকাদিম এলাকায় শাওনের দুই দফা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়।
গত বুধবার বিকেলে মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুরে বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশের সময় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। ওই ঘটনায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন যুবদল কর্মী শাওন। বৃহস্পতিবার রাতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে তিনি মারা যান। শাওন হত্যার প্রতিবাদে শুক্রবার সারাদেশে গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। শনিবার বিকেল ৩টায় নয়াপল্টনে যুবদলের বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। এ হত্যার ঘটনায় পুলিশের বিরুদ্ধে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে বিএনপি।
শুক্রবার বাদ মাগরিব নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। সন্ধ্যা ৬টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গ থেকে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্সে করে শাওনের কফিন নয়াপল্টনে নেওয়া হয়। দলের পক্ষ থেকে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায় দলীয় পতাকা দিয়ে ঢাকা তার কফিনে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান।
জানাজার আগে সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, সরকারের পতন ঘটিয়ে শাওন হত্যার জবাব দিতে হবে। শাওনের রক্ত তাঁদের নতুন করে শপথ নেওয়াচ্ছে যে, যে কোনো মূল্যে এ সরকারের পতন ঘটাতে হবে।
তিনি বলেন, যে গণতন্ত্রের জন্য, মানুষের অধিকারের জন্য, ভোটাধিকারের জন্য শাওন প্রাণ দিয়েছেন, তা আদায় করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তবেই শাওনের প্রতি সত্যিকারের শ্রদ্ধা নিবেদন হবে।
যুবদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু বলেন, পুলিশের গুলিতে শাওন শহীদ হয়েছেন। তার রক্তের কসম- এই সরকারের পতন না ঘটিয়ে কেউ ঘরে ফিরব না।
জানাজা শেষে বিক্ষুদ্ধ নেতাকর্মীরা নয়াপল্টন এলাকায় মশাল মিছিল করে।
এর আগে, দিনভর মরদেহ হস্তান্তর নিয়ে জটিলতার সৃষ্টি হয়। শুরুতে বলা হয় বাদজুমা জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। কিন্তু মরদেহ হস্তান্তর না করায় জানাজার সময় ঘোষণা করা হয় বিকেল ৫টায়। এর আগে বিকেল সোয়া ৪টার দিকে শাওনের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন করেন ঢামেক ফরেনসিক বিভাগের প্রভাষক ডা. জান্নাতুন নাঈম।
বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শাওনের মরদেহ তার বাবার কাছে হস্তান্তর করে। এরপর শাওনের মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ে।
শাওন পেশায় ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাচালক ছিলেন। তিনি মুক্তারপুর ওয়ার্ড যুবদলের রাজনীতির সাথে জড়িত ছিলেন।