
কাজী আল আমিন, বিজয়নগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া): ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগর উপজেলার চান্দুরা ইউনিয়নের কাউছার মিয়ার বিরুদ্ধে যুবলীগের সাইনবোর্ড ব্যবহার করে চাঁদাবাজি, দখল বাণিজ্য, অত্যাচার, নির্যাতনসহ শতাধিক অভিযোগ রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিগত ১৫ বছর আগেও নুন আনতে পান্তা ফুরানোর অবস্থায় ছিল। বাবা একজন রাখাল, আজ সেই কাউছার বিলাসী জীবন-যাপন করছেন। দামি দামি গাড়ি ব্যবহার করছেন।
জানা যায, কাউছার মিয়ার জন্ম চান্দুরা ইউনিয়নের সাতগাওঁ গ্রামের কালু মিয়ার প্রথম ছেলে। অষ্টম শ্রেণিতে পড়া অবস্থায় বিদ্যালয় ছেড়ে সৌদি আরবে চলে যান। ৬ মাসের মধ্যেই অপকর্মের জড়িত হয়ে ফিরে আসেন। বিদেশ থেকে ফিরে এসে ২০০০ সালে এলাকার চেয়ারম্যান শামিউল হক চৌধুরীর মোবাইল ফোনের দোকানে কর্মচারীর কাজ নেন। যুবদল দল করা কাউছার পরে যুবলীগে যোগদান করে। এরপর থেকে শুরু করেন অপকর্ম।
জানা যায়, কাউছার রূপসী বাংলা স্পোর্টিং ক্লাব ও বঙ্গকন্যার সাইনবোর্ডের আড়ালে অপকর্মের মহোৎসব গড়ে তুলেছেন। সে এলাকার আমতলী বাজারে প্রতিটি দোকান থেকে চাঁদা আদায়সহ ও চাঁদার মাধ্যমে ফুটপাতের দোকান বরাদ্দ ও উঠানো তারই কাজ।
গ্রামের বিভিন্ন মানুষকে বিভিন্ন সমস্যায় জড়িয়ে থানা পুলিশের ভয়-ভীতি দেখিয়ে মোটা অংকের টাকা উভয় পক্ষ থেকে আত্মসাৎ করে আসছেন। বিভিন্ন মাদক ব্যবসায়ের সাথে জড়িত থেকে এলাকা ছোট ছোট ছেলেদেরকে তার পৃষ্ঠপোষকতায় মাদক সেবনে সহযোগিতা ও বিক্রির মহোৎসব গড়ে তুলেছেন।
কাউছার তার ভাই, ছেলে ও চাচাতো ভাইদেরকে নিয়ে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাজারে ঘোরাফেরা করেন।
১০ বছর আগে আমতলী বাজার গ্রামীণ ব্যাংক সংলগ্ন সাতগাঁও মেদ্যা বাড়ির মনির ও জাহাঙ্গীরের দখলে থাকা গোরস্থানের জায়গা সে প্রভাব খাটিয়ে নিজে দখল করে যুবলীগের অফিস বানায়। পর্যায়ক্রমে দোকান হিসেবে ভাড়া দিয়েছে। এমনও প্রমাণ রয়েছে বহিরাগত এলাকায় চাকরিজীবী অফিসারদেরকে আমতলী বাজারে আটকে হেনস্তা করেন। এলাকায় নিজ গ্রামের ক্লাবের প্রায় ১০০ শতাংশ জায়গা বছরের পর বছর দখল করে রেখেছেন। এলাকার নিরীহ জনগণকে রাতের আঁধারে পুলিশ দিয়ে আটকিয়ে মোটা অংকের টাকা আদায় করে ছাড়েন।
২০১৯ সালে কোভিডকালীন বাজারের প্রত্যেক দোকানিকে দোকান খোলা রাখার জন্য মোটা অংকের টাকা নিয়েছেন।
আলাউদপুর গ্রামের সংখ্যালঘু ঋূদুশীলের উপর হামলা করেন কাউছার। অতঃপর কিছুদিনের ব্যবধানে বিচার না পেয়ে ও অতিরিক্ত টেনশনে ঋূদুশীল পরলোক গমন করেন। উক্ত ঘটনার তৎকালীন ওসির উপর আক্রমণাত্মক আচরণসহ বাজারে মিছিলের মত ঘটনা ঘটিয়েছিলেন। অর্থ ও নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িত সেই কাউছার। তার কাছ বহু মানুষ লাখ লাখ টাকা পাবে।
আমতলী বাজারের বিভিন্ন দোকানিদের উপর হাত তোলার ঘটনাও ঘটিয়েছে। কোন উৎস ছাড়া এমন রাজকীয়ভাবে চলায় জনগণের প্রশ্ন টাকা কোথায় থেকে আসে?
তার বিরুদ্ধে গত ২৪ জুন রাতের আঁধারে আমতলী গ্রামীণ ব্যাংক সংলগ্ন সরকারি গাছ কাটারও অভিযোগ রয়েছে এবং বলাৎকারসহ বিভিন্ন মামলা রয়েছে।
গত ২৬ জুন খোকন ও সুজনকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে বর্তমান সরকার ও বঙ্গকন্যা শেখ হাসিনার ছবি ভাঙচুরের মত নিজ হাতে জঘন্য অপরাধ করে প্রতিপক্ষকে ফাঁসানোর অপচেষ্টাও করেছে। এলাকায় অসহায় ট্রাক্টর শ্রমিকদের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত চাঁদা আদায় করেন। না দিলে পুলিশ দিয়ে তাদের ট্রাক্টর থানায় নিয়ে মোটা অংকের জরিমানা করান।
জনসাধারণের দাবি, কাউছার এর অপকর্মের বিচার হোক। তার পয়সার উৎস কোথায় খুঁজে বের করুক। চাঁদাবাজির ও নির্যাতনের বিচার হোক।
এ বিষয়ে জেলা যুবলীগের সভাপতি শাহানেওয়াজ বলেন, আমি যতটুকু শুনেছি কাউছারের অফিস নাকি ভাঙচুর করেছে। আপনারা সাংবাদিক সত্য ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ ফুটিয়ে তুলুন। দলীয় কোন পদক্ষেপ নিবে কিনা প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।












