নিজস্ব প্রতিবেদক, রাউজান: অবশেষে দীর্ঘ ১৭ ঘন্টা পর রাউজানের সেই বৃদ্ধের নিথর দেহ সোমবার ভোর সাড়ে ৫টায় পুকুরে ভেসে উঠে। এর আগে গত রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় পুকুরে গোসল করতে নেমে তিনি নিখোঁজ হোন।
বৃদ্ধের নাম হাজী মো. শফিউল আলম (৭৪)। তিনি রাউজান সদর ইউনিয়নের মঙ্গলখালী গ্রামের রফিক চেয়ারম্যানের বাড়ির বাসিন্দা।
বৃদ্ধের ছোট ভাইয়ের ছেলে মো. সাইফুল ও শরীফুল বলেন, রোববার সাড়ে ১২টার দিকে চাচা বাড়ির সামনের পুকুরে গোসল করতে আসেন। এক পর্যায়ে সাঁতার কেটে পুকুরের নেমে পড়েন।
বাড়ির কয়েকজন নিষেধ করলে তিনি বলেন, সাঁতার কাটতে ইচ্ছে করছে। আমরা সবাই সাঁতার কেটে সামনে যেতে দেখেছি। পরে আর পুকুরে দেখতে পাইনি।
সাইফুল ও শরীফুল বলেন, আমরা অনেক খোঁজাখুজির পর না পেয়ে রাউজান ফায়ার সার্ভিসকে খবর দিই। তারা ২ জন ডুবুরি নিয়ে এসে খোঁজ করেন তবুও পাননি। বাড়ির সবাই সারারাত পুকুর ঘাটে পাহারা দেয়। শেষ পর্যন্ত ভোর সাড়ে ৫টায় চাচার লাশ ভেসে উঠে।
নিহত বৃদ্ধের মেয়ে আমেনা, রাশেদা ও কুসুম আকতার বলেন, আমাদের বাবা পুকুুরে নেমে গোসল করেন না। ঘাটে বসে মগ দিয়ে গোসল করেন। পুকুরে কেন নামলের বুঝতেছি না। আমরা এতিম হয়ে গেলাম।
তারা আরও বলেন, আমরা বড়ই হতভাগা। ৫ বছর আগে প্রবাসে ভাই দুর্ঘটনায় মারা যায়। ১৫ বছর আগে মাও আমাদের ছেড়ে চলে যায়। বাবার মুখের দিকে তাকিয়ে বেঁচে আছি। বাবাও আমাদের ছেড়ে চলে গেলেন।
জানা যায়, বৃদ্ধের ৬ মেয়ে, দুই ছেলে। এক ছেলে ৫ বছর আগে প্রবাসে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান। তার স্ত্রীও ১৫ বছর আগে রোগাক্রান্ত হয়ে মারা যায়। ৬ মেয়ে মধ্যে ছোট মেয়ে এবং ছেলে প্রবাসী রাসেল ইসলাম এখনও অবিবাহিত।
সোমবার সকাল ১১টায় জামাজে জানাযা শেষে বৃদ্ধকে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এ বিষয়ে রাউজান ফায়ার সার্ভিস ও ডিফেন্স স্টেশন কর্মকর্তা মো. মকবুল আহম্মেদ বলেন, খবর পেয়ে রোববার আমাদের একটি ইউনিট এবং ২জন ডুবুরি দল বৃদ্ধকে পুকুরে খুঁজে দেখেন। তখন পাওয়া যায়নি। সোমবার ভোরে লাশ পাওয়া গেছে জানতে পারি।