বুধবার, ১৮ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রাজারহাটে সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখতে চান মিলন

শাহদাৎ হোসেন লাল,স্টাফ রিপোর্টার: কুড়িগ্রামের রাজারহাটে দু’চোখে পৃথিবী দেখতে চায় মিলন। দু,চোখের দৃষ্টি হারিয়ে অন্ধকারাচ্ছন মানবেতর জীবনযাপন করছে এক সন্তানের জনক মিলন মিয়া(২৩)।

অভাবী সংসারে অর্থের অভাবে ডান চোখের চিকিৎসা না হওয়ায় ইনফেকশনে বাম চোখেরও দৃষ্টি হারিয়ে যায়।

জানতে চাইলে প্রতিবেদককে মিলন মিয়া বলেন, ২০১৬ সাল থেকে সূর্য উদয় ও সূর্যাস্তসহ পৃথিবীর কোনো কিছুই দেখতে পাই না। অন্ধ হয়ে দুনিয়াতে বসবাস করতেছি এখন। বাবা-মা কিংবা স্ত্রীর সহযোগিতায় চলাফেরা করতে হচ্ছে আমার। দুনিয়াটা আর দেখতে পাব কিনা। আমার চিকিৎসার জন্য কেউ যদি সহযোগিতা করত! আমার আড়াই বছর বয়সের ছেলে কিবরিয়া ও বাবা-মাকে দু’চোখ ভরে দেখতে চাই।

কিভাবে দৃষ্টি হারিয়ে গেছে জানতে চাইলে মিলন জানান, আমি চতুর্থ শ্রেণির ছাত্র থাকাকালীন সহপাঠিদের সঙ্গে ফুটবল খেলতে গিয়ে খেলার মাঠে ডান চোখে বাশেঁর কন্চি ডুকে যায়। তখন আমি শুধু বাম চোখে দেখতে পাই। ডান চোখে ইনফেকশন হলে রংপুরের একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য ভর্তি করে বাবা। অর্থের অভাবে সঠিক সময়ে সুচিকিৎসা না হওয়ায় বাম চোখেও এখন দেখতে পাই না। আমি এখন পুরোপুরি অন্ধ হয়ে গেছি। অন্ধ হওয়ায় কাজ কর্ম করতে পারি না। অন্ধ মানুষকে কেউ কাজে নিতেও চায় না। আমার শুধু প্রতিবন্ধী ভাতা আছে। আমরা অন্যের জায়গায় দুটি ঘরে বসবাস করছি। অন্যের জায়গায় থাকতেও কষ্ট হয়। চোখে দেখতে পারলে হয়ত পড়ালেখা কিংবা দিনমজুরের কাজ করে পরিবারের চাহিদা পূরণ করতে পারতাম কিন্তু হতভাগা কপালে সেটাও নেই। আমি সূর্যোদয় ও সূর্যাস্ত দেখতে চাই। মিলন মিয়া রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়াল ডাঙ্গা ইউপির খিতাব গ্রামের কুড়ারপাড় মিয়া পাড়া গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের পুত্র।

মিলনের মা মমেনা বেগম বলেন, ছেলেটা অন্ধ, দুটি চোখেই দৃষ্টি হারিয়ে ফেলেছে। আমরা অন্যের জমিতে আশ্রিতা, আমাদের ২টা ঘর, তার মধ্যে একটি রান্নাঘর।

মিলনের বাবা দেলোয়ার হোসেন বলেন, আমি অটোরিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করি। টাকার অভাবে সময়মত চিকিৎসা করাইতে পারিনি। মিলনের চিকিৎসার জন্য অনেক টাকার প্রয়োজন। ছওয়াটার চিকিৎসার জন্য বাবা হিসেবে আমি সহযোগিতা চাই।

প্রতিবেশী ও গণমাধ্যমকর্মী আজিজুল হক বলেন, বেচারার কিছু একটা পেলে খুব উপকার হতো। ওর বাবা একজন রিকশা চালক যা আয় হয় তাই দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খায়, তাতে আবার বাজারের দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বগতি। সরকারি কিংবা বেসরকারি সুযোগ-সুবিধা পেলে তাদের উপকার হতো। মিলনের দুটি চোখ অন্ধ, সংসারে তার বউ-বাচ্চা আছে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ