মঙ্গলবার, ২৯শে আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,১৪ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

রায়গঞ্জে পলিথিনের ঝুপড়ি ঘরে মানবেতর জীবনযাপন এক বৃদ্ধার!

filter: 0; fileterIntensity: 0.0; filterMask: 0; brp_mask:0; brp_del_th:null; brp_del_sen:null; delta:null; module: portrait;hw-remosaic: false;touch: (-1.0, -1.0);sceneMode: 8;cct_value: 0;AI_Scene: (-1, -1);aec_lux: 0.0;aec_lux_index: 0;HdrStatus: auto;albedo: ;confidence: ;motionLevel: -1;weatherinfo: null;temperature: 44;

বিশেষ প্রতিনিধি: নিজের জমি-জমা নেই। অভাব দারিদ্রতায় বসবাস। প্রয়োজন ও ইচ্ছে থাকলেও কিনতে পারেননি এক হাত জমি। তাই বাধ্য হয়েই অন্যের পরিত্যক্ত ঘর উঠিয়ে সেখানেই সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ পৌরসভার অদূওে বসবাস দু:স্থ, অসহায় সখিনা বেওয়া’র (৬৫)। দুর্ভাগা ছকিনা বেওয়া তার দু:খের কথাগুলো বলতে বলতে হাউ মাউ করে কেঁদে ফেলেন। পরে নিজেকে কিছুটা সংযত করে বলেন তার দুর্ভাগ্যের নানা গল্প।

রায়গঞ্জ পৌর সভার ধানগড়া এলাকার মৃত এতিম আলীর স্ত্রী সখিনা বেওয়া (৬৫)। এক ছেলে এবং এক মেয়ে থাকলেও খোঁজ রাখেনি ছেলে। জন্মের পর যখন কিছুটা বুঝ হয়, ঠিক তখনই বিয়ের পিরিতে বসতে হয় এই নারীর। বিয়ে হয় উপজেলার এতিম আলী নামের এক যুবকের সঙ্গে। এতিম আলী প্রায় ৭ বছর পূর্বে মারা যান। রেখে যান স্ত্রী আর এক কন্যা সন্তান। মেয়েটার বিয়েও দেন অসহায় সখিনা বেওয়া। সেই মেয়ে বর্তমানে মাথায় নানা সমস্যা নিয়ে চলাফেরা করছেন । তার ঘরেও রয়েছে ছোট্ট ছোট্ট নাতি নাতনী। সব মিলে অন্যের জমিতে কোনমতে খেয়ে না খেয়ে দিন পার করছে এই পরিবারটি।

এক সময় অন্যেও বাড়িতে কাজ করেই সংসার পরিচালনা করলেও এখন বয়সের ভারে নুহ্য, অসুখ বাসা বেধেছে শরীরে। তাই কাজ করতে পারেন না। এভাবেই চলছে মানবেতর জীবন। প্রতিবেশি শর্ত সাপেক্ষে তার পরিত্যক্ত জায়গায় ঘর তোলার অনুমতি না দিলে হয়তো মাথা গোঁজার ঠাইটুকুও থাকত না। টাকা নেই। তাই ঝুপড়ি ঘর তোলার পর আর মেরামত হয়নি। দীর্ঘদিনে অসংখ্য জোড়াতালি, চাউনি নষ্ট হয়ে অল্প বৃষ্টিতে পানি পড়ে ভিজে যায় বিছানা। হালকা বাতাসে যে কোন সময় ঝুপড়ি ঘরটি দুমড়ে মুচড়ে ভেঙ্গে যেতে পারে। তখন হয়তো ফের গৃহহীন হতে হবে তাকে।

সরেজমিনে দেখা যায়, ‘সভ্যতার এ যুগে মানুষ এমন ঘরে থাকাটা বিরল। বলতে গেলে একদম জীর্ণ-শীর্ণ অবস্থায় কয়েকটি বাঁশের সঙ্গে টুকরো টুকরো পলিথিন দিয়ে মোড়ানো ঝুপড়ি ঘরে থাকছেন তারা। ঘরের ভিতরে ঢুকলেই দেখা যায় বসবাস করার অনুপযোগী। বৃষ্টি হলেই সব পানি ঘরের মেঝেতেই পড়বে। মানুষের পাড়ায় এ যেন অমানবিক চিত্র।

স্থানীয় বাসিন্দা মো. গোলাম মুক্তাদির বলেন, অসহায় সখিনা বেওয়া পলিথিনে মোড়ানো ঘরেরই মানবেতর জীবন যাপন করছে। বর্ষা কিংবা শীতের মৌসুমে ঘরটিতে বসবাস করার অনুপযোগী হয়ে পড়ে। সামাজিক দায়বদ্ধতার দিক থেকে প্রয়োজন এক টুকরো জায়গা আর একটি থাকার মতো বাসস্থান। বিত্তবানদের সহযোগিতা পেলেই তাদের জন্য একটা স্বাভাবিক জীবন ব্যবস্থা হয়ে যাবে। তাই সমাজের সচ্ছল ব্যক্তিদের সহযোগিতা কামনা করছি।

এমন মানবেতর জীবনযাপনের বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী সখিনা বেওয়া জানান, আমার পাগলী মেয়েটার ছোট ছোট তিনটা সন্তান আছে। তাদের অসুখ হলে ভালোমতো চিকিৎসা করাতে পারি না। অনেকের কাছে গেছি মেলেনি একটি ঘর। যে ঘরটি আছে সেটি কোন কারনে ভেঙ্গে গেলে গৃহহীন হয়ে যাবেন। খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতে হবে তাকে। অন্যের জায়গাতে বসবাস হলেও তারা ইতিমধ্যে সেখান থেকে চলে যেতে বার বার তাগিদ দিচ্ছে। সরকারি ভাবে বিধবা ভাতার কাডের্র টাকা দিয়েই কোনমতে চলে তার সংসার। এখন কোথায় যাবো? কি খাবো কে জানে?

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হুমায়ুন কবির জানান, বিষয়টি জানা ছিল না। খুব দ্রুতই তার জন্য যথাসম্ভব একটা ব্যাবস্থা করা হবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ