
খন্দকার শাহ নেওয়াজ, রায়পুরা: নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার রাজপ্রসাদ-মামুদপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এমদাদ হোসেন সিদ্দিকীর বিরুদ্ধে বিদ্যালয়ের অর্থ আত্মসাৎ ও নিয়োগ বাণিজ্যসহ নানা অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক বনে গেছেন। দেশের পটপরিবর্তনের পর শিক্ষার্থীরা তার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগ থেকে জানা যায়, রাজনৈতিক প্রভাবে জ্যেষ্ঠতা লঙ্ঘন করে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের পদ বাগিয়ে নেন। এরপর থেকে নানা অনিয়ম দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েন। বিদ্যালয়ে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী নিয়োগ দিয়ে এমপিওভুক্তি করেছেন। কৃষি শিক্ষার শিক্ষক দিয়ে ইংরেজি ক্লাস নেওয়াসহ একাধিক অভিযোগ।
এ ছাড়া তার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে পাঠদান ব্যাহত হচ্ছে। শিক্ষার্থীর সংখ্যা দিন দিন কমতে শুরু করেছে। ফল বিপর্যয় ঘটেছে পাবলিক পরীক্ষায়।
প্রাক্তন ছাত্ররা জানান, রাজনৈক প্রভাব খাটিয়ে তিনি দীর্ঘ ৮ বছর যাবত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। এরপর থেকে বিদ্যালয়ে পড়াশোনা নেই, শুধু রাজনীতি। এ কারণে এই বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মাধ্যমিক পরীক্ষায় ফলাফল ভাল হয় না।
তিনি আরো জানান,কিছুদিন আগে এই স্কুলে চতুর্থ শ্রেনীর একজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়। তিনি তার কাছ থেকে অধিক পরিমাণ টাকা নিয়ে নিয়োগ দিয়েছেন। এ বিষয়ে আমি কথা বলায় তিনি আমাকে এসএসসি পরীক্ষা দিতে দেয়নি। আমি বার বার উনার কাছে গেলে তিনি আমাকে বলেন ৫ হাজার টাকা দিলে পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিবে।
স্কুলে অধ্যায়নরত সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র জুনাইদ বলেন, গত ৩ দিন ধরে আমরা একটা আন্দোলন করছি।আন্দোলনের নাম সত্য শিক্ষা আন্দোলন। এই আন্দোলন আমরা আমাদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের দুনীতি সহ্য করতে না পেরে মাঠে নেমেছি। প্রথম দিন আমাদের আন্দোলনে অনেক স্টুডেন্ট ছিলো। দ্বিতীয় দিন আমি যখন স্কুলে যায়, তখন দুজন মেডাম দিয়ে আমাদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক আমাকে অত্যাচার করে। যতটুকু শুনতে পেরেছি নবম- দশমের স্টুডেন্টদের হুমকি দেওয়া হয়েছে৷ তারা আন্দোলন করলে তাদের টেক্স পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিবে না। তাই নবম-দশমের স্টুডেন্টরা আজ মাঠে আসেনি।তবে আমরা আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো যতদিন এই দুনীতিবাজ প্রধান শিক্ষকের পদত্যাগ না হয়।
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক এমদাদ হোসেন সিদ্দিকী বলেন, অভিযোগ যে কেউ করতে পারে। তবে যে অভিযোগ তুলেছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট। তবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ যদি সত্যতা পায়, যা ব্যবস্থা নিবে তা মেনে নিব।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. সামালগীর আলম সাংবাদিকদের জানান, অভিযোগটি আমি ও শুনেছি। খুব দ্রুত তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।