এইচ ডি রুবেল, কুলাউড়া (মৌলভীবাজার): কুলাউড়া উপজলার হাজীপুর ইউপি’র আত্মগােপনে থাকা চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বখসের বিরুদ্ধে অন্তত অর্ধশত রােহিঙ্গাদের জন্মসনদ দেওয়ার অভিযােগ উঠেছে। এমন অভিযোগ এনেছেন পরিষদের বর্তমান ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুল।
সােমবার তিনি এ বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে একটি অভিযােগ দায়ের করেছেন।
খােঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামীলীগপর সাধারণ সম্পাদক ওয়াদুদ বখস চেয়ারম্যান নির্বাচিত হওয়ার পর ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে বিভিন্ন অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করেছেন। চলতি বছরের শুরুতেই তিনি ইউনিয়নের বাসিন্দা নন এমন অনকেকই তার কার্যালয় থেকে জন্মসনদ দিয়েছেন। তাছাড়া তাদের নামে কােন ধরণের প্রমাণাদি সংযুক্ত কিংবা সংরক্ষণ না করেই তিনি অনলাইন জন্মসনদ রেজিস্ট্রারভুক্ত করেছেন।
প্রাপ্ত অভিযােগের ভিত্তিতে জানা গেছে, ইউনিয়নের রেজিষ্টার জন্ম নিবন্ধন নম্বর ২০০৮৫৮১৬৫৩৫৫০৪৬৬০৬, জন্ম তারিখ ১৫-০৪-২০০৮ খ্রিঃ, রেজিষ্ট্রেশনের তারিখ ০৩-০১-২০২৪, সনদ ইস্যুর তারিখ ০৩-০১-২০২৪ খ্রিঃ, নাম সৌমিক বড়ুয়া, পিতা সন্তোষ বড়ুয়া, মাতা মনজু বড়ুয়া, জন্মস্থান কক্সবাজার নিবন্ধিত করা হয়েছে। তার স্থায়ী ঠিকানা হােল্ডিং নং-২৫, পাতাবাড়ি, উখিয়া কক্সবাজার। অপরজনের জন্ম নিবন্ধন নম্বর ১৯৮৮৫৮১৬৫৩৫০৪৭২৯৩, জন্ম তারিখ ১০-০৭-১৯৮৮ খ্রিঃ, রেজিষ্ট্রেশনের তারিখ ০৪-০৩-২০২৪, সনদ ইস্যুর তারিখ ০৪-০৩-২০২৪ খ্রিঃ, নাম ফৌজিয়া লাল মােহাম্মদ, পিতা: লাল মােহাম্মদ, মাতা: হাজেরা খাতুন, জন্মস্থান: কক্সবাজার নামে নিবন্ধন রয়েছে। জন্মসনদ অনুযায়ী তার স্থায়ী ঠিকানা কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নর হ্নীলা বাজার।
জানতে চাইলে হাজীপুর ইউনিয়ন পরিষদের সচিব মো. তাজুল মিয়া মুঠোফোনে বলেন, এরকম সনদে তার স্বাক্ষর করার প্রশ্নই উঠে না। তাছাড়া সচিব হিসেবে ওই ইউনিয়নে যোগদানের পর চলতি বছরের ১৬ মে নাগাদ কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে তিনি জন্ম নিবন্ধনের পাসওয়ার্ড পান। এর আগে পাসওয়ার্ড ছাড়া কাউকে জন্মনিবন্ধন দেওয়ার সুযোগ তার নেই।
মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করেও চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বখসকে পাওয়া যায়নি।
ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান নূর আহমদ চৌধুরী বুলবুল দাবি করেন ইউনিয়ন পরিষদের জন্মনিবন্ধন বহি তদন্ত করলে অনেক রােহিঙ্গাদর তথ্য পাওয়া যাবে।
তিনি ইউনিয়নের তথ্য উদ্যােক্তার বরাত দিয়ে বলেন, প্রায় অর্ধশত রােহিঙ্গা ও ভারতীয় অবৈধ নাগরিকেদর নাম জন্ম নিবন্ধন রেজিস্ট্রারভুক্ত করা হয়েছে। এমনকি লাপাত্তা থাকা চেয়ারম্যান ওয়াদুদ বখস অবৈধভাবে কােটি কােটি টাকা তাদের কাছ থেকে গ্রহণ করেছেন। বিষয়টি যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ না করলে এর দায়ভার তার উপর পড়তে পারে বলেও তিনি শঙ্কায় রয়েছেন। এ বিষয়ে তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
জানতে চাইলে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মাে. ইসরাইল হােসন জানান, এ বিষয়ে একটি অভিযােগ তার কার্যালয়ে দেওয়া হয়েছ। তিনি তদন্তপূর্বক প্রয়ােজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন বলে জানিয়েছেন।
