বৃহস্পতিবার, ১১ই পৌষ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ,২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ

রোকেয়া স্মৃতিকেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত করা হবে: প্রফেসর ড. মো. আমিনুল ইসলাম

মো. রিফাত ইসলাম, বেরোবি: নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া ছিলেন একজন সমাজ সংস্কারক। তিনি আজীবন নারী ও পুরুষের সমঅধিকার বাস্তবায়নে প্রত্যক্ষভাবে কাজ করে গেছেন। এক্ষেত্রে তিনি নারী শিক্ষাকে বেশি প্রাধান্য দিয়েছেন। পায়রাবন্দে তার নামে স্থাপিত স্মৃতিকেন্দ্রটি সচল করে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আনা হবে। এখানে ইতিহাস, ঐতিহ্য পাঠদানসহ গবেষণা কার্যক্রম পরিচালিত হবে।

সোমবার বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাধীনতা স্মারক মাঠে আয়োজিত রোকেয়া দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় শিক্ষামন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) প্রফেসর ড. মো. আমিনুল ইসলাম এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, শহীদ আবু সাঈদের স্মৃতিধন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আর কোনো সংকট থাকবে না। তাজহাট জমিদার বাড়িকেও এই বিশ্ববিদ্যালয়ের আওতায় এনে গবেষণা ইন্সিটিটিউট হিসেবে ব্যবহার করা হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের আয়তন বৃদ্ধির জন্য অচিরেই ক্যাম্পাস সংলগ্ন ৫০ একর খাস জমি বিশ্ববিদ্যালয়ের নামে বরাদ্দ দেওয়া হবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসন সংকটসহ ভৌত অবকাঠামো সংকট নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেগা প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হবে।

তিনি বলেন, ড. ইউনূস বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থা যুগোপযোগী ও মানসম্মত দেখতে চান। তাই আগামী বাজেটে শিক্ষা খাতে সবচেয়ে বেশি বরাদ্দ দেওয়া হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শওকাত আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন উপাচার্য প্রফেসর ড. লুৎফর রহমান, টিএমএস এর নির্বাহী পরিচালক রোকেয়া পদকপ্রাপ্ত নারী উদ্যোক্তা প্রফেসর ড. হোসনে আরা বেগম এবং শিক্ষা ও প্রশাসন বিষয়ক বিশেষজ্ঞ এ এইচ এম মাঈনউদ্দিন তিতাস প্রমুখ। এসময় রোকেয়া দিবস ২০২৪ উপলক্ষে প্রকাশিত ’রোকেয়া পাঠ’ গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ড. মোঃ হারুন-অর রশিদ ও ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রভাষক ইফ্ফাত আরা বাঁধন এর যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাষা বিজ্ঞান বিভাগের প্রফেসর গুলশান আরা। প্রবন্ধের উপর আলোচনায় অংশ নেন ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোঃ মনিরুজ্জামান ও বাংলা বিভাগের প্রভাষক মোঃ খাইরুল ইসলাম। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য প্রফেসর ড. মোহাম্মদ মাঈন উদ্দীন, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ এনামউল্যা, বেরোবির সিন্ডিকেট সদস্য ও রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত গণিত বিভাগের প্রফেসর (অব.) ড. মোঃ শামসুল আলম সরকার এবং রেনেসা হসপিটাল এন্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডাঃ মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস প্রমুখ। আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন রোকেয়া দিবস-২০২৪ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদের ডিন প্রফেসর ড. মোঃ মিজানুর রহমান।

এর আগে সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দিবসটির আনুষ্ঠানিকতা। এরপর মহিয়সী নারী বেগম রোকেয়ার অস্থায়ী প্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি অর্ন্তবর্তীকালীন সরকারের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিশেষ সহকারী (প্রতিমন্ত্রী পদমর্যাদা) প্রফেসর ড. এম. আমিনুল ইসলাম, এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শওকাত আলী।

শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে শোভাযাত্রার উদ্বোধন করেন প্রধান অতিথি প্রফেসর ড. এম. আমিনুল ইসলাম। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদ, বিভাগ, দপ্তর ও আবাসিক হল শোভাযাত্রায় অংশ নেয়। শোভাযাত্রাটি পার্কের মোড় হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে স্বাধীনতা স্মারক মাঠে এসে শেষ হয়। বাদ যোহর কেন্দ্রিয় মসজিদে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, , বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ