
লিটন সরকার, রৌমারী (কুড়িগ্রাম): কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারীতে ছেলের বউকে ধর্ষণের অভিযোগে শ্বশুরকে আটক করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় মামলার অপর আসামি শাশুড়ি রওসান আরা বেগম পলাতক রয়েছে।
বুধবার সকাল সাড়ে ১১ টায় রৌমারী বাজার থেকে আটক করা হয়।
ভুক্তভোগী বলেন, ৭ বছর আগে হযরত আলীর ছেলে আব্দুর রশিদের সাথে আমার বিবাহ হওয়ার পর থেকে আমার সংসার সুন্দর ছিলাম। গত ২ বছর আগে আমার স্বামী মালয়েশিয়া যায়। এরপর থেকেই আমার শ্বশুর বিভিন্ন সময় আমার উপর খারাপ নজরে তাকাতো। আমি আমার ঘরে একা ঘুমিয়ে ছিলাম। গভীর রাতে গোয়াল ঘরের দরজা দিয়ে রুমে গিয়ে ঘুমন্ত অবস্থায় আপত্তিকর স্থানে হাত দেয়। ঘুম ভেঙে গেলে দেখতে পাই আমার শ্বশুর। ধাক্কাধাক্কির পর্যায়ে চিৎকার করার চেষ্টা করলে আমার মুখে গামছা দিয়ে চেপে ধরে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে। পরে একথা কাউকে বললে হত্যা করাসহ বিভিন্ন ভয় দেখায়। পরে এ ঘটনার কথা আমার স্বামীকে জানাইলে তার মাকে বলতে বলে। তখন শাশুড়িকে জানালে তিনি স্বামীকে শাসন করার কথা বলে তিনিও এ ঘটনার কথা কাউকে না বলার জন্য বলে এবং ভয় দেখায়। এমন জঘন্যতম ঘটনায় শ্বশুর শাসন না পাওয়ায় আমাকে আবারও পরপর দুই দিন ধর্ষণ করা হয়েছে। পরে আমি ৩ মাসের অন্তঃসত্বা হলে শাশুড়ি রওসান আরা আমাকে বিভিন্ন গাছ-গাছড়ার ওষুধ খাওয়ায়। আমার সন্তান নষ্ট করে দেয়া হয়। আমি গুরুতর অসুস্থ্ হয়ে পড়লে আমার বাবা ময়মনসিংহ চরপাড়া ফাতিহা ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে নিয়ে চিকিৎসা করান।
উল্লেখ্য, এ ঘটনায় মহর আলী শরীয়ত ও সামাজিকভাবে সালিশ বৈঠকের জন্য চাক্তাবাড়ি স্বরলিপি যুব সংঘের সভাপতি পল্লী চিকিৎসক আমিনুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক নুরুল আমিন, মাস্টার রফিকুল, নুর-ইসলাম, সৃজন মন্ডল ও আব্দুল কাইয়ুমকে বিচার দেন। সভাপতি আমিনুল ইসলাম বিবাদীর সাথে আঁতাত করে বাদিনীকে স্বামী আব্দুর রশিদ আলমকে স্ব-ইচ্ছায় ডিভোর্স পত্রে সই প্রদান করে ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা রফাদফা করেন এবং অভিযোগ তুলে নেয়ার সিদ্ধান্ত দেন।
ভুক্তভোগী ক্লাবের এমন সিদ্ধান্ত প্রত্যাখ্যান করে ধর্ষকের শাস্তির দাবিতে গত ২৩ সেপ্টেম্বর রৌমারী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন।
রৌমারী থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) আল হেলাল মাহমুদ বলেন, অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার সকাল সাড়ে ১১টায় রৌমারী বাজারস্থ ইসলামী ব্যাংকের পাশে শাহ আলমের চায়ের দোকান থেকে হযরত আলীকে আটক করা হয়। পরে কুড়িগ্রাম জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।