লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুরে কলেজ পড়ুয়া ছেলেকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় আতংকিত হয়ে হার্ট অ্যাটাক করে বাবা সামছুল আলম মামুন (৫২) এর মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার ভোররাতে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার কালু হাজী রোডস্থ নিহত সামছুল আলম মামুনের বাসায় এ ঘটনা ঘটে।
পরে নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ঐ ছাত্রকে দুপুরে আদালতে তোলা হয়।
গ্রেফতারকৃত সাইফ মোহাম্মদ আলী লক্ষ্মীপুর সরকারী কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, সাইফ মোহাম্মদ আলী লক্ষ্মীপুর সরকারী কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র। তার বিরুদ্ধে থানায় কোন মামলা ছিল না। মঙ্গলবার রাতে সদর থানা পুলিশ কালুহাজী রোডে অবস্থিত সামছুল আলম মামুনের নিজ বাসায় তার ছেলে সাইফ মোহাম্মদ আলীকে ধরতে পুলিশ অভিযান চালায়। এসময় সাইফ মোহাম্মদ আলী ঘুমে ছিলেন। হঠাৎ সাইফ মোহাম্মদ আলীকে আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় বাবা সামছুল আলম মামুন বাধা দেন। ছেলের বিরুদ্ধে কোন মামলা ও ওয়ারেন্ট আছে কিনা, সে বিষয়টি পুলিশের কাছে জানতে চান। তবে পুলিশ কোন উত্তর না দিয়ে সাইফ মোহাম্মদ আলীকে আটক করে নিয়ে যায়। এসময় হার্ট অ্যাটাক করে ঘটনাস্থলে মারা যান সামছুল আলম মামুন।
এরপর পুলিশের দায়ের করা নাশকতা ও বিস্ফোরক আইনের মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্টেট আবু সুফিয়ান মো. নোমানের আদালতে সাইফ মোহাম্মদ আলীর জামিন আবেদন করে তার আইনজীবীরা। আদালত উভয়পক্ষের কথা শুনে সিনিয়র আইনজীবী এডভোকেট সৈয়দ মোহাম্মদ সামছুল আলমের জিম্মায় বিকেল ৫টা পর্যন্ত জানাজায় অংশ নিতে জামিন দেন।
আসামির আইনজীবী মহসিন কবির মুরাদ বলেন, সাইফ মোহাম্মদ আলীর বিরুদ্ধে কোন মামলা ছিল না। তাকে পুলিশের দায়েরকৃত নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। মামলা বা ওয়ারেন্ট ছাড়াই তাকে বাসা থেকে গ্রেফতার করা হয়। এসময় তার বাবা সামছুল আলম মামুন ছেলেকে না নিতে পুলিশকে বাধা দেয়। এরপর পুলিশ সাইফকে ধরে নিয়ে যাওয়ার সময় আতংকিত হয়ে বাসায় মামুন মারা যায়। পরে আদালতে সাইফ মোহাম্মদ আলীর জামিন আবেদন করা হলে আদালত জানাজায় অংশ নিতে বিকেল ৫টা পর্যন্ত জামিন দেন।
গ্রেফতারকৃত কলেজ পড়ুয়া ছেলে সাইফ মোহাম্মদ আলীর মা তাহমিনা আক্তার নাসরিন অভিযোগ করে বলেন, সাইফ কোন রাজনীতির সাথে জড়িত নয়। তার বিরুদ্ধে কোন মামলা ছিল না। পুলিশ জোরপূর্বক করে ছেলেকে ধরে নিয়ে যায়। এসময় সাইফের বাবা বাধা দিলে আতংকিত হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায় সে। ছেলেকে অন্যায়ভাবে বিস্ফোরক ও নাশকতার মিথ্যা মামলা দেয়া হয়েছে। এঘটনার সুষ্ঠ তদন্ত করে ছেলের মুক্তির দাবী জানান তিনি।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. ইয়াছিন ফারুক মজুমদার বলেন, নাশকতা ও বিস্ফোরক মামলায় সাইফ মোহাম্মদ আলীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তার বাবার মৃত্যুর বিষয়টি সকালে শুনেছি। সাইফ ছাড়াও আরো ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সহিংসতা ও নাশকতাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযান চলছে।