লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি : লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার কুশাখালীতে ৩কিলোমিটার রাস্তা নির্মাণে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা। নির্মাণের ২-১ দিনের মধ্যেই উঠে যাচ্ছে কার্পেটিং। নতুন রাস্তা পেয়েও পুনরায় দুর্ভোগের পথে জনগণ। তাই তো দ্রুত প্রতিকার চায় তারা।
জানা যায়, দীর্ঘদিন কুশাখালী ইউনিয়নের শান্তিরহাট বাজার থেকে পুকুরদিয়া বাজার পর্যন্ত ৩কিলোমিটার রাস্তার বেহাল অবস্থা ছিলো। সম্প্রতি স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) রাস্তাটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে প্রায় ১কোটি টাকা বরাদ্দ হয় রাস্তাটি সংস্কারে। যা কয়েকটি হাত ঘুরে কাজ পায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনের ছেলে জুয়েল হোসেন।
গত রমজানের ঈদের আগে কাজ শুরু করেন তিনি। এরমধ্যে অনেকদিন কাজ বন্ধ রেখে আবার গত একমাস থেকে কার্পেটিংয়ের কাজ করে জুয়েল। নানান অনিয়মের অভিযোগ এনে কয়েকবার কাজও বন্ধ করে দেন স্থানীয়রা। কিন্তু পরে অফিস মেনেজ করে আবার শুরু হয় কাজ। এতে ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী। এ কাজ করার চেয়ে না করাই ভালো বলে তারা বলেন।
স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন, কাজটি শুরু থেকেই নানান অনিয়ম করে আসছে ঠিকাদার। ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের ছেলের কারণে অনেকেই প্রতিবাদ করতে পারছেন না। কোটি টাকা বরাদ্দ লোপাট হচ্ছে। পুরাতন রাস্তাকে উল্টিয়ে সেখানেই কার্পেটিং করা হচ্ছে। তার মধ্যে কার্পেটিং ১ ইঞ্চি হওয়ার কথা থাকলেও সেখানে অনেক জায়গায় আধা ইঞ্চিও হচ্ছে না। এছাড়া ফাইম কোট না করে মাটির উপর করা হচ্ছে কার্পেটিং। অন্যদিকে পাথর ৫ মিলি, ১০মিলি ও ১৬মিলি থাকার কথা থাকলেও অধিকাংশ পাথর ১৬মিলির উপরে। নিম্নমানের কাজ ও অনিয়মের কারনে কয়েকদিনেই কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। আমরা এর প্রতিকার চাই।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রাস্তাটিতে কার্পেটিংয়ের কাজ চলছে। তবে কোন ফাইম কোর্ট দেওয়া হচ্ছে না। এছাড়া মাটির উপরই দেওয়া হচ্ছে কার্পেটিং। অন্যদিকে রাস্তাটি বিভিন্ন অংশে কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে।
এসব বিষয়ে ঠিকাদার জুয়েল হোসেনের সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ফাইম কোট এক বার দেওয়া হয়েছে। বৃষ্টিতে তা ধুয়ে গেছে। এখন কার্পেটিংয়ের আগে ফাইম কোট দেওয়া হচ্ছে। তাছাড়া বিভিন্ন জায়গায় কার্পেটিং ওঠার বিষয়ে তিনি বৃষ্টিকে দায় করছেন।
এছাড়া তিনি কোন অনিয়ম করছেন না বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, আমার কাজ হচ্ছে রাস্তার কাজ করা। আমার পর্যাপ্ত মালামাল রয়েছে। কাজ বুঝে নেওয়ার দায়িত্ব এলজিইডি অফিসের।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের সদর উপজেলা উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও সাইট সুপারভাইজার বেলাল হোসেনের কাছে রাস্তাটির অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলতে রাজি হননি।