মিনহাজ আলী, শিবগঞ্জ (বগুড়া): বগুড়ার শিবগঞ্জে বিএনপি ও নাগরিক ঐক্যের সমর্থকদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
উপজেলার বিহার ইউনিয়নে হাটের টোল আদায়কে কেন্দ্র করে এই সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে উভয় পক্ষের ৯ জন আহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, উপজেলার ঐতিহ্যবাহী বিহার হাটটি বাংলা ১৪৩১ সালের জন্য আইটি ভ্যাট সহ মের্সাস মা এন্টারপ্রাইজ এর অনুকুলে ও বিহার ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলাম এর সহধর্মিণী চামেলী খাতুন এর নামে সরকারী সর্বোচ্চ মূল্যে ও বিধি মোতাবেক ২ লক্ষ ৪৭ হাজার ৫ শত টাকার বিনিময়ে উপজেলা হাট-বাজার ইজারা বন্দোবস্ত কমিটি প্রদান করেন। বিগত সরকার পরবির্তনের পর থেকে বর্তমান হাটের ইজারাদার চামেলী খাতুন ও তার কোন লোকজন সপ্তাহের শনিবার ও মঙ্গলবার এই দুই দিনে হাটের কোনো টোল আদায় করতে আসেননি। ইজারাদারের অনুপস্থিতির কারণে বিহার ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান উপজেলা কৃষক দলের সভাপতি জহুরুল ইসলাম ঠান্ডু তার লোকজন নিয়ে টোল আদায় করতে থাকেন। এ দিকে উপজেলার নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাসেদ বাদশা সম্প্রতি হাটের ইজারাদার চামেলী খাতুনের নিকট থেকে বিহার হাটের টোল আদায়ের জন্য নিজের নামে ডিড লিখে নেন। তারপর থেকে উভয়ের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করে।
গত শনিবার সকাল ১১ টার দিকে বিহারহাটে উভয় সমর্থকদের মধ্যে বাকবিতণ্ডার পর্যায়ে সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষে বিহার ইউনিয়ন নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক মৃদুল, হান্নান শেখ, সোহেল রানা, জাফিরুল ইসলাম, ছানোয়ার হোসেন, আহত হয়। এর জের ধরে গত রবিবার দুপুরে ২য় দফায় আবারো সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে বিহার ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি সাইদুর রহমান, মফিজুল বারী রঞ্জু, সারিয়ার হোসেন সৌরভ, খায়রুল ইসলাম মিন্টু, আহত হয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা নাগরিক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল বাসেদ বাদশা বলেন, আমি বিহার হাটের ইজারাদার চামেলী খাতুনের নিকট থেকে ইজারার ডিড আমার নামে লিখে নিয়েছি। আমার লোকজন বাজারে চা খাওয়ার সময় প্রতিপক্ষের লোকজনরা হামলা চালিয়ে আহত করে।
সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান ও উপজেলা কৃষকদলের সভাপতি জহুরুল ইসলাম ঠান্ডু বলেন, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মহিদুল ইসলামের সাঙ্গো পাঙ্গরা হামলা চালিয়ে আহত করেন। আর তাকে আশ্রয়- প্রশ্রয় দিচ্ছে নাগরিক ঐক্যের বাসেদ। তারা আবারও বিহারকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে।
তিনি আরও বলেন, টোল আদায়ের টাকা এলাকার মসজিদ, মাদ্রাসা, স্কুলের অসহায় শিক্ষার্থীদের মাঝে সহায়তা করা হয়েছে।
বিহার ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান রুস্তম আলী বলেন, আমি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ঠান্ডুকে টোল আদায় করতে নিষেধ করেছি কিন্তু তিনি আমার কথা শোনেননি।
এ ব্যাপারে থানা অফিসার ইনচার্জ আব্দুল হান্নান বলেন, পরিস্থিতি আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যেহেতু বিধি মোতাবেক হাটটি অন্য কারো নামে পরিবর্তনের সুযোগ নেই। সেক্ষেত্রে সংঘাত এড়িয়ে চলাই ভালো।
তিনি আরো বলেন, আইন শৃঙ্খল পরিস্থিতি অবনতি করার চেষ্টা করা হলে সে যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে।
এ ব্যাপারে উপজেলা হাট বাজার ইজারা বন্দোবস্ত কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার বলেন, বিহার হাটের বর্তমান ইজারাদার চামেলী খাতুন। হাটটি অন্য কারো নামে পরিবর্তনের কোনো সুযোগ নেই।