
আব্দুল মোমিন, (শেরপুর) বগুড়া : পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠায় বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ধনকুন্ডি শাহানাজ-সিরাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের ছয়টি পদের নিয়োগ স্থগিত করা হয়েছে।
নিয়োগ কমিটির প্রভাবশালী সদস্য উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষাকর্মকর্তা নজরুল ইসলাম নিজের পছন্দের প্রার্থীকে চাকরি পাইয়ে দিতে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। মোটা অংকের আর্থিক লেনদেনের মাধ্যমে তিনি এই কাজটি করেন বলে অভিযোগ করেছেন নিয়োগ কমিটির একাধিক সদস্য।
শুক্রবার বিকেল চারটায় ওই বিদ্যালয়ের সভাকক্ষে এই নিয়োগ পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছিল। নির্ধারিত সময়ে পরীক্ষা শুরুর পর প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়টি জানাজানি হলে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, শেরপুর উপজেলার সীমাবাড়ী ইউনিয়নের ধনকুন্ডি নামক স্থানে ঐতিহ্যবাহী ধনকুন্ডি শাহানাজ-সিরাজ উচ্চ বিদ্যালয়টির অবস্থান। সম্প্রতি এই বিদ্যালয়ের ছয়টি শুন্য পদের বিপরীতে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয়। সে অনুযায়ী প্রধান শিক্ষক পদে ছয়জন, অফিস সহকারি পদে সাতজন, কম্পিউটার ল্যাব সহকারি পদে আটজন, অফিস সহায়ক পদে ছয়জন, নিরাপত্তাকর্মী চারজন ও আয়া পদে তিনজন চাকরি প্রার্থী আবেদন করেন।
তাদের পরীক্ষার নির্ধারিত দিন শুক্রবার অংশ নিতে চিঠি দেওয়া হয়। সিংহভাগ চাকরি প্রার্থী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। কিন্তু নিয়োগ কমিটির দুইজন সদস্যকে না জানিয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নজরুল ইসলাম একাই প্রশ্নপত্র তৈরি করেন। এমনকি পরীক্ষা শুরুর আগেই প্রশ্নপত্রের ছবি মোবাইল ফোনে তুলে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে জানিয়ে দেন।
পরীক্ষা চলাকালীন বিষয়টি ধরা পড়লে নিয়োগ কমিটির সদস্যদের মধ্যে মতবিরোধ দেখা দেয়। পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট নিয়োগ কমিটির সদস্যদের মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের মহাপরিচালকের (ডিজি) প্রতিনিধি বগুড়া সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মামুন অর রশিদ ও বগুড়া জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) এসএম রেজাউলকরিম বিব্রতবোধ করেন। বাকি দুইজন সদস্য বিদ্যালয় পরিচালনাকমিটির সভাপতি গোলাম মাহবুব প্যারিস ও সদস্য সচিব জাহাঙ্গীর আলম ক্ষোভ প্রকাশ করেন।
এছাড়া চাকরি প্রার্থী ও স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে বলেন, ছয়টি পদের বিপরীতে চাকরি প্রার্থী কয়েকজনের সঙ্গে গোপন চুক্তি করেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা। এক্ষেত্রে মোটা অংকের লেনদেনও হয়েছে। তাই পরীক্ষা শুরুর আগেই কেবল তাদেরকে প্রশ্নপত্র জানিয়ে দেন তিনি। যাতে করে অনেকটা সহজেই ওইসব চাকরি প্রার্থীদের নিয়োগ দেওয়া সম্ভব হয়। কিন্তু ঘটনাটি ফাঁস হয়ে যাওয়ায় তার সব পরিকল্পনাই ভেস্তে গেছে।
এই ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত দাবি করে তারা আরো বলেন, প্রশ ফাঁসের বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে খতিয়ে দেখা উচিত। প্রকৃত দোষীকে আইনের আওতায় এনে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। নইলে এসব অপকর্মের মাত্রা আরো বাড়বে।