শুক্রবার, ১৩ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২৭শে জুন, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শেষ সময়েও জমছে না সাতক্ষীরার পশুর হাট

আব্দুর রহমান, সাতক্ষীরা: শেষ দিকেও জমছে না সাতক্ষীরায় পশু হাটের কেনা-বেচা। ক্রেতা সংকট হাটগুলো। ক্রেতারা দাম বেশির অভিযোগ করলেও বিপরীত বক্তব্য বিক্রেতাদের।

গো-খাদ্যের দাম বেশি হওয়ায় লোকসান গুনতে হচ্ছে তাদের। এদিকে গরু কেনাবেচা কম হওয়ায় লোকসান যাওয়ার আশঙ্কা হাটমালিকদের।

তিনদিন পরেই ঈদুল আজহা। সাতক্ষীরার সবচেয়ে বড় গরুর হাট আবাদের হাটে মঙ্গলবারে গরু কেনা-বেচা খুবই কম। বিক্রি করতে আসা গরুর সংখ্যাও অন্যান্য বারের চেয়ে কম। বুধবার জেলার তৃতীয় বৃহত্তম পশুর হাট পাটকেলঘাটাতেও একই অবস্থা।

সরেজমিনে জানা গেছে, আবাদের হাটে গরু বিক্রি হচ্ছে মণপ্রতি ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে। এতেও ক্রেতাদের সাড়া মিলছেনা। বিক্রেতাদের অভিযোগ,গরুর খাবারের দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ায় এদামেও বেচা কঠিন। আর ক্রেতাদের আকাঙ্খা, এর চেয়েও কম দাম।

পাটকেলঘাটা হাটে বিনেরপোতা এলাকা থেকে গরু কিনতে আসা মাহতাবউদ্দীন জানান, ‘‘৩ মণের বেশি মাংস হবে না, এমন গরুর দাম হাঁকা হচ্ছে ১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। আমার কাছে এই গরুটার দাম সর্বোচ্ছ ৯০ হাজার টাকা। ’’

গরুর ব্যাপারী আরশেদুল ইসলাম জানান,‘‘ ১০টি মাঝারি সাইজের গরু নিয়ে আসছিলাম। কিন্তু সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র ৪টি বিক্রি করতে পারছি। বাকীগুলো বাড়িতে ফিরিয়ে নিতে হবে মনে হয়। ’’

বিগত কয়েক বছর আগেও সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী কয়েকটি পয়েন্ট দিয়ে ভারত থেকে আসত হাজার-হাজার গরু। তবে ভারত সরকারের সিদ্ধান্তে বর্তমানে তা বন্ধ থাকায় জেলায় বেড়েছে খামার ও খামারীদের সংখ্যা।২ বছরের ব্যবধানে ১০ হাজার খামারের বিপরীতে খামার হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার।

গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে অনেকগুন। তবে সে অনুপাতে গবাদিপশুর দাম বাড়েনি। গত বছর ৩২ থেকে ৩৫ হাজার টাকা মণ দরে গরু বিক্রি হলেও এবার তা ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টাকার মধ্যে। লোকসান গুনবার আশঙ্কায় তাই হতাশ খামারীরা।

নিজ খামার থেকে আবাদের হাটে গরু নিয়ে আসা সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মাগুরা এলাকার আমিনুর রহমান জানান,‘‘ গো-খাদ্যের দাম বেড়েছে অনেকগুন। বিচালি,কুড়া,খৈলসহ সমস্ত জিনিসের দাম কয়েকবছরের মধ্যে দ্বিগুন হয়েছে। তবে সে অনুপাতে মাংসের দাম বাড়েনি। খামারগুলোকে বাচিয়ে রাখতে সরকারের উচিৎ গো-খাদ্যের সাথে মাংসের দামের সামঞ্জস্য রাখা। ’’

গরু কেনা-বেচা কম থাকায় অর্ধকোটি টাকা ইজারা নিয়ে লোকসানের আশঙ্কায় রয়েছেন আবাদের হাটের ইজারাদার ফারুক রহমান।

তিনি বলেন,‘‘ এবার হাটে কেনা-বেচা খুবই কম। ছোট কিছু গরু বিক্রি হচ্ছে। বড় গরুর ক্রেতা নেই। ’’
জেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার স্থায়ী হাট বসানো হয়েছে ১১টি। এছাড়া বেশ কিছু অস্থায়ী হাট রয়েছে। ১ লাখ ৬ শ’ ৬টি গবাদি পশু প্রস্তুত আছে। চাহিদা আছে ৮৫ হাজার ৩শ’১৮। উদ্বৃত্ত রয়েছে ১৫ হাজার ২শ’৮৮টি।

এ বিষয়ে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. বিষ্ণুপদ বিশ্বাস জানান,‘‘ পশুর হাটে যাতে রুগ্ন পশু বিক্রি না হয়, তার জন্য আমাদের তদারকি চলমান রয়েছে। ’’

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *