মঙ্গলবার, ৫ই কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২১শে অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

শ্যামনগরে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে চাকরি হারাতে পারেন প্রধান শিক্ষক

নিজস্ব প্রতিনিধি: সাতক্ষীরার শ্যামনগরে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে এক প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করেছে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। ওই শিক্ষককে ইতিমধ্যে বিদ্যালয় থেকে বদলিও করা হয়েছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৫২ নং ডুমুরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মো. ইসরাফিল হোসেন সম্প্রতি চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় গত ১৫ অক্টোবর মেয়েটির অভিভাবক উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও শ্যামনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। ওই দিনই ইউএনও কার্যালয়ে অভিযোগের শুনানি হয়।

শুনানিতে ইউএনও, থানার ওসি, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ও সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার উপস্থিত ছিলেন।

অভিযোগকারী ও অভিযুক্তের বক্তব্য শোনার পর অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হয়। এরপর ইউএনও তাৎক্ষণিকভাবে অভিযুক্ত শিক্ষককে অন্যত্র বদলির নির্দেশ দেন এবং বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে প্রতিবেদন পাঠান। পরদিন উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার হুমায়ুন কবির সরেজমিন তদন্তে যান। ওই সময় অভিযুক্ত শিক্ষক বিদ্যালয়ে উপস্থিত ছিলেন না। তদন্তে ভুক্তভোগী ছাত্রী, দুইজন সহকারী শিক্ষক ও দপ্তরীর লিখিত বক্তব্যে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়।

এর ভিত্তিতে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. এনামুল হক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করে প্রতিবেদন পাঠান। পরে গত ১৯ অক্টোবর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী মো. ইসরাফিল হোসেনের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করে।

অভিযোগপত্রে জানা যায়, তিনি ১৬ অক্টোবর থেকে কর্মস্থলে অননুমোদিতভাবে অনুপস্থিত রয়েছেন এবং ছাত্রীদের শ্লীলতাহানির ঘটনায় দায়ী। তার এই আচরণ শিক্ষা বিভাগের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করেছে। তাকে ‘অসদাচরণ’ ও ‘পলায়ন’-এর অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে। কেন তাকে চাকরি থেকে বরখাস্ত করা হবে না, সে বিষয়ে আগামী ১০ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব দিতে বলা হয়েছে।

জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রুহুল আমীন বলেন, ‘ঘটনাটি অত্যন্ত গুরুতর। তদন্তে অভিযোগের সত্যতা পাওয়ার পর বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসন ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে। অভিযুক্ত শিক্ষক বর্তমানে কর্মস্থল থেকে বহিষ্কৃত আছেন।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

, বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *