বুধবার, ১৮ই আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ,২রা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

সংসদে প্রধানমন্ত্রীর কাছে যা চাইলেন এমপি আসাদ

রাজশাহী ব্যুরো : রাজশাহী-৩ আসনের সংসদ সদস্য মোহাঃ আসাদুজ্জামান আসাদ বাজেট অধিবেশনে বুধবার রাতে জাতীয় সংসদে ভাষণ দিয়েছে। এসময় তিনি রাজশাহীর উন্নয়নে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তিনি রাজশাহীতে কৃষি ইপিজেড প্রতিষ্ঠা,কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠাসহ বেশ কিছু দাবি জানান।

বুধবার রাতে আসাদুজ্জামান আসাদ যখন বক্তব্য দেন ঐ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদের অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন।

সংসদ সদস্য আসাদুজ্জামান আসাদ জাতীয় সংসদে দেয়া তার ভাষনে বলেন,মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,সংসদ সদস্য হয়েছি আপনার বদন্যতায়। এখন আমি যেটি আপনার কাছে চাই, সেটি আপনার কৃপা। রাজশাহী বিভাগের সিরাজগঞ্জ থেকে সোনামসজিদের রাস্তাটি ফোরলেন হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি। রাজশাহীতে একটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজন,আশা করি আপনি (প্রধানমন্ত্রী) বিবেচনা করবেন। কৃষিভিত্তিক যে ইপিজেড,রাজশাহী কিন্তু কৃষি অঞ্চল,এখানে একটি ইপিজেড দেওয়া যায় কি না।

রাজশাহী বিমানবন্দর থেকে শুরু করে নওগাঁ জেলা পর্যন্ত একটি ফোরলেন রাস্তা আর সেই সঙ্গে আমার নির্বাচনী এলাকা পবা-মোহনপুরে যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এখনও কিছু বাকি আছে,সেগুলো ধারাবাহিকভাবে যদি আপনি সুযোগ দেন,তাহলে আমাদের অঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার মানোন্নয়নে সহায়তা করবে। দুইটি উপজেলায় দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণের দাবি জানাই।

আসাদ বলেন,রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ আওয়ামী লীগের উপর ভরসা রেখেছে। সেই ভরসার প্রতিদান হিসেবে মাননীয় অর্থমন্ত্রী সুখী,সমৃদ্ধ,উন্নত স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকারে যে বাজেট ঘোষণা করেছে সেই বাজেটের পক্ষেই সংগত কারণে আমি আমার অবস্থান নিয়ে কথা বলতে চাই। আজকের এই বাজেট বিগত ১৫ বছর যাবত মাননীয় রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা বাংলাদেশের মানুষের ভরসাকে সাথী করে এবং তাদের বিশ্বাসকে স্থান দিয়ে যেভাবে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের চেষ্টা করেছে তারই একটি ধারাবাহিকতা মাত্র। বাংলাদেশের যে মা,যার কোনোদিন একটি বাসস্থান ছিল না,যে বাসস্থানের জন্য যিনি হাহাকার করেছেন সমাজের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে, সেখানে শেখ হাসিনা যখন ২ কাঠা জায়গাসহ একটি বাড়ি উপহার দিয়েছে,সরকারের বাজেট সেখানেই কথা বলে। যে মা বৃদ্ধ বয়সে চলতে পারে না,তার হাতে যখন সরকারের তরফ থেকে টাকা তুলে দেওয়া হয়,সেই টাকায় যখন সে আস্থা ফিরে পায়,তখন শেখ হাসিনার দেশের প্রতি যে মমত্ববোধ,সেই মমত্ববোধের জায়গা থেকে বাজেটগুলো ঘোষিত হয়।

আসাদুজ্জামান বলেন,বাজেটকে নিয়ে যারা বিভ্রান্তমূলক কথা বলে,তাদেরকে অনুরোধ রাখতে চাই,গ্রামে যান, অসহায় মানুষের সাথে কথা বলুন,যে মানুষটি কোনোদিন বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত হয় নি তার কাছে জিগ্যেস করুন তোমার কাছে বাজেট কি? শেখ হাসিনার আলোয় আমার জীবন আমার বাড়ি আলোকিত হয়েছে,আমি এই বাজেটকেই সমর্থন করি। যেখানে গ্রামের অভিভাবকরা তার সন্তানকে স্কুলে দিতে পারতো না,সেখানে শেখ হাসিনা বলেছেন সন্তান তোমার,লেখাপড়ার দায়িত্ব আমার। সেখানে গিয়ে জিগ্যেস করুন,ওই ছাত্র বা অভিভাবক এক বাক্যে উচ্চারণ করবে-আমার সন্তানের দায়িত্ব শেখ হাসিনা নিয়েছে,আমি শেখ হাসিনাকেই সমর্থন করি। আমাদের ঘোষিত বাজেটে সেই কথাগুলোই আছে।

তিনি বলেন,যারা বাইরে থেকে বাজেটের বিরোধিতা করছে তারা কিভাবে কোত্থেকে কেন করছে এটি সবাই জানেন। সামরিক উর্দি পড়ে নিজেকে সামরিক আইন প্রশাসক ঘোষণা করে স্বঘোষিত রাষ্ট্রপতি সেজে যখন ঘরে বসে বাজেট ঘোষণা করে,ওদের কাছে বাজেট আর গণতন্ত্রের কথা জাতির কাছে শোভা পায় না। রাষ্ট্রনায়ক ১৯৮১ সালের ১৭ মে সমস্ত রক্তচক্ষুকে উপেক্ষা করে বাংলাদেশের মানুষের কাতারে দাঁড়িয়েছিলেন আওয়ামী লীগের রক্তাক্ত পতাকাকে ধারণ করে। সেই পতাকাতলে বাংলাদেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করে সেইদিনই তিনি কথা দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত কাজ আমি সমাপ্ত করার জন্য যদি জীবন দিতে হয় সেই জীবন দিতেও প্রস্তুত। সেই কথার উপর বিশ্বাস রেখে বাংলাদেশের মানুষ শেখ হাসিনার পক্ষে একাট্টা হয়ে পথ চলছে বলেই আজকে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। সেই মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো বাংলাদেশকে যারা কটাক্ষ করে,যারা বিদ্যুতের বিরুদ্ধে কথা বলে,আপনাদের সময় বিদ্যুতের উৎপাদন কত ছিল? যারা রাষ্ট্রীয় কোষাগারের টাকা নিয়ে কথা বলে,আপনারা যখন ক্ষমতায় ছিলেন বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় কোষাগারে কয় টাকা রেখেছিলেন? আজকে যখন দুর্নীতির বিরুদ্ধে কথা বলে,আমাদের খুব জানতে ইচ্ছে করে,সরকার ধারাবাহিকভাবে যে বাজেট দিচ্ছে এই ১৫ বছরে কি একবার শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যে ব্যর্থতার কথা বলছেন কোনো সময় কি ব্যর্থ হয়ে আপনাদের মতো দুর্নীতিতে পাঁচ বার তো দূরের কথা পাঁচ মিনিটের জন্যও চ্যাম্পিয়ন হয়েছে?

পবা-মোহনপুর আসনের এই সংসদ সদস্য আসাদ বলেন, শেখ হাসিনার হাত ধরে যে বাজেট ঘোষিত হয়েছে এই বাজেট জনগণের পক্ষে জনগণের কথা বলে,গ্রাম পর্যায়ের মানুষের উন্নতি আর কল্পনাকে ধারণ করে এগিয়ে চলছে। বিশ্বে যখন অর্থনৈতিক সংকট,তখন যারা বাংলাদেশকে নিয়ে কটাক্ষ করে,আমি তাদেরকে অনুরোধ রাখতে চাই, ওই সমস্ত ধনী দেশের দিকে তাকিয়ে দেখুন,তাদের আর্থিক অবস্থা কী। তার মধ্যেও তো বাংলাদেশ তরতর করে এগিয়ে চলছে। একমাত্র শেখ হাসিনার সততা বিশ্বাস আর ভরসাকে পুঁজি করে,সেই ভরসা আর বিশ্বাসের জায়গা থেকে এই বাজেট। সেই বাজেট জননন্দিত আর জনগণ কর্তৃক গৃহীত। সেই বাজেট অতীতের ১৫ বছরের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ বিনির্মাণের জন্য যে উজ্জ্বল জায়গায় যাওয়ার চেষ্টা,বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা বিনির্মাণে কাজ করবে।

Facebook
Twitter
LinkedIn
WhatsApp
Tumblr
Telegram

বিভাগের জনপ্রিয় সংবাদ

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

যায়যায়কাল এর সর্বশেষ সংবাদ