
পারভেজ আলম আদেল, স্টাফ রিপোর্টার: একজন কর্মঠ প্রশাসক, একজন মানবিক ব্যক্তিত্ব, একজন স্বপ্নবান জাতি গড়ার কারিগর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার প্রশাসন, শিক্ষা, সমাজকল্যাণ ও নাগরিক সেবার প্রতিটি ক্ষেত্রে আজ যিনি একজন আলোকবর্তিকা হয়ে উঠেছেন, তিনি হলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জনাব মোশারফ হোসাইন। তাঁর কর্মদক্ষতা, মানবিক দৃষ্টিভঙ্গি, উদ্ভাবনী নেতৃত্ব এবং উন্নয়নবান্ধব প্রশাসনিক চিন্তাভাবনা সরাইলবাসীর কাছে তাঁকে পরিণত করেছে এক আশার প্রতীক হিসেবে।
তিনি এমন একজন কর্মকর্তা, যিনি অফিসের চৌকাঠে সীমাবদ্ধ থাকেন না—গভীর রাতেও মানুষের দুঃখ-দুর্দশা শুনতে ছুটে যান গ্রামে, দুর্গত এলাকায়, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, এমনকি অসহায় মানুষের দরজায়। সরাইলের প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ মানুষ আজ বলে—”এই মানুষটা আলাদা!”
প্রশাসনিক দায়িত্বে তিনি পরিচয় দিয়েছেন অসাধারণ দক্ষতার। সময়ানুবর্তিতা, স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিমূলক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে তিনি সরকারি সেবাগুলোকে মানুষের কাছে বাস্তবভাবে পৌঁছে দিচ্ছেন। তাঁর অফিসে গেলে দেখা যায় শৃঙ্খলা, দ্রুততার সঙ্গে ফাইল নিষ্পত্তি এবং সেবা প্রত্যাশীদের সঙ্গে সম্মানজনক আচরণ।
তাঁর মানবিক গুণাবলীর কোনো তুলনা নেই। প্রাকৃতিক দুর্যোগে, অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার কিংবা অসুস্থ বৃদ্ধার চিকিৎসার জন্য—জনাব মোশারফ হোসাইন সবসময় স্বতঃস্ফূর্তভাবে পাশে দাঁড়িয়েছেন। অসহায় মানুষের মুখে খাবার তুলে দেওয়া, বস্ত্র, চিকিৎসা কিংবা আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা—সবক্ষেত্রেই তাঁর আন্তরিকতা চোখে পড়ে।
শিক্ষাক্ষেত্রে তিনি এনেছেন এক নতুন গতি। উপজেলা সদর ও প্রত্যন্ত অঞ্চলের স্কুলে হঠাৎ পরিদর্শন করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গল্প করেন, তাঁদের সমস্যা শোনেন, পাঠদানে আগ্রহী করে তোলেন। তিনি বিশ্বাস করেন, “আজকের শিক্ষার্থীই আগামী দিনের বাংলাদেশ।” তাঁর অনুপ্রেরণায় উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বইপড়ার প্রতিযোগিতা, বিজ্ঞান মেলা ও মুক্তচিন্তার আয়োজন বাড়ছে।
উপজেলার উন্নয়নকাজগুলো তিনি নিজেই তদারকি করেন। শুধু টেবিলে বসে চুক্তি নয়, তিনি নির্মাণস্থলে গিয়ে খোঁজ নেন কাজ কতটা টেকসই, জনগণের উপকারে আসছে কিনা। কোনো অনিয়ম দেখলে সাথে সাথে ব্যবস্থা নেন। তাই সরাইলে তাঁর প্রশাসন দুর্নীতিবিরোধী ও স্বচ্ছতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
তরুণদের মধ্যে দেশপ্রেম ও নেতৃত্ব তৈরিতে তিনি কাজ করছেন সচেতনভাবে। যুব সমাজকে বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কার্যক্রমে যুক্ত করে এক সম্ভাবনাময় সমাজ গড়ার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, সাহিত্যসভা, শিক্ষামূলক নাটক—এসব আয়োজন তাঁর উৎসাহেই চালু হয়েছে।
পরিবেশ রক্ষা ও জনসচেতনতা তৈরিতেও তিনি অন্যতম কাণ্ডারী। বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান, প্লাস্টিকমুক্ত বাজার প্রতিষ্ঠা, ডেঙ্গু ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক কার্যক্রমে সরাসরি অংশগ্রহণ করেন। এছাড়া নারী ও শিশু সুরক্ষা, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ, প্রতিবন্ধী সেবা ও মা-শিশু পুষ্টি কার্যক্রমেও তাঁর নেতৃত্ব প্রশংসনীয়।
আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার অংশ হিসেবে তিনি সরকারি সেবাগুলোতে প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়িয়েছেন। ভূমি কর, সনদপত্র, অভিযোগ নিষ্পত্তি ইত্যাদি বিষয়ে তিনি অনলাইন ভিত্তিক সেবা চালু করেছেন, যার ফলে জনগণ দুর্ভোগ ছাড়াই প্রয়োজনীয় সেবা পাচ্ছেন।
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, তিনি সরাইল উপজেলাকে শুধু দায়িত্বের জায়গা হিসেবে দেখেন না—তিনি একে ভালোবাসেন, অনুভব করেন, এবং এর প্রতিটি মানুষকে আপনজন মনে করেন। সে জন্যই আজ তিনি সরাইলবাসীর প্রিয়জন, যাঁর নাম শুনলে মানুষের মুখে হাসি ফুটে, ভরসার আভা জাগে।
জনাব মোশারফ হোসাইন এমন এক সরকারি কর্মকর্তা, যাঁর কাজ দেখলে বোঝা যায়—একজন কর্মকর্তারও হৃদয় থাকতে পারে, ভালোবাসা থাকতে পারে দেশের জন্য, মানুষের জন্য। তাঁর মতো একজন সৎ, নিষ্ঠাবান ও মানবিক নেতৃত্ব সরাইলকে যেমন আলোকিত করেছে, তেমনি গোটা দেশের প্রশাসনের জন্য তিনি হতে পারেন এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জনাব মোশারফ হোসাইন বলেন— “সরাইল শুধু একটি কর্মস্থল নয়, এটা আমার ভালোবাসার জায়গা। এখানে প্রতিটি মানুষের চোখে আমি সম্ভাবনার আলো দেখি। প্রশাসনের কাজ শুধু আইন প্রয়োগ নয়, মানুষের পাশে দাঁড়ানো, হাসিমুখে সেবা দেওয়া এবং দেশের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার এক মহৎ দায়িত্ব। আমি বিশ্বাস করি, রাষ্ট্রের প্রকৃত শক্তি লুকিয়ে আছে সাধারণ মানুষের ভেতর। তাই তাঁদের পাশে থাকাই আমার প্রধান অঙ্গীকার।
সরাইলের মাটি ও মানুষের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক তৈরি করে জনাব মোশারফ হোসাইন নিজেকে গড়ে তুলেছেন একজন আদর্শ প্রশাসক ও মানবিক রাষ্ট্রকর্মকর্তা হিসেবে। তাঁর স্বপ্ন, কর্ম ও নেতৃত্ব আমাদের মনে করিয়ে দেয়—একজন মানুষ চাইলে কতখানি বদলে দিতে পারে একটি জনপদ, কতখানি আশার আলো ছড়াতে পারে সমাজে। “এমন নেতৃত্ব শুধু সফলতা নয়, আশীর্বাদ—সমগ্র জাতির জন্য।”